বহনযোগ্য কোন জিনিস এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় আমরা সহজেই সরিয়ে নিতে পারি। তবে সেটা অবশ্যই আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু দেখা গেল, একটা বিশাল আকৃতির স্টেডিয়ামকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বহন করে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে!ব্যাপারটা বিস্ময়কর ঠেকবে না? ঠিক এ বিস্ময়কর কাজটিই করেছে ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার।
ফুটবলের সবচেয়ে বড় মহারণ ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে যথাসাধ্য নিজেদের সেরাটা দিয়ে আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। তারই অংশ হিসাবে এবার তারা পরিবহনযোগ্য স্টেডিয়াম নির্মাণ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এটার বিশেষত্ব হলো, বিশ্বের যেকোনো দেশে এই স্টেডিয়ামটি জাহাজে বহন করে নিয়ে যাওয়া যাবে।
পরিবহনযোগ্য এই স্টেডিয়ামটির নাম ‘৯৭৪’। বিস্ময়কর এই স্থাপনার মতো নামটিও এমন অদ্ভুত হবার পেছনে কাজ করেছে কাতারের আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোড (+৯৭৪)। আরেকটি অবাক করা তথ্য হলো, এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করতে কড়ায়গন্ডায় হিসাব করে ৯৭৪টি ব্যবহৃত শিপিং কন্টেইনার ব্যবহার করা হয়েছে।
পরিবহনযোগ্য এ স্টেডিয়াম নির্মাণের আইডিয়া দিয়েছে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদভিত্তিক স্থাপত্য কোম্পানি ‘ফেনউইক ইরিবারেন আর্কিটেক্টস।' এই স্টেডিয়ামে ৪০,০০০ দর্শক একসাথে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবে। দর্শক ধারণ ক্ষমতা এবং মজবুত কিনা সেটা পরীক্ষা করতে ২০২১ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে আয়োজিত ফিফা আরব বিশ্বকাপে এই স্টেডিয়ামটি ব্যবহার করা হয়।
এমন কাঠামোর স্টেডিয়াম নির্মান প্রসঙ্গে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানটির একজন অংশীদার মার্ক ফেনউইক জানান, কাতার বিশ্বকাপের পর হয়তো এই স্টেডিয়ামটি কাতারের কোনো কাজে আসবে না। তখন যাতে এটা অন্যত্র স্থাপন করা যায়। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই এমন ডিজাইন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অনুভব করলাম যে, বিশ্বকাপের পর এই স্টেডিয়ামটি কাতারের আর প্রয়োজন নাও হতে পারে। আমরা এসব বিষয় মাথায় রেখেই স্টেডিয়ামটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি। এটা শুধু বহনযোগ্যই নয়, বিশ্বের যেকোনো দেশে পুণরায় স্থাপন্যযোগ্য। এটাকে চাইলে একটি পূর্ণ স্টেডিয়াম হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। আবার এটার বিভিন্ন অংশ খেলাধুলার ভবন হিসাবেও ব্যবহার করা যাবে।’
ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র দেশ হিসাবে কাতারই এই প্রথম এমন স্টেডিয়াম তৈরি করেছে। তারা এই স্টেডিয়ামটি সারা বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে। চাইলে বিশ্বের যে কেউ এটা নিজেদের দেশে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবে।
প্রধানত, কাতার বিশ্বকাপের পরের আসরগুলোতে যেকোনো দেশ চাইলেই যেন এটাকে নিয়ে ব্যবহার করতে পারে, এই বিষয়টি মাথায় রেখেই এমন অবকাঠামোর স্টেডিয়াম বানানো।
স্পোর্টসমেইল২৪/এএইচবি/পিপিআর
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]