ওয়ার্নের লেগ স্পিন শিল্পের ‘সেরা’ আট

পার্থ প্রতীম রায় পার্থ প্রতীম রায় প্রকাশিত: ০৩:৩৮ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২২
ওয়ার্নের লেগ স্পিন শিল্পের ‘সেরা’ আট

মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে নিজের আগ্রাসী আচরণের জন্য সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন শেন ওয়ার্ন। বিভিন্ন সময় সমালোচনায় বিদ্ধ হলেও ক্রিকেট মাঠে তার পারফর্মেন্সের কখনই সেই বিরুপ প্রভাব পড়েনি। এ কারণেই হয়তো ভিন্ন শেন ওয়ার্ন। ওপারে পাড়ি জমানো শেন ওয়ার্নকে স্মরণ করতেই তার সেরা আট বোলিং জাদু তুলে ধরা হলো।

কলম্বোতে ওয়ার্নের ফিরে আসা, ১৯৯২

১৯৯২ সালে ভারতের বিপক্ষে সিডনিতে টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখেন শেন ওয়ার্ন। অভিষেক টেস্টে ১৫০ রানের বিনিময়ে এক উইকেট পেলেও দ্বিতীয় টেস্টে পকেটে ভরতে পারেননি কোনো উইকেট। এরপরেও শ্রীলঙ্কা সিরিজে তার উপরে ভরসা রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া টিম ম্যানেজমেন্ট। হতাশ করেননি তিনিও। এ ম্যাচ দিয়েই সবাইকে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন বল হাতে বিশ্বকে শাসন করতে এসেছেন তিনি। সেই ভরসা টাই রেখেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৮ রানে শিকার করে ৩ উইকেট। এখান থেকেই শুরু তার উত্থান যাত্রা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্ল্যাসিক, ১৯৯৩-৯৪

শ্রীলঙ্কা সিরিজের ধারাবাহিকতায় ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে ডাক পান শেন ওয়ার্ন।  সিরিজের প্রথম টেস্টে একাদশে না থাকলেও মেলবোর্নে দ্বিতীয় ম্যাচ জায়গা পান তিনি। সেখানেই শ্রীলঙ্কা সিরিজের নিজের সেরা পারফর্মেন্সকে ছাড়িয়ে যান এই লেগ স্পিনার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসের শিকার করেন ৫২ রানে ৭ উইকেট। ওয়ার্ন তার টেস্ট ক্যারিয়ারে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শিকার করেছিলেন ৫৬ উইকেট।

বল অব দ্য সেঞ্চুরি, ১৯৯৩

ওয়ার্নের ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে বোকা বনে গিয়েছিলেন ইংলিশ ব্যাটার মাইক গ্যাটিং। লেগ স্ট্যাম্প বরাবর পড়া এই বলটি গ্যাটিংকে পরাস্ত করে অফ স্ট্যাম্পে গিয়ে আঘাত করে। আর এতেই বোকা বনে যান গ্যাটিং। বলটি পরিচিত পায় ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামে। এই বলটিই বদলে দেয় শেন ওয়ার্নকে।

এমসিজিতে হ্যাটট্রিক, ১৯৯৪-৯৫

ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক নিজের ঘরের মাঠ মেলবোর্নে করেছিলেন শেন ওয়ার্ন। এর আগের ম্যাচেই ৭১ রানে ৮ উইকেট শিকার করে ইংল্যান্ডকে একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন। ওয়ার্ন তার এই হ্যাটট্রিক করার পথে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছিলেন ফিল ডিফ্রেইটাস, ড্যারেন গুচ এবং ডেভন ম্যালকমকে। এই সিরিজে ইংলিশদের ২৭ উইকেট নিজের পকেটে ভরেছিলেন এই কিংবদন্তি স্পিনার।

ম্যান অব দ্য ফাইনাল, ১৯৯৯

তিন বছর আগেই অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে তোলার পথে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন শেন ওয়ার্ন। সেমিফাইনালে ৩ রানে ৩ উইকেট শিকার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১৪ রানে থামিয়ে দেয় অজিরা। অবশ্য সেবার অস্ট্রেলিয়া বিশ্বসেরা ট্রফিটা নিজেদের করে নিতে পারেনি। কিন্তু পরের আসরের ট্রফিটা নিজেদের করে নিয়েছিল। আর এবার সেই বিশ্বকাপের ফাইনালের নায়ক হয়েছিলেন সর্বশেষ আসরের সেমিফাইনালের নায়ক ওয়ার্ন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৩ রানে ৪ উইকেট শিকার করে দলকে এনে দেন বিশ্বকাপ শিরোপা। শুধু তাই নয়, ফাইনাল সেরার পুরষ্কারটাও নিজেদের করে নিয়েছিলেন এই তারকা।

পাকিস্তান বধ, ২০০২

নিরাপত্তা ইস্যুতে ১৯৯৮ সালেই পাকিস্তান সফর বন্ধ করে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।  এ কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তানকে হোম সিরিজ খেলতে হয়েছিল আরব আমিরাতের মাটিতে। সেখানে পাকিস্তানকে প্রায় একাই শেষ করে দিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে পুরো সিরিজে ১২ দশমিক ৬৬ গড়ে শিকার করেছিলেন ২৭ উইকেট।

অ্যাশেজে অজি আধিপত্য, ২০০৫

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একবারই চিরপ্রতিন্দন্দ্বী ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিলেন শেন ওয়ার্ন। সেবার ইংলিশদের বিপক্ষে অজিরা হারলেও ওয়ার্ন ছিলেন তার চিরচেনা ছন্দে। গ্লেন ম্যাকগ্রার অনুপস্থিতিতে দলের বোলিং লাইন আপের অন্যতম ভরসা ছিলেন। পুরো সিরিজে ১৯ দশমিক ৯২ গড়ে শিকার করেছিলেন ৪০ উইকেট।

৭০০তম উইকেট, ২০০৬-০৭

নিজের ঘরের মাঠ মেলবোর্নে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন শেন ওয়ার্ন। সেই টেস্টেই ৭০০তম উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন এই তারকা ক্রিকেটার। এই উইকেটেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাজারতম উইকেটের কীর্তি গড়েন তিনি।

স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর

[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

এমসিজিতে হচ্ছে ওয়ার্নের নামে বিশেষ স্ট্যান্ড

এমসিজিতে হচ্ছে ওয়ার্নের নামে বিশেষ স্ট্যান্ড

লেগ স্পিনে ‘জাদুকর’ শেন ওয়ার্ন

লেগ স্পিনে ‘জাদুকর’ শেন ওয়ার্ন

রড মার্শের ‘সঙ্গী’ হলেন ওয়ার্ন

রড মার্শের ‘সঙ্গী’ হলেন ওয়ার্ন

রমেশ কুমার : আইপিএলে টেনিস বলের ‘নারিন’

রমেশ কুমার : আইপিএলে টেনিস বলের ‘নারিন’