টানা দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের বাধা পেরিয়ে মূল পর্বে খেলার সুযোগ পেয়েছে ভারত। দলটি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে কি-না তা নিয়ে জেগেছে শঙ্কা। কারণ, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনে (এআইএফএফ) পড়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ। যা কি-না বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম বহির্ভূত।
২০০৮ সালে শয্যাশায়ী হয়ে এআইএফএফের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সী। তার পর থেকেই এই পদ সামলাচ্ছিলেন প্রফুল্ল প্যাটেল। তবে ২০২০ সালে ডিসেম্বরে তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি নির্বাচন দিয়ে পদ ছাড়েননি। তাই বাধ্য হয়েই এআইএফএফ পরিচালনার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধেই তুলে নিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।
এআইএফএফের নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি তিন মেয়াদের বেশি সভাপতি পদে থাকতে পারবেন না। সেই নিয়মে ২০২০ সালের ডিসেম্বরেই শেষ হয়েছে প্রফুল্ল প্যাটেলের মেয়াদ। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন না দেওয়া ও ক্ষমতা না ছাড়াই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।
প্রফুল্ল প্যাটেল ক্ষমতা না ছাড়ার কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন, এআইএফএফের সংবিধান পরিবর্তন করে তবেই দায়িত্ব ছাড়বেন। সংবিধানে সভাপতি হিসেবে নিজের থাকার রাস্তা তৈরি করতে চেয়েছিলেন তিনি।
তবে বিষয়টি মোটেও ভালো ভাবে নেয়নি ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রফুল্ল প্যাটেলকে সরিয়ে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে দিয়েছে। যারা কি-না নতুন নির্বাচিত কমিটির হাতে দায়িত্ব তুলে দিবে। তবে এর আগেই ফিফা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
ভারতীয় ফুটবলের সমস্যা বুঝতে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) প্রতিনিধি দলের ভারত সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেই এআইএফএফের সাবেক ও বর্তমান কমিটির সাথে আলোচনা করবেন তারা। এরপরেই নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে ফিফা।
তবে সদস্য দেশগুলো ফুটবল ফেডারেশনে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ মোটেও ভালো চোখে দেখে না ফিফা। এই কারণে সংস্থাটি সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়া ও কুয়েতকে ফুটবলে নিষিদ্ধ করে।
ভারতীয় ফুটবল আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ না হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সদস্য এসওয়াই কুরাইশি। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না ফিফার এসব দিক (ফেডারেশনে নির্বাচন নিয়ে জটিলতা) নিয়ে কোনো আপত্তি থাকবে। ফুটবল নির্বাচনের সময় বহু আগেই পেরিয়ে গেছে। এর আগের মেয়াদের প্রশাসকেরা তাদের মেয়াদের বাইরেও দায়িত্বে থেকে গেছেন, সে সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা দরকার ছিল।”
আরও বলেন, “এখানে ফিফার নিয়ম না মানার মতো কিছু হয়েছে বলে মনে হয় না। আশা করি ফিফা সব দিক বুঝবে, সাহায্য করবে। আমরাও তাদের সাহায্য করব, কারণ আমরা চাই সরকার আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেটি শেষ করতে।”
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর