এভারটনের জালে রীতিমতো গোল বন্যা বইয়ে দিয়েছেন আর্সেনালের ফুটবলাররা। কিন্তু হায়! এত বড় ব্যবধানে জিতেও আসল উদ্দেশ্যই পূর্ণ হলো না গানারদের। নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করতে পারলেও প্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহাম জিতে যাওয়ায় চ্যাম্পিয়নস লিগ স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল ইংলিশ ক্লাবটির।
চ্যাম্পিয়নস লিগের পরবর্তী আসরে অংশ নেওয়া নিশ্চিত করতে শুধু নিজেদের জয়ই যথেষ্ট ছিল না আর্সেনালের জন্য। একই সাথে চ্যাম্পিয়নস লিগ দৌড়ে আর্সেনালের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহামকে হারতে হতো নরউইচ সিটির বিপক্ষে। কিন্তু টটেনহাম তো হারেইনি বরং আর্সেনালের মতো বড় ব্যবধানেই জয় পেয়েছে তারা। ফলে এভারটনের বিপক্ষে আর্সেনালের ৫-১ গোলের জয়ে কোন লাভই হলো না তাদের!
ম্যাচ শুরুর চার মিনিটের মাথায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলো আর্সেনাল। কিন্তু গানার ফুটবলার ওডেগার্ডের শট এভারটন ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে গোল বঞ্চিত হতে হয় আর্সেনালকে।
ম্যাচের ২৭তম মিনিটে প্রথম গোল পায় আর্সেনাল। আর্সেনালের মার্টিনেলির জোড়ালো শট এভারটনের লওবি’র হাতে লাগলে ভারের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি। এভারটন গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে বাম পাশ দিয়ে দারুণ শটে গোল করেন মার্টিনেলি।
মাত্র দুই মিনিট পরেই আর্সেনালের পক্ষে লিড দ্বিগুন করেন এডি কেতিয়াহ। কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে দারুণ এক হেডে এভারটনের জালে বল পাঠিয়ে দেন তিনি। প্রথমার্ধে একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েছে আর্সেনাল। কখনো প্রতিপক্ষের গায়ে লেগে বা কখনো গোলপোস্ট ছুইয়ে বল বাইরে বেরিয়ে গেছে।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে অতিরিক্ত সময়ে আর্সেনালকে এক গোল ফিরিয়ে দেয় এভারটন। অতিরিক্ত সময়ের ৩য় মিনিটে ভ্যান ডি বিক দারুণ এক গোল করে এভারটনকে ম্যাচে ফেরান। ২-১ গোলের ব্যবধানে শেষ হয় রোমাঞ্চ ছড়ানো প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে আর্সেনাল। ম্যাচের ৫২তম মিনিটে একক দক্ষতায় দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন আর্সেনাল ফুটবলার তাভারেজ। কিন্তু তার শট গোলপোস্টের উপর দিয়ে উড়ে গেলে সুযোগ হাতছাড়া হয় আর্সেনালের।
এর মাত্র তিন মিনিটের মাথায় অসাধারণ দলীয় পরিকল্পনায় ম্যাচের তৃতীয় গোল পায় আর্সেনাল। কর্ণার থেকে ক্রস দেওয়া হয় বক্সের মাথায় থাকা সেদরিক সোয়ারেজের কাছে। বল পেয়েই গোলার মত শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই গানার ফুটবলার। ম্যাচে আরও একবার এগিয়ে যায় আরতেতার দল।
একের পর এক আক্রমণে এভারটনের রক্ষণভাগকে ব্যস্ত রাখে আর্সেনালের ফুটবলাররা। ফলস্বরুপ তিন মিনিট পর আবারও গোল পায় আর্সেনাল। বাম পাশ থেকে উড়ে আসা দারুণ এক ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে লক্ষ্যভেদ করেন গ্যাব্রিয়েল। ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে এগিয়ে যায় গানাররা।
আর্সেনালের আক্রমণ ভাগ এদিন যেন এভারটনকে ক্ষতবিক্ষত করার উদ্দেশ্যে নিয়ে মাঠে নেমেছিল। আক্রমণের পর আক্রমণে এভারটনের রক্ষনভাগকে এলোমেলো করে দিয়েছিল গানাররা।
৮১তম মিনিটে ম্যাচে পঞ্চমবারের মত এভারটনের জালে বল পাঠায় আর্সেনাল। ডান পাশ থেকে মাটি ঘেঁষা বাঁকানো এক শটে আর্সেনালকে ৫-১ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে দেন মার্টিন ওডেগার্ড।
ম্যাচের বাকি সময়ে আক্রমণের ধার বাড়ালেও আর গোল পায়নি আর্সেনাল। শেষ পর্যন্ত ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গানাররা। যদিও এই জয়ে তাদের আসল লক্ষ্যই পূরণ হয়নি। তাই দিনশেষে জয় দিয়ে মৌসুম শেষ করা ছাড়া গানারদের কাছে এই জয়ের আর কোন মূল্য রইলো না। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচ নম্বরে থেকে মৌসুম শেষ করলো আর্সেনাল।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি