টেবিল টেনিসের নাম আসলেই চোখে বসবে বোর্ডের দুই প্রান্তে দুইজন খেলোয়াড় ব্যাট হাতে নিয়ে খেলছেন। এ চরিত্রের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন একজন। তিনি হলেন ইব্রাহিম হামাদতৌ। মুখ এবং পায়ের মধ্য দিয়ে খেলেই বিশ্বকে জয় করেছেন তিনি। খেলছেন টোকিও প্যারা অলিম্পিকে।
ইব্রাহিম হামাদতৌ দেখিয়েছেন কোনো কিছুই অসম্ভব না। মাত্র ১০ বছর বয়সে হাত হারিয়েছেন ইব্রাহিম। তবুও এটাই তার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার বলে বিশ্বাস করেন তিনি। বলেন, ‘এর ফলেই আমি টোকিওতে সেরা খেলোয়াড়দের দেখতে পাচ্ছি। আমার মনে হয় কঠোর পরিশ্রম করলে সবকিছুই সম্ভব।’
বুধবার (২৫ আগস্ট) ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অলিম্পিক খেলতে মাঠে নামেন ইব্রাহিম হামাদতৌ। এটি তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় মেগা কোনো টুর্নামেন্ট। এর আগে ২০১৪ সালে বিশ্ব টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে মাঠ মাতিয়েছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকেও বিস্ময়ের উপহার দিয়েছিলেন ইব্রাহিম হামাদতৌ। সেখানে মুখ এবং পায়ের মাধ্যমে খেলেছিলেন টেবিল টেনিস। সেখান থেকেই নিজেকে চেনানো শুরু করেছিলেন ৪৮ বছর বয়সী ইব্রাহিম।
নিজের খেলা নিয়ে ইব্রাহিম বলেন, ‘আমি প্রথম হাতের বাহু দিয়েই খেলার চেষ্টা করেছিলাম। আরও কয়েকভাবে চেষ্টা করেছিলাম তবে তা আমার জন্য কার্যকর হয়নি। সবশেষে আমি মুখ দিয়েই খেলার চেষ্টা করেছিলাম। এটাই আমাকে কার্যকর হতে সফল করেছে।’
ছোটবেলা থেকেই টেবিল টেনিসের প্রতি বেশ আগ্রহী ছিলেন ইব্রাহিম হামাদতৌ। তবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হাত হারানোর পর থেকেই খেলার স্বপ্নকে দূরে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে একটি মর্মস্পর্শী ঘটনায় তাকে বদলে দেয়, ফিরে আসেন টেবিল টেনিস বোর্ডে।
খেলতে না পারলেও ম্যাচ পরিচালনাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন ইব্রাহিম। তবে দুইবন্ধুর মধ্যকার এক ম্যাচ পরিচালনা করতে গিয়ে শোনেন কটুকথা। এরপরেই আবারও ফেরার চিন্তা মগ্ন হন তিনি। ইব্রাহিম বলেন, ‘বন্ধুদের ম্যাচ পরিচালনা করতে গিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে আমি তা সংশোধন করতে যাই। তবে তারা আমাকে বলে, আমি কখনই খেলতে পারবো না, তাই তারা আমার সিদ্ধান্ত মানেন না। এরপরই আমি কোর্টে ফেরার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হই।’
কঠোর অনুশীলনে স্বপ্নকে সত্যি করেন ইব্রাহিম হামাদতৌ। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক টেনিসে নাম লেখান। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর কঠোর পরিশ্রমের ফল স্বরুপ সুযোগ পান ২০১৪ ওয়ার্ল্ড টেনিস টুর্নামেন্টে। এরপর ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিক এবং ২০২১ সালে আসলেন টোকিও অলিম্পিকে। একের পর এক সাফল্য পেয়ে নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন অন্যন্য উচ্চতায়।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]