মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) চলতি মৌসুম শেষে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার মিয়ামির আর্জেন্টাইন তারকা স্ট্রাইকার গঞ্জালা হিগুয়েইন। জুভেন্টাস, রিয়াল মাদ্রিদ, নাপোলি ও আর্জেন্টিনার ৩৪ বছর বয়সী সাবেক এ স্ট্রাইকার এর মাধ্যমে ১৭ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন।
মৌসুমের বাকি সময়টা মিয়ামির হয়েই খেলবেন হিগুয়েইন। মিয়ামি বর্তমানে মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সে প্লে-অফ পজিশনে রয়েছে। মৌসুম শেষ হতে বাকি রয়েছে আর মাত্র দুটি ম্যাচ।
সম্প্রতি এমএলএস’এ দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন হিগুয়েইন। সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে ১২টি গোল করেছেন। এর মধ্যে গত সপ্তাহে টরন্টোর বিপক্ষে করেছেন জয়সূচক গোল। এ মৌসুমের পরে ইন্টার মিয়ামির সাথে তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে তার।
তারকা এ স্ট্রাইকার মনে করেন, ভাই ফেডেরিকোর মতোই তার এখন অবসরের সময় চলে এসেছে। ইন্টার মিয়ামির পুরো দলের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাই ফুটবলকে বিদায় জানাতে গিয়ে অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন হিগুয়েইন।
তিনি বলেন, ‘ফুটবলকে বিদায় জানানোর দিনটি এসেই গেল। পেশাদার ফুটবলার হিসেবে এখান থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। এখানকার সব ভালো-মন্দ স্মৃতিগুলো নিয়ে জীবনের বাকি সময়টা বেঁচে থাকবো। এ মুহূর্তে আমি আমার প্রতিটি টেকনিক্যাল স্টাফ যারা আমাকে কোচিং করিয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
গঞ্জালা হিগুয়েইন বলেন, ‘ক্লাব পালেরমো, রিভার প্লেট, রিয়াল মাদ্রিদ, আর্জেন্টিনা, নাপোলি, মিলান, চেলসি ও শেষ পর্যন্ত ইন্টার মিয়ামির সকলেই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। হৃদয়ে থাকা সকল সুন্দর স্মৃতিগুলো নিয়ে আমি ফুটবল থেকে যেতে চাই। অবিশ্বাস্য এক ক্যারিয়ার আমি কাটিয়েছি। কল্পনার থেকেও বেশি কিছু আমার অর্জন হয়েছে। তিন থেকে চার মাস আগেই আমি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
এমএলএস শিরোপা জয় করেই ক্যারিয়ার শেষের আশা করেছিলেন হিগুয়েইন। যদিও মিয়ামি বর্তমানে প্লে-অফ পজিশনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সে কারণেই তিনি বলেন, ‘এমএলএস শিরোপা নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারলে সেটা হতো স্বপ্ন সত্যি হবার মতোই ঘটনা।’
আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে হিগুয়েইন ৭৫ ম্যাচে ৩১ গোল করেছেন। ২০১৪ বিশ্বকাপ ও ২০১৫ কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলা আর্জেন্টাইন দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে শেষ ১৬’ থেকে বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এর মাধ্যমেই হিগুয়েইনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি হয়।
জাতীয় দলের পাশাপাশি হিগুয়েইনের ক্লাব ক্যারিয়ারও ছিল সমান বর্নিল। লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে সফল সময় কাটিয়েছেন। নাপোলিতে যাওয়ার আগে গ্যালাকটিকোদের হয়ে ১৯০ ম্যাচে করেছেন ১০৭ গোল। সিরি-এ জায়ান্টাদের হয়ে ১৯৪ ম্যাচে করেছেন ৭১ গোল। এরপর তিনি জুভেন্টাসে যোগ দিয়ে প্রথম দুই মৌসুমেই দুটি ঘরোয়া শিরোপা জয় করেন।
মিয়ামি কোচ ফিল নেভিল বলেন, ‘একটি দলে যখন এ ধরনের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকবে তখন দলকে এগিয়ে নেওয়া অনেক সময়ই সহজ হয়ে যায়। কয়েক সপ্তাহ আগেও তাকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু মাঠের পারফরমেন্স দিয়ে সে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যেই হিগুয়েইন নিজেকে একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড় হিসেবে প্রমাণ করেছে। মৌসুম এখনো শেষ হয়নি। সে খেলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিদিনই তরুণদের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। মাঠে তার প্রভাব কখনই খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই।’
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস