এএফসি এশিয়ান কাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে শুরুটা সুখকর হলো না বাংলাদেশের। র্যাংকিংয়ে ৯৯ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনের কাছে ২-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছে জামাল ভূঁইয়ারা। ম্যাচের পুরো সময়টাতেই বাংলাদেশের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছে বাহরাইনের ফুটবলাররা।
সবদিক দিয়েই বাংলাদেশের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে ছিল বাহরাইন। আগে থেকেই অনুমেয় ছিল, তাদের বিপক্ষে মাঠের লড়াইটা বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে না। তবে নিজেদের ভালো খেলার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলন ভূঁইয়ারা। তবে মাঠে সেটা দেখাতে পারলো না তারা। ম্যাচে প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্যই বিস্তার করতে পারেনি বাংলাদেশ।
ম্যাচ জুড়ে বাংলাদেশের মিস পাস ছিল চোখে পড়ার মতো। একাধিক বার বল হারিয়েছে প্রতিপক্ষের কাছে। শারীরিক শক্তিতেও পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। শূন্যে ভাসা বলে কখনোই দখল নিতে পারেনি জাভিয়ের ফার্নান্দেজ ক্যাবরেরার দল। বরং প্রতিপক্ষের ডি বক্সে গিয়ে বারবার বল হারিয়েছে তারা। ফলে গোল করার নূন্যতম সুযোগও তৈরি করতে পারেনি তারা।
বুধবার (৮ জুন) মালেশিয়ার বুকিত জলিল স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাহরাইনের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। আগেই জানা ছিল, এ ম্যাচে কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে হলে বাড়তি লড়াই করতে হবে বাংলাদেশকে। কিন্তু বাড়তি লড়াই তো দূরের কথা নিজেদের সেরা ফুটবলটাই খেলতে পারনি জামাল ভূঁইয়ার দল।
ম্যাচের দশম মিনিটেই গোল হজম করতে পারতো তবে গোলরক্ষক জিকোর দারুণ সেভে সে যাত্রায় রক্ষা পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। পুরো ম্যাচে জিকোর বিশ্বস্ত হাত বাংলাদশকে বাঁচিয়েছে আরও বেশ কয়েকবার।
এরপর বাংলাদেশের অর্ধেই বল ছিল বেশি। একের পর এক আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিল বাহরাইনের ফুটবলাররা। ৩৩ মিনিট পর্যন্ত বাহরাইনকে আটকে রাখতে পারলেও এরপর আর পারেনি বাংলাদেশের রক্ষণভাগ।
ম্যাচের ৩৪তম মিনিটে প্রথম গোল ঢোকে বাংলাদেশের জালে। কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে দারুণ এক হেডে বাহরাইনকে এগিয়ে দেন আলি হারাম। এর আট মিনিট পরই আবার গোল হজম করে বাংলাদেশ।
বাম পাশ থেকে উড়ে আসা ক্রসে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে গেলে বল গিয়ে পড়ে ডি বক্সের সামনে। ৪২তম মিনিটে দৌড়ে এসে খামিল আল আসাদের বুলেট গতিতে মারা শটে গোল ব্যবধান দ্বিগুন হয় বাহরাইনের।
বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও একবার গোল ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল বাহরাইন। কিন্তু গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর অসামান্য দক্ষতায় আরও একবার রক্ষা পায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধেও বাংলাদেশের উপর আধিপাত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে বাহরাইন। তবে বাহরাইনের আক্রমণের সামনে প্রতিবারই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন গোলরক্ষক জিকো। দুই অর্ধেই জিকো অসাধারণ কিছু সেভ বাংলাদেশের হারের ব্যবধান বাড়তে দেয়নি।
ম্যাচের শেষ অর্ধে কয়েকবার আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছে বাংলাদেশ। ৬৮ মিনিটে দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু অধিনায়ক জামালের ভুল পাসে ভেস্তে যায় গোলের পরিকল্পনা। এরপরও একাধিক আক্রমণের চেষ্টা করলেও ভুল পাস, বল ধরে না রাখতে পারার জন্য ব্যর্থ হতে হয়েছে জামাল ভুঁইয়ার দলকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে যোগ দেন স্প্যানিশ জাভিয়ের হার্নান্দেজ ক্যাবরেরা। বাংলাদেশের কোচ হিসেবে শুরুটা সুখকর হলো না তার। ক্যাবরেরার অধীনে চার ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এ সময়ে বাংলাদেশ দুইটি ম্যাচ হেরেছে ও দুইটি ড্র করেছে। এই চার ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে একবারও বল পাঠাতে পারেনি ক্যাবরেরার দল।
এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ১১ জুন। দ্বিতীয় ম্যাচে তুর্কেমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে ‘ই’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে মালেয়শিয়া ও বাহরাইন।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি