ইন্ডিয়া উইমেন্স লিগে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের সাবিনা খাতুন ও কৃষ্ণা রানী সরকার। শিলংয়ে শনিবার শেষ হওয়া এ লিগের পরের আসর বসার কথা অক্টোবরে। সেখানেও সাবিনা ও কৃষ্ণাকে খেলার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে তাদের ক্লাব সেথু এফসি। বিদেশের লিগে মাঠ কাঁপালেও সাবিনারা পাচ্ছেন না ঘরে লিগ খেলার সুযোগ। দেশের নারী ফুটবলের প্রধান তারকা সাবিনা খাতুন তাই দেশে লিগ আয়োজনের উপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
ভারত থেকে ঢাকায় ফিরে ২৪ ঘণ্টাও বিশ্রাম নেননি সাবিনা খাতুন ও কৃষ্ণা রানী সরকার। রোববার দুপুর থেকেই অনুশীলনে নেমে পড়েছেন জাতীয় দল ও অনূর্ধ্ব-১৬ দলের অধিনায়ক। মে মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি নারী ফুটসাল চ্যাম্পিয়নশিপ। এই টুর্নামেন্টের মধ্যে দিয়ে ফুটসালে অভিষেক হবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের।
রোববার দুপুরে বাফুফে ভবন সংলগ্ন অ্যাস্ট্রো টার্ফে অনুশীলন শেষে ভারতে লিগ খেলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সাবিনা খাতুন বললেন, ‘আমাদেরও লিগটা হওয়া দরকার। কারণ লিগ খেললে খেলোয়াড়রাও খেলার প্রতি অনেক আগ্রহী হবে। খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মানসিকতা বাড়বে।’
বিদেশে প্রথম খেলে আসা অনূর্ধ্ব-১৬ দলের অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী সরকারও মনে করে, যতো বেশি খেলা হবে ততোই তাদের জন্য মঙ্গল। বেশি বেশি প্রতিদ্বন্দ্বীতপূর্ণ ম্যাচের বিকল্প নেই। ভারতীয় লিগে সাবিনা ৭ ম্যাচ খেললেও কৃষ্ণা নামতে পেরেছিলেন ৩ ম্যাচে। তাও সাবিনার বদলি হিসেবে। কারণ লিগের নিয়ম অনুযায়ী একজন বিদেশি খেলোয়াড়ই মাঠে থাকতে পারেন।
পুরো খেলতে না পারায় নিশ্চয় অতৃপ্তি আছে আপনার? ‘আসলে কিছু করার ছিল না। যেহেতু একজন খেলতে পেরেছেন এবং সাবিনা আপু ভালো খেলছিলেন, তাই তিনিই খেলবেন স্বাভাবিক। আমি তো সাবিনা আপুর জন্যই খেলতে পারিনি’-হেসে জবাব দিলেন কৃষ্ণা রানী সরকার।
ঘরোয়া লিগ তো হচ্ছে না। হলে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে আপনার? জবাবে কৃষ্ণা বলেন, ‘অবশ্যই। তাহলে খেলতে পারবো। আমার আসলে খেলতে ভালো লাগে। খেলতেই তো ভারত গিয়েছিলাম। আগামীতে সুযোগ পেলে যাবো।’
সাবিনা ও কৃষ্ণা আসলে বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য ভারতীয় ঘরোয়া ফুটবলের দরজাটা খুলে দিয়ে এসেছেন। তারা আশা করছেন আগামীতে তাদের সঙ্গে আরো মেয়েরা দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে বড় দেশটির ঘরোয়া ফুটবলে খেলার সুযোগ পাবেন।
‘আমি সব সময় নিজের শতভাগ দিয়ে খেলার চেষ্টা করি। ভারতেও করেছি। আসলে আমাদের দলটি অতটা শক্তিশালী ছিল না। আমি গোল করতে পেরেছি। আমার গোলেই দলটি সেমিফাইনালে উঠেছিল। এটা আমার কাছে ভালো লাগছে। ক্লাব কর্মকর্তারাও আমাদের প্রশংসা করেছেন। আমি বলবো, এটা বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জন্যই ভালো খবর। আগামীতে আমি যদি ভারতে খেলতে যাই তাহলে আরো কয়েকজনকে নেয়ার চেষ্টা করবো’-বলেন সাবিনা খাতুন।
সাবিনা এর আগে মালদ্বীপের ঘরোয়া ফুটবলে মুড়িমুড়কির মতো গোল করেছেন। সে তুলনায় ভারতে তার গোল অনেক কম। এর ব্যাখ্যা দিয়ে জাতীয় দলের অধিনায়ক বলেন,‘আসলে ভারতের এ লিগের সঙ্গে মালদ্বীপের ওই টুর্নামেন্টের তুলনাই হয় না। বলতে গেলে আকাশ-পাতাল। ভারতের লিগের দলগুলো অনেক শক্তিশালী। এখানে গোল করা অতটা সহজ ছিল না।’