চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বিদায় ঘণ্টা বাজার পর লা লিগাতেও পথ হারাতে বসেছিল বার্সেলোনা। বায়ার্ন মিউনিখ ম্যাচের মতো এখানেও প্রতিপক্ষের গোলমুখে গিয়ে বারবার তালগোল পাকাল কাতালুনিয়ার ক্লাবটি। শেষ দিকে গিয়ে আরও একবার দলকে উদ্ধার করলেন রবার্ট লেভানডোভস্কি। ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল জাবি হার্নান্দেজের শীর্ষ্যরা
ভ্যালেন্সিয়ার মাঠ মেস্তায়া স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে লিগ ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে গোলটি করেন পোলিশ তারকা রবার্ট লেভানডোভস্কি।
চার দিন আগে ইউরোপ সেরার মঞ্চে বায়ার্নের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে কোনো শটই রাখতে না পারা বার্সেলোনা ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে ১২টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে মোটে একটি। পরে অতিরিক্ত সময়ে লক্ষ্যে রাখা দ্বিতীয় শটে গোলটি করেন লেভানডোভস্কি।
১২ ম্যাচে ১০ জয় ও এক ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৩১। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্টও সমান ৩১।
বায়ার্নের বিপক্ষে হতশ্রী ফুটবলের হতাশা চাপা দিতে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে শুরু থেকেই বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখা যায় বার্সেলোনাকে। মাঝমাঠ দখলে রেখে করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করার কাজটা ঠিকঠাক করলেও শেষে গিয়ে গুলিয়ে ফেলছিল তারা।
২৩তম মিনিটে শেষটা দারুণভাবে সেরে দুই হাত উঁচিয়ে উল্লাসে মাতেন আনসু ফাতি। কিন্তু লাইন্সম্যান অফসাইডের পতাকা তুললে থেমে যায় তার উদযাপন।
৪৩তম মিনিটে আরও একবার হতাশায় পুড়তে হয় বার্সেলোনাকে। জর্দি আলবার ক্রসে রবার্ট লেভানডোভস্কির হেডে, গোলপোস্টে বাধা পায়। ওখান থেকে প্রতি-আক্রমণে ভীতি ছড়ায় ভালেন্সিয়া। তবে কোনো বিপদ হতে দেয়নি বার্সেলোনার রক্ষণ।
দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে সামুয়েল লিনো জালে বল পাঠান, তবে গোল মেলেনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, তার আগে বল আরেক ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্কোসের হাত ছুঁয়ে আসে। ভিএআরের সাহায্যে হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজান রেফারি।
এর কিছুক্ষণ পর একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনে বার্সেলোনা। উসমান দেম্বেলে, সার্জিও বুস্কেটস ও ফাতিকে তুলে ফেররান তরেস, গাভি ও রাফিনিয়াকে নামান কোচ।
৮২তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পান লেভানডোভস্কি। কিন্তু প্রথম প্রচেষ্টায় শট নিতে ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিতীয়বারে নেন দুর্বল লক্ষ্যভ্রষ্ট শট।
দুই মিনিট পর তাদের হতাশা বাড়ে আরও। ডান দিকের বাইলাইন থেকে পেদ্রির গোলমুখে বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়েও শট নিতে ব্যর্থ হন তরেস। তারপরও সুযোগ ছিল; কিন্তু উড়িয়ে মেরে সেটাও নষ্ট করেন রাফিনিয়া।
অবশেষে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোলের দেখা মেলে। রাফিনিয়ার বাড়ানো দারুণ ক্রসে ছয় গজ বক্সে পা বাড়িয়ে নিখুঁত টোকায় বলকে ঠিকানায় পাঠান লেভানডোভস্কি। উচ্ছ্বাসে ভাসে বার্সেলোনা।
লা লিগায় টানা তৃতীয় ম্যাচে গোল পেলেন লেভানডোভস্কি। ১২ ম্যাচে তার গোল হলো ১৩টি, আসরে সর্বোচ্চ।
গোলের কিছুক্ষণ পরই দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঝে হট্টগোল বেঁধে যায়। তিন জনকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। বার্সেলোনার মনোযোগে অবশ্য তা বিঘ্ন ঘটাতে পারেনি। বাকিটা সময় নির্বিঘ্নে কাটিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরআইএম