রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে জার্মানিকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ইউরোপ সেরার শিরোপা জিতেছে ইংল্যান্ডের নারীরা। ইংল্যান্ডের হয়ে গোল করেছেন এলা টুনি ও ক্লোয়ে কেলি, জার্মানির হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন লিনা ম্যাগগাল।ইংল্যান্ডের নারী ফুটবল ইতিহাসে এটাই প্রথম কোনো শিরোপা।
১৯৬৬ সালে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ডের পুরুষ জাতীয় ফুটবল দল। এরপর কেটে গেছে ৫৬ বছর! কিন্তু পুরুষ বা নারী কোনো দলই শিরোপা খরা কাটাতে পারেনি।
২০২১ সালে খুব কাছে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ইংল্যান্ডের পুরুষ দলকে। ইউরোর ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় হ্যারি কেনের দল। অবশেষে ৫৬ বছরের শিরোপা ঘুচলো ইংলিশ নারীদের হাত ধরেই।
২০২২ সালের নারী ইউরোতে প্রথম থেকে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন ইংলিশ নারীরা। প্রতি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের উপর আধিপাত্য বিস্তার করে জয়ে তুলে নিচ্ছিলেন।
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবেন মেসিরা, দোহা হোটেলে নেইমাররা
ফাইনালে প্রতিপক্ষ ছিল জার্মানি, যারা কিনা নারীদের ইউরোতে আটবারের রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন। এছাড়া ফাইনালে উঠে কখনো হারের মুখ দেখেনি তারা। এসব মাথায় রেখেই মাঠে নামতে হয়েছিল ইংলিশ নারীদের।
রবিবার (৩১ জুলাই) পাহাড়সম চাপ নিয়েই ওয়েম্বলিতে জার্মানির মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। যে মাঠেই সর্বশেষে ৫৬ বছর আগে কোনো শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড।
প্রথমার্ধ জুড়ে দুই দলই আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে ম্যাচ জমিয়ে তুললেও কেউই লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। ফলে গোলবিহীন শেষ হয়ে প্রথমার্ধ।
বিরতি থেকে ফিরেও আক্রমণের ধার বজায় রাখে দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৬তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ইংলিশ নারী ফুটবলার এনা টুনি। মাঠে আসার মাত্র ছয় মিনিট পরই ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন তিনি।
ফাইনালে স্টেডিয়ামে উপস্থিত রেকর্ড ৮৭ হাজার ১৯২ জন দর্শক ফেটে পড়ে উল্লাসে। যদিও ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে দারুণ এক গোল করে জার্মানিকে ম্যাচে ফেরান লিনা ম্যাগগাল। গোল করে যেন এটাও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, জার্মানি কখনোই ফাইনাল হারেনি।
তবে এই ইংল্যান্ড সেই ইতিহাস মুছে নতুন ইতিহাস তৈরি করতে যেন উঠেপড়ে লেগেছিল। তবে লক্ষ্যভেদ করতে পারছিল না। জার্মানিও ছিল জয় সূচক গোলের খোঁজে! কিন্তু নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কেউই কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি।
ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও প্রথমার্ধে কেউই গোল পায়নি। ম্যাচ যত গড়াচ্ছিল টাইব্রেকারের সম্ভাবনা ততই বেড়ে চলছিল। খালি চোখে এই ম্যাচের সমাপ্তি টাইব্রেকারে হবে বলেই মনে হচ্ছিল।
কিন্তু সবাই ভাবলেও, টাইব্রেকারে ম্যাচ শেষ করতে চাননি ইংলিশ নারী ফুটবলার ক্লোয়ে কেলি। ম্যাচের ক্রান্তিলগ্নে ১১০তম মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে পুরো ইংল্যান্ডকে আনন্দে ভাসান তিনি।
কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে প্রথমবারে পা লাগাতে পারেননি কেলি। তবে জার্মান গোলরক্ষকও না পারলে দ্বিতীয় সুযোগ আসে তার সামনে। সেটা আর হাতছাড়া করেননি তিনি। আলতো টোকায় জার্মানির জালে বল পাঠিয়েই জার্সি খুলে উল্লাসে মেতে ওঠেন কেলে।
ম্যাচের বাকি সময়টুকু দারুণভাবে রক্ষণ সামলে জার্মানিকে প্রথমবারের মতো ফাইনাল হারের স্বাদ দেয় ইংলিশ নারীরা। রেফারি শেষ বাশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই ৫৬ বছরের শিরোপা খর ঘোচানোর উৎসবে মেতে ওঠে পুরো ইংল্যান্ড।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি