অলিম্পিকে ১২ বছর বয়সী কোনো অ্যাথলেট খেলতে নেমেছে, শুনলেই বেশ অবাক লাগে। এটাই সত্যি, এবারের অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন ১২ বছর বয়সী সিরিয়ান টেবিল টেনিস খেলোয়াড় হেন্ড জাজা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের এ অ্যাথলেট টোকিও অলিম্পিকের সর্বকনিষ্ঠ অ্যাথেলট। অলিম্পিকের ইতিহাসের তার থেকেও কম বয়সে আরও চারজন অ্যাথলেট অংশ নিয়েছেন।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে অংশ নেওয়া অ্যাথলেটদের মধ্যে একমাত্র হেন্ড জাজাই সিরিয়ার বয়সভিত্তিক সব টুর্নামেন্টের বিজয়ী। এছাড়াও আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিসও সাফল্যও পেয়েছেন তিনি।
চার ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট জাজা মাত্র ৫ বছর বয়সে হাতে র্যাকেট তুলে নেন। এর ছয় বছর পর পশ্চিম এশিয়ার অলিম্পিক বাছাই পর্বে অংশ নেন জাজা। সেখানে লেবাননের টেবিল টেনিস তারকা মারিয়ানা শাহাকিয়ানকে হারান জাজা। বয়সে ৩২ বছরের বড় মারিয়ানাকে হারানোর মাধ্যমেই টোকিও অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন জাজা।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ায় নিজের ঘর বাড়ি ধ্বংস হতে দেখেছেন জাজা। তবুও নিজেকে থামান নি, সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছেন। অলিম্পিকে খেলার স্বপ্ন পূরণ করেছেন হেন্ড জাজা। এবার অলিম্পিকে অংশ নিয়েই থামতে চান না হেন্ড জাজা। সিরিয়ার মানুষের জন্য পদক জিততে চান। হাসি ফেরাতে চান সিরিয়ার সাধারণ মানুষের মুখে।
সিরিয়ার শহর হামা থেকে আসা জাজা বলেন, ‘আমি সিরিয়ার মানুষের মুখ হাসি ফোটাতে চাই। শুধু আমি না, সব খেলার মাধ্যমেই আমরা হাসি ফোটাতে চাই। আমরা সবাইকে (সিরিয়ার জণগণ) বলেছি আমরা আছি আপনাদেরকে হাসি-খুশি রাখার জন্য।’
জাজা জানান, যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় একমাত্র টেবিল টেনিসই তাকে মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে। এছাড়াও নতুন চ্যালেঞ্জ নিতেও তাকে সাহায্য করে।
টোকিও অলিম্পিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মার্চ পাস্টে সিরিয়ার পতাকা বহন করবেন হেন্ড জাজা। টেবিল টেনিসের কল্যাণেই তিনি একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠছেন বলে মনে করেন জাজা। এছাড়া আত্মবিশ্বাসী এবং মানুষিকভাবে শক্তিশালী হয়েও গড়ে উঠেছেন তিনি।
২০১৪ সালে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে হেন্ড জাজার টেনিসে হাতেখড়ি হয়েছে। সিরিয়ার শহর হামা থেকে আসলেও বর্তমানে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে থাকেন তিনি।
২০২০ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে অলিম্পিকে খেলতে পারতেন হেন্ড জাজা। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এক বছর পিছিয়ে ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের অলিম্পিক। অলিম্পিকে অভিষেকে সময়ে জাজার বয়স হবে ১২ বছর ২০৪ দিন।
১৯৯২ সালে সর্বশেষ এত কম বয়সে কেউ অলিম্পিকে নেমেছিল। সেবার ১১ বছর বয়সী স্পেনের কার্লোস ফন্ট এবং ১২ বছর বয়সী হাঙ্গেরির জুডিট কিস অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন। এবার ২০২১ সালে অংশ নিচ্ছেন হেন্ড জাজা।
তবে করোনা মহামারির কারণে অলিম্পিক এক বছর পিছিয়ে যাওয়ায় বেশ খুশি জাজা। এক বছর পিছানোর কারণে প্রস্তুতি ক্যাম্পে অনেক বেশি অনুশীলন করতে পেরেছেন বলে জানান। তবে সঠিক সুযোগ সুবিধার অভাবে প্রস্তুতির কিছুটা ঘাটতে থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তবুও নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে চান হেন্ড জাজা।
দ্বিতীয় সিরিয়ান টেবিল টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে অলিম্পিকে আসা হেন্ড জাজা ২০১৬ রিও অলিম্পিকে স্বর্ণ পদকজয়ী ডিং নিংকে নিজের আইডল মনে করেন। খেলার পাশাপাশি পড়াশুনার মাধ্যমেও নিজেকে এগিয়ে নিতে চান হেন্ড জাজা।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]