কোপা আমেরিকার এবারের আসরে নজর কেড়েছেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। জাতীয় দল এবং ক্লাবে উপেক্ষিত থাকা এমিলিয়ানো মার্টিনেজ সুযোগ পেয়েই যেন নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। সাফল্য পেতেও দেরি হয়নি, দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে দলকে তুলেছেন কোপা আমেরিকার ফাইনালে। ক্লাব ক্যারিয়ার কিংবা জাতীয় দলে কখনই প্রথম একাদশের জন্য পছন্দ ছিলেন না মার্টিনেজ। ক্লাব আর্সেনালে সাইড বেঞ্চে কাটিয়েছেন দিনের পর দিন। জাতীয় দলেও ছিলেন উপেক্ষিত,সার্জিও রোমেরো কিংবা আরমানিদের ভিড়ে দীর্ঘ সময় ছিলেন সাইড বেঞ্চেই। তবে এবার সেই উপেক্ষা কাটিয়ে হয়েছেন আর্জেন্টিনার জাতীয় বীর।
যারা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন, তাদের কাছে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ নামটা অপরিচিত মনে হওয়ার কারণ নেই। লন্ডনের ক্লাব আর্সেনালে দিনের পর দিন সাইড বেঞ্চে কাটিয়ে হয়েছেন উপেক্ষিত। তবে সুযোগ পেলে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। তাও কখনও আর্সেনালের প্রথম পছন্দে পরিণত হতে পারেননি মার্টিনেজ। শেষ পর্যন্ত আর্সেনাল ছেড়ে অ্যাস্টন ভিলায় পাড়ি জমিয়ে সাফল্য।
২০০৮ সালে আর্জেন্টাইন ক্লাব ইন্ডিপেন্ডেন্টের হয়ে ২০০৮ সালে ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু। সেখান থেকেই সরাসরি ইউরোপে পাড়ি জমান এমিলিয়ানো। যোগ দেন লন্ডনের ক্লাব আর্সেনালে। তবে আর্সেনালে হয়ে খেলার সুযোগ পাননি তিনি। খেলে বেড়িয়েছেন লোনে। শেফিল্ড ইউনাইটেড, রোথারহাম ইউনাইটেড, উলভারহ্যাম্পটন এবং রিডিংয়ের হয়ে যাযাবরের মত ঘুরেছেন তিনি।
এরপরই ক্লাব আর্সেনালে থিতু হতে পেরেছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ক্লাবে থিতু হলেও জায়গা মিলছিল না একাদশে। ক্রমেই দ্বিতীয় গোলরক্ষক থেকে পরিণত হয়েছিলেন তৃতীয় পছন্দে। অবশেষে ২০১৯-২০ মৌসুমে আর্সেনালে হয়ে মাঠে নামার সুযোগ পান। ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের জোরে পুরো মৌসুমেই তার উপর ভরসা রেখেছিল আর্সেনাল। আস্থার প্রতিদান হিসেবে এফ এ কাপ শিরোপা জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
২০১৯-২০ মৌসুমের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সে নজর কাড়েন প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলার। চার বছরের চুক্তিতে অ্যাস্টন ভিলায় যোগ দিয়ে প্রমাণ করেন, সাইড বেঞ্চে বসে থাকার জন্য সুদূর আর্জেন্টিনা থেকে আসেননি তিনি। এসেছেন নিজেকে প্রমাণ করার জন্য। অভিষেক মৌসুমে ১৫ ম্যাচে ক্লিন শীট রেখে ক্লাব ইতিহাসে রেকর্ড গড়েছিলেন এমিলিয়ানো। এছাড়াও সমর্থকদের ভোটে হয়েছেন বর্ষসেরা ফুটবলার।
ক্লাব ক্যারিয়ারের উপেক্ষিত থাকা এমিলিয়ানো মার্টিনেজ জাতীয় দলেও ছিলেন উপেক্ষিত। ২০১১ সালে প্রথমবারে মত জাতীয় দলে ডাক পান এমিলিয়ানো। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সে ম্যাচের পর এক দশকের অপেক্ষা জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামার। এক দশক পর
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন এমিলিয়ানো। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সে ম্যাচের পারফর্মেন্সে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পান তিনি। নজর কাড়েন কোচ লিওনেল স্ক্যালেনির, আর তাতেই কোপা আমেরিকায় নিজেকে মেলে ধরেছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে প্রথমবারের মত কোনো বড় টুর্নামেন্টে মাঠে নেমেছিলেন এমিলিয়ানো। প্রথম আসরেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। প্রমাণ করেছেন সাইড বেঞ্চে থেকে নয়, তারকা হয়েই শেষ করবেন ক্যারিয়ার।
কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে বাজপাখির মত পেনাল্টি সেভ করে তিনিই হয়েছেন আর্জেন্টিনা দলের উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু। হয়েছেন আর্জেন্টিনার নায়ক।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]