দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সভাপতির পদ হারিয়েছিলেন সেপ ব্ল্যাটার। একই অপরাধে উয়েফার সভাপতি পদ হারিয়েছিলেন মিশেল প্লাতিনি। দুর্নীতির দায়ে নিষেধাজ্ঞায় থাকা এই দুই ফুটবল প্রশাসক এবার সুইজারল্যান্ডে বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।
১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ফিফার পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছিলেন মিশেল প্লাতিনি। সেই সময় ওই কাজ থেকে ৩০ হাজার সুইস ফ্র্যাঁ পেয়েছিলেন তিনি। এরপর ঘনিষ্ঠ হতে থাকে এই দুইজনের মধ্যকার সম্পর্ক। সেই সুবাদে উয়েফার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পান মিশেল প্লাতিনি।
২০১৫ সালে এক রিপোর্টে প্রকাশ্যে আসে এই ক্ষমতাশালী ফুটবল প্রশাসকের বিভিন্ন অপকর্মের কথা। এমনকি ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ কাতারে আয়োজনের ব্যাপারেও তাদের পকেটে ঢোকে বড় অঙ্কের অর্থ। শেষ পর্যন্ত নিজ পদ থেকে সরে বাধ্য হন এই দুই ফুটবল কর্মকর্তা।
শুধু তাই নয়, ২০১৫ সালে ফিফার নৈতিকতা কমিটি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে ফুটবলীয় সব কর্মকাণ্ড থেকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে। যদিও পরে নিষেধাজ্ঞার এই মেয়াদ কমে আসে। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হলেও ফুটবলীয় সব কার্যক্রম থেকে সরে গিয়েছেন এই দুইজনই।
পদ ছাড়ার সাত বছর পর আবারো তাদের আদালতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সুইজারল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে ২৫ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছিলো। ২৫ অভিযোগের ১২ টি এখনো চলমান রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ২০১১ সালে ফিফার কাছ থেকে দুই মিলিয়ন সুইস ফ্র্যাঁ ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্লাতিনির বিরুদ্ধে। সেপ ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে এতে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদেরকে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দুইজনকেই পাঁচ বছরের জন্য জেলে যেতে হবে।
এর আগে সেপ ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে সুইস কর্তৃপক্ষের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, “ব্ল্যাটার একজন ধূর্ত, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি বিভিন্ন সময় সরিয়ে নিয়েছিলেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।”
২০১১ সালের ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেপ ব্ল্যাটার। এই বিষয়ে ব্ল্যাটার জানিয়েছেন, ঘোষণা দিয়ে সঠিক উপায়েই এই অর্থ মিশেল প্লাতিনিকে দেওয়া হয়েছে। প্রায় এক ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন মিশেল প্লাতিনিও।
এক সময় প্লাতিনি ও ব্ল্যাটারের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলেও এখন দুইজনই পরস্পর পরস্পরকে দোষারোপ করছেন নিজেদের পরিস্থিতির জন্য। দায়ী করছেন অন্যদেরকে।
একজন আরেকজনকে দোষারোপ করলেও শেষ পর্যন্ত দুইজনকেই বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আর দোষী সাবস্ত্য হলে দুইজনকেই ঢুকতে হবে জেলে।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর