করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর প্রথম মৌসুম ছিল ২০২০-২১ মৌসুম। কোভিড-১৯ এর জন্য যখন পুরো বিশ্ব টালমাটাল, সেই সময়ই দর্শকশূ্ন্য মাঠে গড়িয়েছিল ইউরোপিয়ান ফুটবল। স্বাভাবিকভাবেই কমেছে দলগুলোর আর্থিক আয়। তবে এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সম্ভবত স্প্যানিশ লা লিগায়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে লা লিগার আয় কমেছে ৮৯২ মিলিয়ন ইউরো। এর মধ্যে ৫৬ শতাংশই কমেছে কাতালান ক্লাব বার্সেলোনার জন্য।
মঙ্গলবার (১০ মে) ২০২০-২১ মৌসুমের আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। সেখানে জানাও হয়েছে ওই মৌসুমে লা লিগার ক্লাবগুলোর মোট আয় ছিল ৩ দশমি ৮২ বিলিয়ন ইউরো। যা কিনা ২০১৯-২০ মৌসুমের চেয়ে ২৪ দশমিক ১ শতাংশ কম। ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো আয় কমেছেন স্প্যানিশ শীর্ষ লিগের।
অবশ্য ২০১৯-২০ মৌসুম চলাকালীনই আঘাত হেনেছিল করোনাভাইরাস। তবে সেটা মৌসুমের প্রায় শেষ দিক হওয়ায় এর প্রভাব খুব একটা টের পায়নি ক্লাবগুলো।
২০২০-২১ মৌসুমে আয় কমার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে টিকিট বিক্রি শূন্যের কোটায় নামা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পুরো ২০২০-২১ মৌসুমই দর্শকশূন্যে মাঠে খেলতে হয়েছে। এছাড়াও টিভি স্বত্ব এবং বাণিজ্যিক স্বত্ব থেকেও কমেছে দলগুলোর আয়।
লা লিগার দেওয়া এই আর্থিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২০-২১ মৌসুমে লা লিগার ক্লাবগুলোর আর্থিক দেনার পরিমাণও বেড়েছে। এই সময়ে দলগুলোর মোট দেনার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ বিলিয়ন ইউরো। আর এই দেনার ৪০ শতাংশই কাতালান ক্লাব বার্সেলোনার।
২০২০-২১ মৌসুমে বার্সেলোনার আয় কমেছে প্রায় ৪৮১ মিলিয়ন ইউরো। এটাই মূলত প্রভাব ফেলেছে লা লিগার ৮৯২ মিলিয়ন আয় কমতে। তবে এই কারণে লা লিগা নিজেদের আর্থিক প্রতিবেদনে সরাসরি বার্সেলোনাকে দায়ী করেনি।
লা লিগার মোট আয়ের ৫৩ শতাংশ আসে ক্লাবগুলোর টিকিট বিক্রি থেকে। আর ৫২ শতাংশ আয় খেলোয়াড় বিক্রি থেকে আসে। সেখানে ২০২০-২১ মৌসুমে টিকিট বিক্রি থেকে কোনো আয়ই করতে পারেনি ক্লাবগুলো। এছাড়া কমেছিল দলগুলোর খেলোয়াড় বিক্রির পরিমাণও।
নিজেদের এই ক্ষতি লা লিগা খুব দ্রুতই পুষিয়ে নিতে পারবে বলে জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ২০২১-২২ মৌসুমেই ঘুরে দাঁড়াবে লা লিগা। আর ২০২৩-২৪ মৌসুমের মধ্যে ক্ষতি পুরোটাই পুষিয়ে নিতে পারবে ক্লাবগুলো।
লা লিগা ঘুরে দাঁড়ালেও বার্সেলোনার আর্থিক সংকট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন লিগ সভাপতি জাভিয়ের তেবাস। অবশ্য শঙ্কা প্রকাশ করাটাই স্বাভাবিক, কারণ বার্সা যে এখনও রয়েছে ঋণাত্মক খরচে। এখনও তাদের ব্যয়ের পরিমাণ ১০৩ শতাংশ রয়েছে বলে জানিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ।
২০২১-২২ মৌসুমেই ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ছিল বার্সেলোনা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইক্যুইটি ফার্ম সিভিসি লা লিগায় দুই বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছিল। সেই পরিকল্পনা সফল হলে আর্থিক ক্ষতি খুব দ্রুতই পুষিয়ে উঠতো দলগুলো। সম্প্রচার স্বত্ব পাঁচ দশকের জন্য হাতছাড়া হবে বলে সেই চুক্তির পক্ষে মত দেয়নি লা লিগার ক্লাবগুলো।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর