বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল কিংবা সেমিফাইনাল; নিউজিল্যান্ডের নিয়তিই ছিল হার। তবে এবার সবার ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে নিউজিল্যান্ড। আর এ শিরোপার জয়ের পাশাপাাশি নিজেদের নামের পাশে ‘চোকার্স’ শব্দটিরও নিপাত ঘটিয়েছে তারা।
১৯৭৫ সাল থেকে শুরু হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রতিবারই শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখেছে নিউজিল্যান্ড। তবে প্রতিবারই স্বপ্নভঙ্গের ইতিহাস নিয়ে ফিরে আসে তারা। এর মাঝে ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপার দাবিদার না হলেও সেমিফাইনালে বাধা ডিঙাতে পেরেছিল। তবে ‘চোকার্স’ বিশেষণ সরাতে পারেনি তারা। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে আবারও স্বপ্ন ভেঙে মেলবোর্ণ থেকে ওয়েলিংটনে ফিরেছিল নিউজিল্যান্ড।
সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও একই ফল হয়েছিল। ফেবারিট হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে ইংল্যান্ডের মাটিতে পা রেখেছিল নিউজিল্যান্ড। তবে কিউইদের আবারও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল।
এবার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল এক কিউইর হাত ধরেই। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক কিউই বংশোদ্ভূত বেন স্টোকসের হাতে। কারণ, হাত ধরেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পায় ক্রিকেটে জনক ইংল্যান্ড।
২০১৯ বিশ্বকাপে ব্যাট কিংবা বল দু’দিকেই সমান সক্ষমতার দল ছিল নিউজিল্যান্ড। সাথে ছিল কেন উইলিয়ামসনে মত কাপ্তান। তবে কাপ্তান উইলিয়ামসন দলকে এনে দিতে পারেনি অধরা বিশ্বকাপ শিরোপা।
টানা দুই বিশ্বকাপে হারের স্বাদর আগে একটি দলই পেয়েছিল। স্বর্ণযুগের শ্রীলঙ্কা টানা দুই বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছিল। এরপরেই আবারও একই স্বাদ পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড।
দুই টুর্নামেন্টে ফাইনালে হারার পর অনেক ক্রিকেট বোদ্ধায় হয়তো ভেবেছিলেন, বৈশ্বিক কোনো শিরোপা বগলদাবা করতে পারবে না নিউজিল্যান্ড। তবে সে সকল ধারণা কিংবা ভবিষ্যতবাণীকে ভুল প্রমাণ করে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে তুলেছে নিউজিল্যান্ড। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভারতকে হারিয়ে নিজেদের নামের পাশে ‘চোকার্স’ শব্দটি সরিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
প্রথমবারের মতো আয়োজিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শুরু থেকেই ছিল শিরোপা জয়ের তীব্র আকাঙ্খা। কিউই ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষায় ছিল জয়ের তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
মার্টিন ক্রো, শেন বন্ড, ক্রেইগ ম্যাকমিলান কিংবা ড্যানিয়েল ভেট্টোরিরা যা পারেননি তাই করে দেখিয়েছেন উইলিয়ামসন, সাউদি, রস টেইলররা। এখন প্রশ্ন, তারা কি নতুন এক নিউজিল্যান্ডের সূচনা করলেন? কারণ, বিশ্ব আসরে একটি শিরোপা পুরো জাতিকে করে তোলে আত্মবিশ্বাসী।
টেস্ট শিরোপা জয়ে সিনিয়রদের দেখে আসবে নতুন প্রজন্ম। যারা স্বপ্ন দেখে আরও বড় উচ্চতার। তাহলে কি আরও পরাক্রশালী হয়ে উঠবে নিউজিল্যান্ড? এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো সময়ই বলে দিবে। তবে ‘চোকার্স’ শব্দটাকে অব্যাহতি দিতে পারার গৌরব নিশ্চয় নিউজিল্যান্ডকে বেশ আনন্দিত করছে।
বিশ্ব আসরে নিউজিল্যান্ডের সাফল্য-ব্যর্থতা
ওয়ানডে
১. ১৯৭৫ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার
২. ১৯৭৯ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার
৩. ১৯৯২ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার
৪. ১৯৯৯ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার
৫. ২০০৭ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার
৬. ২০১১ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার
৭. ২০১৫ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- ফাইনালে হার (রানার্স আপ)
৮. ২০১৯ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ- ফাইনালে হার (রানার্স আপ)।
টি-টোয়েন্টি
১. ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার
২. ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপ- সেমিফাইনালে হার।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির
১. ২০০০ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- চ্যাম্পিয়ন
২. ২০০৬ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- সেমিফাইনালে হার
৩. ২০০৯ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- ফাইনালে হার (রানার্স আপ)।
বিশ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ
১. ২০১৯-২১ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ- চ্যাম্পিয়ন।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]