চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি কে না পেতে চায়? তবে ট্রফি যে সবার কপালে জুটে না। ফুটবল যেখানে নিষ্ঠুর, ট্রফি যেন সেখানে সবচেয়ে বেশি স্বার্থপর। না হলে কেন মানুষের চোখের জলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেনই বা হাজার দিনের লালিত স্বপ্ন মাত্র একটি গোল আর ৯০ মিনিটে ভঙ করে দেয়।
দীর্ঘ দিনের আক্ষেপ ঘোচাতে রেকর্ড ট্রান্সফার মূল্যতে ব্রাজিলিয়ান ও সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড নেইমার জুনিয়রকে দলে ভেড়ায় ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী তরুণ কিলিয়ান এমবাপের সাথে জুটি গড়ে দলকে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়েছেন নেইমার।
ইউরোপ সেরা হতেই কেবল নেইমারকে দলে ভিড়িয়েছিল ফরাসি জায়ান্টরা। তবে শুরুর দুই সিজনে নিজেকে উজাড় করে দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন তিনি। যেখানে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার ইনজুরি। বার বার ইনজুরিতে পড়ায় দল পড়েছে বিপাকে। প্রথম দুই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয় পিএসজি। তবে খেলার মাঠে নেইমারের পারফরম্যান্স ছিল উজ্জ্বল।
প্রথম দুই সিজনে না পারলেও এবারের সিজনে শুরু থেকেই দারুণ শুরু করেছিল ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। বরুসিয়ার মাঠে গিয়ে হেরে এসে আবারও যখন শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেওয়ার শঙ্কা জাগে তখনই পিএসজির ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন নেইমার। ঘরের মাঠে গোল করে দলকে তুলেন শেষ আটে।
শেষ আটে উঠে আরও উজ্জ্বল হতে থাকে নেইমারদের পারফরম্যান্স। শেষ আটে আটালান্টা বাঁধা পেরিয়ে সেমিফাইনালে জার্মান ক্লাব আরবি লাইপজিগকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠে নেইমার-এমবাপেদের পিএসজি। একই সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জয়ের আশায় বুক বাঁধতে থাকে পিএসজির সমর্থকরা।
তবে পিএসজির সমর্থকদের বুক ভরা স্বপ্ন মলিন হয় বায়ার্ন তারকা কিংসলে কোমানের করা একমাত্র গোলে। বায়ার্নকে এক চুল ছাড়তে দেয়নি পিএসজি। তবে নিজেদের ভুলগুলোই যেন হয়ে দাঁড়ায় স্বপ্ন ভঙের প্রধান কারণ। শেষ ষোলো, শেষ আট কিংবা সেমিফাইনালে নেইমারকে যতটা ছন্দে দেখা গেছে তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে স্বপ্নের ফাইনালে।
নেইমারের মতো নিজের সেরা ছন্দের ছাপ দেখা যায়নি এমবাপের পারফরম্যান্সেও। সেরা ছন্দে না থাকলেও গোল করা সুযোগ পেয়েছিলেন দু‘জনই। ম্যাচের শুরুতেই গোল করার সুযোগ পেলেও তা নষ্ট করেন নেইমার। ১৮তম মিনিটে এমবাপের বাড়ানো বলে নেইমারের শট আটকে দেন ম্যানুয়েল নয়্যার। নেইমারের পাশাপাশি হতাশা ছেঁয়ে যায় পিএসজি সমর্থকদের মাঝেও।
শুধু ফাইনালেই নয়, সবশেষ তিন ম্যাচে গোল করার বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও গোল করতে পারেননি নেইমার। তবে শেষ তিন ম্যাচে গোল করিয়েছেন তিনি। ফাইনালে যার চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। ফাইনালে গোল করাতে তো পারেনইনি বরং নিজে মিস করেছেন সহজ সুযোগ।
প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরা হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। সুযোগ পেয়েছিলেন ক্লাব ইতিহাসের সেরা নায়ক বনে যাওয়ার। তবে প্রয়োজনের সময়ই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না তিনি। তাই তো ম্যাচ শেষে হতাশা ছেঁয়ে গিয়েছিল নেইমার ও পিএসজির মাঝে। যা স্বভাবগতভাবেই স্বাভাবিক।
ম্যাচ শেষে নেইমারের চোখে জল ঝড়েছে। গোল মিস করার প্রায়শ্চিত্ত করতেই যেন অঝোরে ঝড়ছিল নেইমারের চোখের জল!
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]