লিভারপুল-মাদ্রিদ ম্যাচ: নতুন করে লেখা হলো যেসব রেকর্ড

পার্থ প্রতীম রায় পার্থ প্রতীম রায় প্রকাশিত: ০১:২৮ পিএম, ২৯ মে ২০২২
লিভারপুল-মাদ্রিদ ম্যাচ: নতুন করে লেখা হলো যেসব রেকর্ড

ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলকে হারিয়ে রেকর্ড ১৪তম বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। ফাইনালের বড় মঞ্চে অসংখ্য রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন দুই দলের ফুটবলাররা। সেই সব রেকর্ড স্পোর্টসমেইল২৪.কমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ইউরোপিয়ান ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি রেকর্ড ১৪তম বারের মতো নিজেদের ঘরে তুলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ১৭ বার ফাইনাল খেলে ১৪ বারই শিরোপা জেতার নজির গড়েছে তারা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এসি মিলানের শিরোপা রিয়ালের ট্রফি সংখ্যার অর্ধেকের সমান। তৃতীয় স্থানে থাকা লিভারপুল এবং বায়ার্নের ঘরে উঠেছে ৬ টি করে ট্রফি।

১৯৮২ সালের আগে বর্তমান চ্যাম্পিয়নস লিগের নাম ছিল ইউরোপিয়ান কাপ। সেই সময় ৯ বার ফাইনালে উঠে ৬ বার শিরোপা জিতেছিলো রিয়াল মাদ্রিদ। নাম বদলে যাওয়ার সাথে সাথে বদলে গেছে রিয়াল মাদ্রিদের ভাগ্য। ৮ বার ফাইনালে উঠে প্রত্যেকবারই শিরোপা নিজেদের ঘরে নিয়েছে।

চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনা ছিল সম্ভবত ম্যাচ শুরু করতে বিলম্ব হওয়া। ২০২২ প্যারিস ফাইনালের আগে কখনোই সমর্থকদের মাঠে প্রবেশ করতে না পারায় ম্যাচ নির্ধারিত সময়ের পরে শুরু হয়নি। প্রথমবারের এই ঘটনার পর ৩৬ মিনিট দেরিতে শুরু হয়েছিল লিভারপুল-রিয়াল মাদ্রিদ মহারণ।

১৯৮১ সালে প্রথম কোচ হিসেবে তিনটি ইউরোপিয়ান কাপ জয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন লিভারপুলের সাবেক কোচ বব পেইসলি। ২০১৪ সালে তার রেকর্ডে ভাগ বসান কার্লো আনচেলত্তি। এর চার বছর পরই পেইসলি এবং আনচেলত্তির পাশে বসেন জিনেদিন জিদান। ২০২২ সালে পেইসলি এবং জিদানকে ছাড়িয়ে একমাত্র কোচ হিসেবে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের কীর্তি গড়লেন কার্লো আনচেলত্তি।

রিয়াল কোচ দুই ক্লাবের হয়ে চারটি শিরোপা জিতলেও জিদান এবং পেইসলি নির্দিষ্ট একটি করে ক্লাবের হয়ে জিতেছেন তিনটি করে ট্রফি। ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান এবং স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদকে দুইটি করে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছেন তিনি।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৬ বার শিরোপা জিতেছেন রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি পাকো হেন্তো। সেই সময় টুর্নামেন্টের নাম ছিল ইউরোপিয়ান কাপ। টুর্নামেন্টের নাম বদলে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৫টি শিরোপা জয়ের রেকর্ড ছিল পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর।

৪টি করে শিরোপা জিতে তার পিছনেই ছিলেন করিম বেনজেমা, লুকা মদ্রিচ, টনি ক্রুস, ক্যাসেমিরো, মার্সেলো, নাচো, ইসকো এবং গ্যারেথ বেল। এই আট ফুটবলারই ছিলেন প্যারিস ফাইনালের রিয়াল স্কোয়াডে। লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে সবাই রোনালদোর রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। স্কোয়াডে থাকলেও খেলার সুযোগ পাননি মার্সেলো, নাচো, ইসকো এবং গ্যারেথ বেল। চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ী প্রথম ১০ ফুটবলারই রিয়াল মাদ্রিদের। এদের মধ্যে ৯ জনই আবার একসাথে রিয়ালে খেলেছেন।

শনিবার (২৯ মে) চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের গোলবার লক্ষ্য করে ৯টি শট নিয়েছিল লিভারপুল। প্রত্যেকটি শটই ঠেকিয়ে রিয়ালকে রক্ষা করেছেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। ৯ শট ঠেকিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে সবচেয়ে বেশি গোল আটকানোর রেকর্ড এখন তার দখলে। ২০১৯ এবং ২০১১ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ৮ টি করে শট ঠেকিয়েছিলেন অ্যালিসন বেকার এবং এডউইন ভ্যান ডার সার। 

২০২১-২২ চ্যাম্পিয়নস লিগ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ৫৯ গোল আটকিয়ে রেকর্ড গড়েছেন থিবো কোর্তোয়া। এক মৌসুমে তার চেয়ে বেশি গোল আটকাননি অন্য কোনো গোলরক্ষক। এছাড়া এক মৌসুমের নক আউট পর্বের তিন ম্যাচে ৮ বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক গোল আটকানোর রেকর্ড গড়েছেন কোর্তোয়া।

লিভারপুলের বিপক্ষে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের একমাত্র গোলে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে রিয়ালের হয়ে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ (২১ বছর ৩২০ দিন) ফুটবলার হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগের সব ফাইনাল বিবেচনায় নিলে তার অবস্থান পঞ্চম।

২০১৭ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ২১ বছর ১৩৩ দিন বয়সে গোল করেন ইসকো। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ১৮ বছর ৩২৩ দিন বয়সে গোল করে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ড প্যাট্রিক ক্লুইভার্টের দখলে।

লিভারপুলের হয়ে তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন অ্যালেকজান্ডার অ্যারনল্ড। সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার হিসেবে তিন ফাইনাল খেলার রেকর্ড গড়েন তিনি। মাত্র ২৩ বছর ২৩৩ দিন বয়সে তৃতীয়বারের মতো ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন এই ফুটবলার।

২০১৩ থেকে ২০২২, এক দশকে চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতেছে পাঁচটি ক্লাব। প্রত্যেকবারই শিরোপা জয়ী দলে ছিলেন কোনো না কোন ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার। এ পাঁচ দলের হয়ে শিরোপা জিতেছেন ছয় ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার। তারা হলেন- মারিও মানজুকিচ, লুকা মদ্রিচ, ইভান রাকিটিচ,  মাতেও কোভাচিচ, ডেজান লভরেন এবং ইভান পেরিসিস।

স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না: আনচেলত্তি

আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না: আনচেলত্তি

রিয়ালের ১৪তম শিরোপা, নায়ক কর্তোয়া

রিয়ালের ১৪তম শিরোপা, নায়ক কর্তোয়া

লিভারপুলকে হতাশ করে রিয়ালের রেকর্ড ১৪তম শিরোপা 

লিভারপুলকে হতাশ করে রিয়ালের রেকর্ড ১৪তম শিরোপা 

একুশ শতকের চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘রোমাঞ্চকর’ পাঁচ ফাইনাল

একুশ শতকের চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘রোমাঞ্চকর’ পাঁচ ফাইনাল