রাশিয়া বিশ্বকাপে শিরোপা পুনরুদ্ধার মিশনে নেমে সফল হয়েছিল ফ্রান্স। তবে ২০১৮ বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই ফুটবল বিশ্বে আলোচনায় ছিল দেশটি। ট্রফি জয়ের সম্ভাব্য তালিকায় থাকা ফ্রান্সের নামও বেশ জোরালোভাবেই উচ্চারিত হচ্ছিল। ২০ বছর পর দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তোলার দলে ছিলেন স্টিভেন জোনজি। তিনি জানিয়েছেন, কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা।
৩৩ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার বর্তমানে খেলছেন কাতারের ক্লাব আল রাইয়ানে। চলতি বছরে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক কাতারের লিগে খেলা জোনজিকে ফ্রান্স দলে পুনরায় ডাক পাওয়ার আশা করছেন কি-না, এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন। জবাবে জোনজি বলেছেন, ‘দেখা যাক কী হয়! কেন নয়?’
বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নকে যেকোনো স্বপ্নের চেয়ে বড় মনে করেন ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী এ মিডফিল্ডার। ফিফা ডটকমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জোনজি বলেন, “ছোটবেলায় বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখা অসাধারণ হলেও বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখাটা অকল্পনীয়।”
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের শরীরি ভাষা সম্পর্কেও জানিয়েছেন তিনি। বলেন, “ফাইনালের আগে দলের সব খেলোয়াড়দের দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছিলাম। কারণ, এত বড় মহারণের আগে এমবাপে-কান্তেরা সবাই খুবই ফুরফুরে মেজাজে ছিল। প্রত্যেক খেলোয়াড় প্রচুর হাসাহাসি করছিল।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের দেখে মনেই হচ্ছিল না তারা পরের দিন বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো ম্যাচে মাঠে নামবে। যদিও অবশ্যই তারা চাপে ছিল, কিন্তু কেউই সেটা প্রকাশ করতে চায়নি।”
দলে এমবাপে-ওসমান দেম্বলের মতো তরুণ খেলোয়াড়রা আত্মবিশ্বাস ছড়িয়েছিল। তারা নিজেদের মতো সবাইকে আত্মবিশ্বাসীও করে তুলছিল। এর ফলে দলের মাঝে দারুণ পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, যা ফুটবল বিশ্বকাপ ফাইনালে তাদের ফুরফুরে করে দিয়েছিল বলে জানান তিনি।
২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৬৫ মিনিটে কান্তের বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন জোনজি। সেই মুহূর্তের চাপের বিষয়ে জোনজিকে প্রশ্ন করা হয়।
জাবাবে জোনজে বলেন, “আপনাকে অবশ্যই ব্যক্তিত্ব দেখাতে হবে এবং সাহসী হতে হবে। এমনকি আপনাকে ঘিরে চলা সবকিছু উপেক্ষা করতে হবে, সেটা কঠিন কিছু হলেও। আমরা দর্শকের সামনে ফুটবল ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত। আপনাকে বাকি সব উপেক্ষা করতে হবে এবং শুধুমাত্র ম্যাচেই মনোযোগ ধরে রাখতে হবে।”
জোনজি আরও বলেন, “এটা এমন ধরনের ম্যাচ ছিল যেখানে আপনাকে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। যখন আপনার সেই বোধ থাকবে তখন আপনি চাপকে ইতিবাচক হিসেবে নিতে পারবেন। এসব ম্যাচে উত্তেজনা ও আবেগ থাকবে আপনাকে সেটা সামলে ভালো খেলতে হবে।”
ফুটবল বিশ্বে একাধিক তারকা ফুটবলার রয়েছেন যারা কখনোই ওই সোনালি ট্রফিটি ছুঁয়ে দেখতে পারেননি। লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো সর্বকালের অন্যতম তারকাদের এখনো বিশ্বকাপ ট্রফি ছোয়ার সৌভাগ্য হয়নি।
বিশ্বকাপ ট্রফি আসলে কেমন হয়। ছুঁয়ে দেখলে কেমন অনুভূতি আসে সেটা সবচেয়ে ভালো জানেন যারা শুধুমাত্র এটি জিতেছেন। জোনজি সেই ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন।
জোনজি বলেন, “এটিই সেই ট্রফি, আসল ট্রফি। এটা দেখার অনুভূতি আসলেই অসাধারণ। কিন্তু পরক্ষণেই আপনাকে ম্যাচ জেতাতে মনোযোগ দিতে হবে, যার কোনো বিকল্প নাই। শুধুমাত্র জিতলেই আপনি এটা ধরতে পারবেন, আপনার পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করতে পারবেন।”
৩৩ বছর বয়সী জেনজো ক্যারিয়ারে রোমা, গ্যালতাসারাই, রেনে, সেভিয়ার মতো ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। ২০১৬ সালে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার ইউরোপা লিগ জয়ী দলের সদস্যও ছিলেন তিনি।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর