টানা তৃতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে করিম বেনজেমার জোড়া গোলে ভর করে জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখকে পেছনে ফেলে ইউরো শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা।
গত সপ্তাহের নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে সফরকারী রিয়ালের কাছে ২-১ গোলে হেরে গিয়ে পিছিয়ে পড়েছিল বায়ার্ন। তবে গতকালের ম্যাচে প্রথমে গোল করে জার্মান জায়ান্টদের লিড এনে দেয়া জসুয়া কিমিচের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে আশায় বুক বেঁধেছিল বুন্দেসলীগা চ্যাম্পিয়নরা।
হতাশ করেননি তিনি। প্রথম লেগের মত মঙ্গলবারও প্রথম গোলটি করেছেন তিনি। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে সেটি পরিশোধ করে দেন বেনজেমা। বিরতির পর দলকে আবারও লিড এনে দেন এই ফরাসি তারকা। তবে সেটি পরিশোধ করে বায়ার্নকে সমতায় পৌঁছে দেন রিয়াল থেকে ধারে বায়ার্নে খেলতে যাওয়া কলম্বিয় তারকা হামেস রদ্রিগেজ। এরপর স্প্যানিশ ক্লাবের উপর তীব্র চাপ দিয়েও আর কোন গোল করতে পারেনি জার্মান ক্লাব। ফলে ২-২ গোলের সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। কিন্তু প্রথম লেগে ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকার কারণে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করে রিয়াল মাদ্রিদ।
বেনজেমার এ জোড়া গোল কোচ জিনেদিন জিদানের বিচক্ষণতায় আরও একটি সফলতার পলক বসিয়েছে। কারণ তিনিই ফরাসি স্ট্রাইকারকে সেরা একাদশভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অথচ আগের ১২ ম্যাচে বেনজেমার নামের পাশে রয়েছে একটি মাত্র গোল। খেলা শেষে বিন ইন স্পোর্টসকে জিদান বলেন, ‘সে (বেনজেমা) গোল করার যোগ্যতা রাখে। কারণ সে প্রচুর পরিশ্রম করেছে এবং এর বাইরে অন্য কিছুকেই গুরুত্ব দেয়নি।’
জয়টি রিয়াল কোচকে আরেকটি ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জয় পেলেই তিনি পৌঁছে যাবেন কার্লো আনচেলত্তি ও বব পাইসলির সহাবস্থানে। কারণ একমাত্র এই দুই কোচেরই রয়েছে ইউরোপের সেরা এই টুর্নামেন্টে তিন শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা।
মঙ্গলবার রাতে সান্তিয়াগো বার্নব্যুতে অনুষ্ঠিত সেমি-ফাইনালের ফিরতি পর্বের ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ডান দিক থেকে আসা ক্রস গোলমুখে ফেরাতে পারেননি সার্জিও রামোস। বল চলে যায় ডি-বক্সে থাকা কিমিচের পায়ে। বল পেয়ে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন জার্মান এই ডিফেন্ডার (০-১)।
তবে একাদশ মিনিটে গোলটি পরিশোধ করে দেন বেনজেমা। মাতেও কোভসিসের দূর পাল্লার বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ক্রস করেন মার্সেলো। সেটি দর্শনীয় হেডে সঠিক ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন করিম বেনজেমা (১-১)। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই ফরাসি মিডফিল্ডার তোলিসোর ব্যাকপাস ঠেকাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন বায়ার্নের দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক উলরেইচ। তাকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় গোলমুখে, ছুটে গিয়ে অনায়াসে বাকি কাজটুকু সারেন সুযোগ সন্ধানী বেনজেমা (২-১)।
ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে ফের বায়ার্নকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন হামেস রদ্রিগেজ। তার নেয়া প্রথম শটের বল ভারানের পায়ে লেগে ফিরে আসলে ফিরতি বলটি দিয়ে নিচু শটে নাভাসকে পরাস্ত করেন। এই মৌসুমের শুরুতে রিয়াল থেকেই জার্মান ক্লাবটিতে ধারে খেলতে গেছেন কলম্বিয়ার এই মিডফিল্ডার।