দুই লিগের দুই সেরা দল। লা লিগার রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চেলসির লড়াইয়ের উত্তাপটা অনুমেয়ই ছিল। হলোও তাই।। ম্যাচের পরতে পরতে উত্থান-পতন, ভাগ্যের দোলাচল আর শিহরণ-রোমাঞ্চ; কমতি রইল না কোনো কিছুর। তাতে নব্বই মিনিটের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে অতিরিক্ত সময়ের গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে পৌছে গেল রিয়াল।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সান্তিয়াগো কোয়ার্টার-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ৩-২ গোলে হেরে গেছে রিয়াল। তবে প্রথম লেগের ৩-১ ব্যবধানে জয়ের সুবাদে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ চারে উঠেছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়ালের মাঠে তাদের উপর সাড়াশি আক্রমণ করতে থাকে টমাস টুখেলের দল। তাতে ম্যাচের পঞ্চদশ মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় ব্লুজরা। রুবেন লোফ্টাস-চিকের ফ্লিকে হাঁটু দিয়ে ডি-বক্সের দিকে বলের মুখ ঘুরিয়ে দেন ভেরনা। দ্রুতগতিতে ছুটে গিয়ে জোরাল শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ম্যাসন মাউন্ট।
গোল খাওয়ার খানিকবাদেই সমতায় ফেরানোর সুযোগ পায় রিয়াল। মাঝমাঠের কাছ থেকে বেনজেমার থ্রু বল ফাঁকায় পেয়ে দ্রুত এগিয়ে গিয়েও সতীর্থের অভাবে হতাশ হতে হয় তাকে। এমন সুযোগ মিসে হতাশ হন বেনজেমা।
প্রথমার্ধে আর গোলের সুযোগ আসেনি। বিরতির পরও আক্রমণের ধারা বজায় রাখে টুখেলের দল। ফলাফল, ম্যাচের ৫১তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে পাশাপাশি দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইনে সমতা টানে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কর্নার থেকে দলকে এগিয়ে নেন রুডিগার।
৬২তম মিনিটে রিয়াল।ডিফেন্ডার ফেরলা মেন্ডির ভুলে বল পেয়ে আক্রমণে গিয়ে গোলও করে চেলসি তবে গোল করার আগেও মাতেওর হাতে বল লাগায় বাতিল হয় সেই গোল। ৬৬ মিনিটে বেনজেমার হেড আটকে যায় ক্রসবারে!
ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে রিয়াল শিবিরে আরেকটা কামান দাগান ভেরনার। বক্সে বল পায়ে। প্রথমে দানি কারভাহাল, এরপর ডেভিড আলাবাকে ছিটকে দুর্দান্ত শট নেন জার্মান ফরোয়ার্ড। চেষ্টা করেও রুখতে পারেননি থিবো কর্তোয়া। তার পায়ে লেগে জালে জড়ায় বল।
দুই লেগ মিলিয়ে চেলসি যখন ৪-৩ গোলে এগিয়ে, তখনই নিভু নিভু প্রদীপের মতোই দপ করে জ্বলে ওঠে মাদ্রিদের রাজারা। ৮০তম মিনিটের মাথায় মদ্রিচের অসাধারণ এক ক্রসে দারুণ ভলিতে চেলসির জাল বল পাঠান ক্যাসিমেরোর বদলি হিসেবে নামা ব্রাজিলিয়ার ফরোয়ার্ড রুদ্রিগো।
গোল পেয়েই পুরোদমে জেগে ওঠে রিয়াল। দলকে সমর্থন জানাতে পুরোদমে জেগে ওঠে বার্নাব্যু। আর তাতেই অতিরিক্ত সময়ে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখে ফেলে কার্লো।আনচেলত্তির দল।
মাঠের বামদিকের বাইলাইন থেকে বল উড়িয়ে দিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তার ক্রসে ফাঁকায় বল পেয়েই দুর্দান্ত হেডে রিয়ালের মহানায়ক হয়ে ওঠেন করিম বেনজেমা। আর তাতেই শেষ চারে পৌছে যায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
শেষ চারে রিয়ালের জন্য প্রতিপক্ষ হিসেবে অপেক্ষা করছে ম্যানচেস্টার সিটি অথবা অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের মধ্যে যেকোনো এক দল।
স্পোর্টসমেইল২৪/এএইচবি