কাতারের মাটিতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ফুটবলের বৈশ্বিক আসর। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে এই আসরকে ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে শুরু হয়ে গেছে উন্মাদনা। সবার দিন কাটছে তারকাদের নিয়ে আলোচনা করে। দলগুলো নিয়েও তাদের আগ্রহের সীমা নেই। কাতারে কে জিতবে ট্রফি?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদেরকে চোখ রাখতে হবে ৩২টা দলের মহারণের দিকে। এই ৩২ দলের মধ্যে সবাই-ই শিরোপা প্রত্যাশী। তবে সবাই ভাগ্যবান নয়। আজ আমরা এমন কয়েকটা দলের দিকেই চোখ রাখবো। যাদের কেউ ফেভারিট, কেউ শিরোপা দাবিদার, কেউ বা চমকে দিতে পারে ধুমকেতুর মতো।
কাতারে ফেভারিট যারা
কাতারের মাটিতে এবারের আসরে নিঃসন্দেহে সবার চোখে ফেভারিটের তকমা পাচ্ছে লাতিন দল ব্রাজিল। সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপের ট্রফিতে চুমো খেয়েছিল সেলেসাওরা। এরপর টানা দুই যুগ কেটে গেছে বিশ্বকাপ ট্রফি খরায়। এবারের আসরে তাই বেশ শক্তিশালী দল নিয়েই কাতারে পা রাখবে ব্রাজিলিয়ানরা।
পাঁচবারের শিরোপধারীরা কাতারে তাদের গভীরতা বুঝে দল নিয়ে যাচ্ছে। নেইমার, ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং অ্যালিসনদের মিশেলে তাদেরকে ফেভারিটের তালিকায় না রাখার উপায় নেই। সবার উপরেই থাকবে।
আরেকবার উল্লাস করতে পারে ফ্রান্স
এরপর আসে ফ্রান্সের নাম। চূড়ান্ত পুরস্কারের জন্য চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাতারে পা রাখবে দিদিয়ের দেশমের দল। তারকা-খচিত স্কোয়াডে আছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, করিম বেনজেমা এবং পল পগবা। তারা জানেন যে বিজয়ী হতে হলে কী করতে হবে, আগের আসরেও করে দেখিয়েছেন।
ইউরো ২০২০-এ ঘরের মাটিতে ফাইনালে পৌঁছানোর আগে ইংল্যান্ড ২০১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও পৌঁছেছিল। এবার একঝাক তরুণের মিশেলে বেশ ভালো দল গড়েছে থ্রি লায়ন্সরা। বাকিটা দেখা যবে বিশ্বমঞ্চে।
ইংলল্যান্ডের পর ধরতে হয় ২০১০ সালের বিজয়ী স্পেনকে। যাদের হাতে একটি তরুণ স্কোয়াড রয়েছে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনাও কম যাবে না। লিওনেল মেসিকে বিদায়ী উপহার দিতে নিজেদের সবটা উজাড় করে দিবেন লাওতারো মার্টিনেজরা।
লড়াই করতে পারে যারা
কাতারে নিজেদের লড়াইটা দেখানোর দিক দিয়ে এগিয়ে আছে বেলজিয়াম। সম্প্রতি যারা ফিফা বিশ্ব র্যাংকিং থেকে পিছিয়ে গেছে। বেলজিয়ামের এবারের দলটাকে বলা হয় সোনালী প্রজন্ম। কেভিন ডি ব্রুইন এবং এডেন হ্যাজার্ডের মতো তারয়াক রয়েছে তাদের দলে। সুতরাং আশা করাই যায়।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালও এবারের আসরে জানান দিতে পারে নিজেদের। দলের সেরা তারকা রোনালদো। এছাড়াও আছে অভিজ্ঞ রক্ষণ ও আক্রমণভাগ। পর্তুগিজরা আশা দেখতেই পারে।
শিরোপা ধরা দিতে পারে বেলজিয়ামের হাতেও
ডেনমার্কের সামনেও রয়েছে ইতিহাস গড়ার সুযোগ। ২০২০ ইউরোর মঞ্চ থেকে সেরা তারকাকে হারানো দলটা এবার নামবে পুরো শক্তি নিয়ে। আছেন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনও। তারা কিছু করে ফেললেও আশ্চর্যের কিছু নেই। বরং সেটা হবে তাদের প্রাপ্য বিজয়।
চমকে দিতে পারে যারা
ক্রোয়েশিয়া ২০১৮ বিশ্বকাপ পৌছেছিল। কারণ লুকা মড্রিচ। দলকে ফাইনাল পর্যন্ত একা টেনে নিয়ে ব্যালন ডি’অর জেতার গৌরব অর্জন করেছিলেন তিনি। চার বছর আরেকবার কি বিশ্বকে চমকে দিতে পারবে মদ্রিচের দল? ফুটবলে সব সম্ভব বলেই এই দলটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন ক্রোয়েশিয়ানরা।
উরুগুয়ে – বিশ্বকাপ ইতিহাসে যাদের রয়েছে বিশাল অভিজ্ঞতা। যেকোনো দলের জন্য। এডিনসন কাভানি এবং লুইস সুয়ারেজ হুমকি হয়ে উঠতে পারেন। এছাড়াও চমকে দিতে পারে ৬৮ বছর পর সেরা চারে খেলার স্বপ্ন দেখা সুইজারল্যান্ডও। বর্তমান আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস চ্যাম্পিয়ন সেনেগালও পিছিয়ে নেই।
অভিজ্ঞতা দিয়ে মাত করে দিতে পারে উরুগুয়েও
একদল তারুণ্যের উচ্ছ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে পা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেকোনো দলকে ঝাঁকুনিতে কাঁপিয়ে দিতে পারে তারা, শিরোপা ছোঁয়াও অবান্তর নয়। বাদ রইলো না পোল্যান্ডও। বায়ার্ন মিউনিখ তারকা রবার্ট লেওয়ানডোস্কির নেতৃত্বে পোল্যান্ড জ্বলে উঠলে শিরোপাও ছুঁয়ে ফেলতে পারে।
আরও রয়েছে মেক্সিকো এবং কানাডা সহ স্বাগতিক কাতার। ঘরের মাঠে কাতারও কিছু ঘটিয়ে ফেললে অঘটন বলার উপায় থাকবে না। বিশ্বকাপ মানেই তো সেরাদের সেরার লড়াইয়ে ছোটদের চমক।
স্পোর্টসমেইল২৪/এএইচবি