দলে ভালো খেলোয়াড় না থাকা এক সমস্যা, আর একাধিক ভালো খেলোয়াড় থাকা আরেক সমস্যা। প্রথমটা কপালে চিন্তার ভাজ ফেললেও দ্বিতীয়টা হচ্ছে মধুর বিড়ম্বনা।
দ্বিতীয় সমস্যায় পড়েছেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কলানি। কোচ হয়ে আসার পর তার অধীনে আর্জেন্টিনার পারফর্মেন্স আমূল পাল্টে গেছে। একসময় একটা জয়ের জন্য হাপিত্যেশ করা দলটি টানা তিন বছরের বেশি সময় ধরে অপরাজিত। এমনকি স্কলানির হাত ধরেই ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়েছে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
এক বছরে কোপা আমেরিকা ও ফাইনালিসিমা জিতিয়ে আর্জেন্টাইনদের এখন কাতার বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন এই কোচ। যে কোনো সময়ের চেয়ে দলটা এখন সবচেয়ে বেশি একতাবদ্ধ। জয়ের জন্য মাঠে জীবন দিতেও প্রস্তত তারা।
তবে এত ভালো কিছু হলেও যে কোচদের সমস্যায় পড়তে হয় সেটাই এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন স্কলানি। কাতার বিশ্বকাপের জন্য এবার ২৩ থেকে তিনজন বাড়িয়ে ২৬ জন খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে ফিফা। তবুও স্কোয়াড চূড়ান্ত করতে পারছেন না আর্জেন্টাইন কোচ।
মেসি আছে বলেই আমরা বিশ্বকাপের দাবিদার: মার্টিনেজ
কাতার বিশ্বকাপের জন্য ২৬ জনের স্কোয়াডে ২৩ মোটামুটি চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। তবে ঝামেলা বেধেছে বাকি তিন জনে! কিছুতেই ওই তিনজনকে চূড়ান্ত করতে পারছেন না তিনি। কাজটা মোটেও সহজ হবে না কারণ, তিনজনের বিপরীতে দলে জায়গা পেতে লড়াই করছেন সাতজন ফুটবলার।
সেন্টারব্যাক
সেন্টারব্যাক পজিশনে একজন খেলোয়াড় চুড়ান্ত করা বাকি আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কলানির। তবে এক্ষেত্রে মার্কোস সেনেসি, হুয়ান ফয়েথ ও লুকাস মার্টিনেজ কুয়াতার মধ্যে থেকে একজন বেছে নিতে হবে তাকে।
এর মধ্যে মার্কোস সেনেসিকে নিয়ে তো চলতি বছরের জুন মাসে কাড়াকাড়িই বেধে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ইতালির মধ্যে! তবে শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনাকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। অথচ সেই মার্কোসেরই এখন বিশ্বকাপের জায়গা পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এই তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে হয়তো কুয়ার্তা। বেশ কিছুদিন ধরেই দলের বাইরে। অন্যদিকে ফয়েথই এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় দলে ছিলেন। ফয়েথের সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সও তাকে এগিয়ে রাখছে যথেষ্ট। আর্জেন্টাইন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী শেষ পর্যন্ত ফয়েথের কাতারের বিমানে ওঠার সম্ভাবনা বেশি।
ফরোয়ার্ড
আর্জেন্টাইন দলে থাকেন কিন্তু একাদশে সুযোগ পাননা, এরকম তালিকা করলে পাওলো দিবালার নামই সবার আগে মাথায় আসবে! তবে শেষ কিছুদিন তাকে আগের থেকে একটু বেশিই সুযোগ দিচ্ছেন কোচ লিওনেল স্কলানি।
সেক্ষত্রে দিবালার প্রতি স্কলানির নজর একটু বেশিই থাকতে পারে। তবে একাধিক পজিশনে খেলার দক্ষতা ও উপর থেকে নীচে নেমে খেলার মানসিকতায় দলে ঢুকে যেতে পারেন অ্যাঞ্জেল কোরিয়াও।
আবার এদের দুইজনই বিশ্বকাপে যেতে পারেন যদি স্কলানি একজন ডিফেন্ডার কম নেন। ২০১৮ বিশ্বকাপে রক্ষণের ব্যর্থতায় আর্জেন্টিনা প্রতি ম্যাচেই ভুগতে হয়েছে। তখন সহকারী কোচ হিসেবে ডাগআউট থেকে সরাসরিই দেখেছেন বর্তমান আর্জেন্টিনা কোচ। তাই হয়তো ডিফেন্ডার কমানোর ঝুঁকি তিনি নাও নিতে পারেন।
গোলরক্ষক
দুই বছর আগ পর্যন্তও গোলরক্ষক পজিশন নিয়ে ভোগান্তিতে ছিল আর্জেন্টিনা। গোলরক্ষকের ব্যর্থতায় ২০১৮ বিশ্বকাপেও একাধিক গোল হজম করতে হয়েছে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
গোলপোস্টে নীচে ২০২১ কোপা আমেরিকা থেকে নির্ভরতা দিয়ে যাচ্ছে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনার এক নম্বর গোলরক্ষক মার্টিনেজেরই বিশ্বকাপের প্রত্যেক ম্যাচে একাদশে থাকা নিশ্চিত।
তবে একটা দলে তো গোলরক্ষক থাকেন তিনজন। দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে ফ্রাংকো আরমানির দলে থাকা নিশ্চিত হলেও তৃতীয় গোলরক্ষক হিসেবে কাউকে এখনো চুড়ান্ত করতে পারেননি আর্জেন্টাইন কোচ।
এই জায়গাটা নিয়ে লড়াই করছেন জেরোনিমো রুইয়ি আর হুয়ান মুসো। স্কলানির অধীনে সাম্প্রতি সময়ে মুসোকেই বেশি সুযোগ দিয়েছেন স্কলানি। তবে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়ালে রুইয়ির পারফর্মেন্স নজর কেড়েছে আর্জেন্টাইন কোচের। সেক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে মুসোকে টপকে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ দলে ঢুকে যেতে পারেন রুইয়ি।
কাতার বিশ্বকাপে দলে জায়গা নিয়ে ডি মারিয়ার মনে সংশয়!
চলতি বছরের ২২ নভেম্বর শুরু হবে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ মিশন। প্রথম ম্যাচে মেসিদের প্রতিপক্ষ সৌদি আরব। কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘সি’তে আর্জেন্টিনার বাকি দুই প্রতিপক্ষ মেক্সিকো ও পোল্যান্ড।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি