বিবর্ণতা একটু একুট করে কাটিয়ে উঠলেন মেসি-নেইমার-এমবাপে। তাদের ত্রিফলা আক্রমণে ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স। তাতে শুরুর দিকে উজ্জীবিত ফুটবল খেলে পিএসজিকে চমকে দেওয়া তোয়া কোণঠাসা হতে শুরু করল। রোমাঞ্চ ছড়ানো লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত দারুণ জয় মাঠ ছাড়ল ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল।
লিগ ওয়ানে শনিবার নিজেদের মাঠে ৪-৩ গোলে জিতেছে পিএসজি। তাদের চার গোলদাতা কার্লোস সোলের, লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপে।
তারকাসমৃদ্ধ পিএসজিকে চমকে দিয়ে তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় তোয়া। বক্সের ভেতরে ডিফেন্ডাররা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে রনি লোপেজ টোকায় বাড়িয়ে দেন মামা বালদেকে; জোরাল সাইড ভলিতে তিনি পরাস্ত করেন জানলুইজি দোন্নারুম্মাকে।
১৯তম মিনিটে পোস্টে প্রথম শট নিতে পারে পিএসজি। কিন্তু এমবাপের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট আটকান গোলরক্ষক।
পাঁচ মিনিট পর নেইমার ও সোলেরের দারুণ বোঝাপড়ায় সমতার স্বস্তি ফেরে পিএসজি শিবিরে। বক্সের বাইরে থেকে নেইমারের থ্রু পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নেন সোলের। এরপর এক ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে তোয়ার রক্ষণে ঝড় তোলে পিএসজি; কিন্তু গোলরক্ষকে গোৎচিয়ে গেলোঁর দেয়ালে চিড় ধরাতে পারেনি। ৩৯তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেইমারের কোনাকুনি ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকান গোলরক্ষক। এরপর তিনি নর্দি মুকিয়েলের ফিরতি শটও ফেরান। একটু পর মেসির হেডও আটকে তোয়ার ত্রাতা গেলোঁ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বক্সের উপর থেকে লোপেজের বুলেট গতির শট আটকে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে দেননি দোন্নারুম্মা। এরপর এমবাপের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়ে যায়।
৫২তম মিনিটে বালদের দ্বিতীয় গোলে আবারও এগিয়ে যায় তোয়া। এ গোলে অবশ্য পিএসজি ডিফেন্ডারদের দায় আছে।
ডান দিক থেকে সতীর্থের আড়াআড়ি ক্রস বালদে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সময় তার আশপাশে ছিলেন তিন ডিফেন্ডার। কেউই চার্জ করেননি। ঠাণ্ডা মাথায় শরীরটা ঘুরিয়ে এই ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট ফেরানোর সুযোগই পাননি দোন্নারুম্মা। ডিগবাজি দিয়ে গোল উদযাপন করেন গিনির এই ফরোয়ার্ড।
তিন মিনিট পর বক্সের বেশ বাইরে থেকে আচমকা বাঁ পায়ের শট নেন মেসি। বল বাঁক খেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায়। আর ৬২তম মিনিটে মেসির বুদ্ধিদ্বীপ্ত থ্রু পাস ধরে কোনাকুনি শটে নেইমার লক্ষ্যভেদ করলে ম্যাচে প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় পিএসজি।
৬৬তম মিনিটে পায়ের কারিকুরিতে ডিফেন্ডারকে বোকা বানানোর পর দারুণ ব্যাকহিল ফ্লিকে নেইমার বল বাড়ান এমবাপেকে। গোলরক্ষকের গায়ে মেরে ভালো সুযোগ নষ্টের হতাশায় মুখ ঢাকেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৫তম মিনিটে গোলরক্ষক ও এরিক পালমার-ব্রাউনের বোকামি এবং কিছুটা সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় পেনাল্টি পায় পিএসজি। বল ক্লিয়ার না করে ছুটে আসা সোলেরকে আটকে রাখতেই ব্যস্ত ছিলেন এরিক। তাকে পাশ কাটিয়ে সোলের বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সময় গোলরক্ষকের চার্জে পড়ে যান। রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। বুলেট গতির স্পট কিকে গোলের খাতায় নাম তোলেন এমবাপে।
৮৮তম মিনিটে আন্তে পালাভেরসা বক্সে জটলার ভেতর থেকে হেডে স্কোরলাইন ৪-৩ করলে ফের জমে ওঠে ম্যাচ। কিন্তু বাকিটা সময় তোয়া পারেনি আর কোনো চমক দেখাতে।
আসরে এখন পর্যন্ত অপরাজিত পিএসজির লিগে এটি ১১তম জয়। ১৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট হলো ৩৫।
নিজেদের পরের ম্যাচে আগামী বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্টাসের মুখোমুখি হবে গালতিয়ের দল।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরআইএম