শেন ওয়ার্নের মতো বিশ্বসেরা বোলার তার বোলিং দেখে নাম দিয়েছিলেন ‘টর্নেডো’। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রথম সুপার ওভারটাও তিনি করেছিলেন এবং দলকে জিতিয়েও ছিলেন। প্রথম শ্রেণির কোনো ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও আইপিএলের রাজস্থান রয়েলসের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন।
একজন চাষীর ছেলে হয়েও তিনি ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তবে অল্পতেই আবার হারিয়েও গেছেন। হারিয়ে যাওয়া সেই আইপিএল তারকা হলেন কামরান খান। আজ তার গল্প বলবো! তবে গল্পটা একটু আলাদা। এটা শুধুমাত্র একজন তারকার হারিয়ে যাওয়ার গল্প নয়, একজন সাধারণ ছেলের তারকা হয়ে ওঠারও গল্প।
মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়েলসের বোলিং ট্রায়াল চলছিল। সেই ট্রায়ালে বল করতে গিয়েছিলেন কামরান খান। প্রসঙ্গত বলে রাখি, ছোটবেলা থেকে টেনিস বলেই ক্রিকেট খেলতে অভ্যস্ত ছিলেন কামরান। তবে ট্রায়ালে এতো দারুণ বল করেছিলেন যে, রাজস্থান রয়েলসের কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে এমনকি শেন ওয়ার্নেরও তাকে খুব মনে ধরেছিল।
সেই দিন রাতেই কামরান খানকে দলে অর্ন্তভুক্ত করে রাজস্থান রয়েলস। ব্যাস রাতারাতি একজন টেনিস বলে খেলা ক্রিকেটার স্টার হয়ে যান। সেই বছরের আইপিএলে এবং পরের বছর অর্থাৎ ২০০৯ এবং ২০১০ সালে কামরান খান রাজস্থান রয়েলসের হয়ে খেলেছেন। তবে বেশি ম্যাচে সুযোগ পাননি। মাত্র ৮টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে শিকার করেছিলেন ৯টি উইকেট।
২০১১ সালে তিনি খেলেছিলেন পুনে ওয়ারিয়র্সের হয়ে। সেই বছর মাত্র ১টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান তিনি। ওই ম্যাচেই বেশি রান দেওয়ার কারণে আইপিএল ক্যারিয়ারের তার ইতি হয়ে যায়। সেই ম্যাচে ৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৭ রান দিয়ে উইকেট শূন ছিলেন তিনি।
কামরান খানের শুরুটা কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘তার টাকা-পয়সার অনেক সমস্যা ছিল। এমনকি যখন তিনি কানপুর এসেছেন তখন প্লাটফর্মের টিকিট কেটে তাকে সেখানেই রাতে কাটাতে হয়েছিল। ট্রায়াল দেওয়ার জন্য যে সাদা পোশাক সেটাও তার মাত্র একটা সেটই ছিল।’
সাক্ষাৎকারগুলো শুনলেই বোঝা যায় কতটা কঠোর পরিশ্রম করেছেন কামরান খান। আজ থেকে ১০ বছর আগে তাকে ভরতের ভবিষ্যৎ তারকা বলা হতো। একজন বাঁ-হাতি বোলার যে কনা নিয়মত ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারতেন। তবে চোঁট তাকে আর বড় ক্রিকেটার হতে দেয়নি। তার বোলিং অ্যাকশনও বিপক্ষে গেছে। সর্বোপরি ২০১৩ সালের পর আর কোনো টুর্নামেন্টে তাকে দেখা যায়নি।
বর্তমানে কামরান খান ভারতের উত্তর প্রদেশে বসবাস করেন। সেখানে অনেক পাড়ার টুর্নামেন্টে খেলেন, আর সাথে বাবার চাষ-বাসের কাজে সাহায্য করেন। তবে তার আশা, তিনি আবারও আইপিএলে ফিরেবেন। স্বপ্ন রয়েছে, একদিন ভারতীয় দলের জার্সি পড়ে মাঠে নামবেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]