একটি সুন্দর ম্যাচের জন্য প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশ, সুন্দর মাঠ। ফুটবল খেলা তখনই সুন্দর ও গোছানো হয় যখন একটি ভালো মাঠে খেলাটির আয়োজন করা হয়। একজন ভালো খেলোয়াড় তার সেরা খেলাটা তখনই দিতে পারে যখন সে একটি ভালো মাঠ পায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা প্রায়ই বলতে শুনি, ভালো খেলা উপহার দিতে অক্ষম ফুটবলাররা। তবে, এর দায় কি পুরোটাই খেলোয়াড়দের?
এত বছর পার হয়ে গেলেও এক বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম বাদে বিকল্প ভালো মানের একটি স্টেডিয়াম নেই আমাদের। আর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামকেও বলা চলে `মন্দের ভালো`। এত এত ম্যাচ, এত অল্প সময়ের বিরতিতে পৃথিবীর আর কোন স্টেডিয়ামে হয় কিনা সন্দেহ থেকেই যায়।
চলছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় লেগের খেলা। সূচি অনুযায়ী দেখা যায় যে, প্রতিদিন একই মাঠে ৩টি করে ম্যাচ হচ্ছে। অর্থাৎ বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রায় ৭ ঘন্টা একটানা খেলার মাঝেই থাকতে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামকে।
সূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার (৪ই মে) থেকে শনিবার (৮ই মে) পর্যন্ত একদিনের বিরতি সহ ৪ দিনে ১২টি ম্যাচ হবে শুধু এই মাঠেই ! একটি ফুটবল মাঠ কি আসলেই এতটুকু চাপ নেয়ার সামর্থ্য রাখে?
বর্তমানে লকডাউনের কারণে সকল ম্যাচ এই স্টেডিয়ামে দেয়া হয়েছে। তবে ইতিহাসে চোখ বুলালে দেখা যায় যে, হাতে গোনা ৪-৫ টি দল বাদে সবগুলো দলই হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করে ঢাকার এই মাঠকে। আর তাই লিগে সবচেয়ে বেশী ম্যাচও খেলা পড়ে এই মাঠটাতেই। ফলাফল, মাঠের নাজেহাল অবস্থা।
শুধু ফুটবল নয়, মাঝে মাঝে বড় ধরনের প্রোগ্রামও এই মাঠের মাঝেই আয়োজন করতে দেখা গিয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল ম্যাচের জন্যও ভেন্যু এই এক স্টেডিয়ামই।
চলমান দ্বিতীয় লেগের ম্যাচগুলোর সময়ে যে কোন সময় নামতে পারে বৃষ্টি। বৃষ্টি হানা দিলে স্টেডিয়ামের পানি নিষ্কাসনের যে দুর্বল ব্যবস্থা তাতে মাঠের অবস্থা কি হবে, তা ভাবাই মুশকিল। এমন নাজেহাল স্টেডিয়ামে হয়তো ফুটবল চলে, তবে সেটা দায়সারা ভাবেই।
একটি ম্যাচের পর আরেকটি ম্যাচের জন্য মাঠকে প্রস্তুত করার জন্য যে সময়টুকু দরকার নূন্যতম সেই সময়টিও পাচ্ছে না এই জাতীয় স্টেডিয়াম।
দ্বিতীয় লেগের প্রথম দিনের ম্যাচগুলোতেই স্টেডিয়ামের মূল পিচকে খুবই নিষ্প্রভ দেখাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল যেন দীর্ঘ এই বিরতিতে যত্ন নেয়ার কেউ ছিল না। আর এখন এত ম্যাচের চাপ কিভাবে নিবে ঢাকার এই স্টেডিয়াম?
হয়তো, ম্যাচগুলো আয়োজন হবে, খেলাও শেষ হবে। তবে, একটি ফুটবল ম্যাচের জন্য `ফ্রেশ` যে মাঠ দরকার, তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খেলোয়াড়েরা।
লকডাউন এবং করোনা পরস্থিতি স্বাভাবিক হলে আয়োজকদের উচিত ঢাকার বাইরে আরও ভেন্যু বাড়িয়ে ঢাকার এই মাঠকে `অবসর` দেয়া। তাছাড়া ঢাকার মাঠ মানেই দর্শক শূণ্য গ্যালারি।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, দেশের ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে হলে ঢাকার বাইরে খেলার আয়োজনের বিকল্প নেই। ফুটবল ছড়িয়ে পড়ুক সারাদেশে, আর শেষ বয়সে এসে একটু বিরতির সুযোগ করে দেয়া হউক ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামকে।
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]