লাৎসিওর বিপক্ষে জুভেন্টাসের ম্যাচটি অমিমাংসিতভাবেই শেষ হলো। লিগ শিরোপা অনেক আগেই হাতছাড়া হয়েছে জুভেন্টাসের। চ্যাম্পিয়নস লিগ নিশ্চিত হওয়াতে এ ম্যাচটিও আলোচনায় আসার মত ছিল না। তবে ম্যাচটি আলোচনায় আনলেন জুভেন্টাসের আর্জেন্টাইন ফুটবলার পাওলো দিবালা। জুভদের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন দিবালা। শেষ ম্যাচে বাচ্চাদের মতো কাঁদলেন, সবাইকে কাঁদালেন।
ম্যাচের সতেরো মিনিটে জর্জিও কিয়েল্লিনিকে তুলে নেন জুভেন্টাস কোচ ম্যসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি। কিয়েল্লিনি ওঠার আগে অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ডটা পড়িয়ে দেন পাওলো দিবালাকে। দু’জনেরই মৌসুম শেষে ক্লাব ছাড়া নিশ্চিত হয়েছে আগেই। এমনকি জুভেন্টাসের জার্সি গায়ে শেষ ম্যাচটাও খেলে ফেললেন তারা।
ম্যাচ শেষ হতে ক্যামেরা লেন্স তাক করা হলো দিবালা ও চিয়েল্লিনির দিখে। দেখা যায়, বাচ্চাদের মত হাউমাউ করে কাঁদছেন পাওলো দিবালা। কিছুতেই যেন নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না এই আর্জেন্টাইন ফুটবলার।
দীর্ঘ সাত বছর অ্যালিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে কাটিয়েছেন। নিজেকে ফুটবল বিশ্বের সামনে নিয়ে এসেছেন। এই সাত বছরে কত পরিবর্তন হয়েছে দিবালার জীবনে। আর্জেন্টিনা দলে অভিষেক হয়েছে, তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার থেকে দলের অধিনায়কও হয়েছেন।
জুভের সাথে তার সম্পর্কের গভীরতা যে কতটা সেটাই যেন বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন দিবালা। ৭৮ মিনিট পর্যন্ত মাঠে ছিলেন। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তার ঐভাবে কান্না করাটা যেন তার ভিতরে জুভেন্টাসের প্রতি জন্মে যাওয়া মায়াকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন।
জুভেন্টাসের হয়ে দিবালার অভিষেক হয় সুপারকোপা ইতালিয়ান টুর্নামেন্টে। অভিষেকটা গোল করেই রাঙিয়েছিলেন তিনি। অভিষেক মৌসুমে ১৬ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন দিবালা। যেখানে ৬ গোলের সাথে, দুইটি গোলে সহায়তাও করেছেন তিনি। প্রথম মৌসুমে তার প্রতি ১৫১ মিনিটে একটি করে গোল ছিল।
২০১৫ সালে আরেক ইতালিয়ান ক্লাব পালমেইরাস থেকে জুভেন্টাসে এসেছিলেন দিবালা। ২২ বছর বয়সী তরুণ দিবালা এখন ২৯ বছর বয়সী পরিণত ফুটবলার। এই সাত বছরে জুভেন্টাসের পরিকল্পনার মূল খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। জুভেন্টাসের হয়ে জিতেছেন টানা ৫ সিরি-আ শিরোপা।
তবুও কোথাও যেন বেশ অনেক দিন ধরেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন এই আর্জেন্টাইন ফুটবলার। তাই হয়তো নতুন কোন ঠিকানায় গিয়ে নতুন করে শুরু করতে চাইছেন।
ম্যাচ শেষে যখন কিছুতেই কান্না থামছিল না দিবালার, তখন তাকে এসে স্বান্তনা দেন চিয়েল্লিনি। যিনিও নিজেও জুভেন্টাসের সাথে ১৭ বছরের ক্যারিয়ের ইতি টানবেন চলমান মৌসুম শেষে। দিবালাকে পরে চিয়েল্লিনি নিয়ে যান মাঠের মাঝখানে। ওখান থেকেই সমর্থকদের বিদায় জানান দু’জনেই। ক্যামেরার লেন্স গ্যালারিতে গেলে সেখানেও অনেক সমর্থকদের দেখা গেছে চোখ মুছতে।
সাত বছরে জুভেন্টাসের হয়ে ২০৯ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন দিবালা। জুভের জার্সি গায়ে ৮২টি গোল রয়েছে এই আর্জেন্টাইনের। জুভেন্টাসে যাওয়াটা দিবালার জন্য কিছুটা ‘লাকি’ও বলা চলে। কারণ ঐ বছরে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলেও অভিষেক হয়েছিল তার। আলবেসেলিস্তাদের হয়ে ৩২ ম্যাচ খেলেছেন দিবালা, যেখানে দুইটি গোল রয়েছে তার।
দিবালার পরবর্তী গন্তব্য সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। তবে ইন্টার মিলান বা স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় যেতে পারেন, এমন গুঞ্জন রয়েছে ফুটবল পাড়ায়!
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি/পিপিআর