ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় আসর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। সময়ের বিবর্তনে আইপিএল সময়ের সেরা টুর্নামেন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আমাদের আজকের প্রতিবেদনে থাকছে আইপিএলের সংখ্যাতাত্ত্বিক কিছু অজানা তথ্য নিয়ে আলোচনা।
৩
আইপিএলে রান তাড়া করতে গিয়ে রোহিত শর্মা তিনবার ২০তম ওভারের শেষ বলটি খেলেছেন। যে তিনবার শেষ বলটি খেলেছেন তার প্রত্যেকবার শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়েছেন আর দলকে জয় এনে দিয়েছেন। রোহিত শর্মার থেকে বেশি আর কেউ তা করে দেখাতে পারেননি। ধোনিও শেষ বলে তিনবার ছক্কা মেরেছিলেন তবে তিনবারের দু'বারই তিনি দলকে জেতাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এক ম্যাচে দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩১ আর অন্য ম্যাচে ১১ রান। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত আইপিএলে রান তাড়া করতে নেমে রোহিত শর্মা ১৮ বার অপরাজিত ছিলেন আর ১৮ বারই দলকে জিতিয়েছেন।
২০.৬৬
ক্যারিবিয়ান তারকা ক্রিজ গেইলকে বলা হয় ইউনিভার্সেল বস। তার দিনে প্রতিপক্ষ বোলারকে তুলোধুলো করতে ভুলেন না গেইল। তবে রান তাড়া করতে গিয়ে গেইলের ব্যাট একটু বেশিই মলিন। এখন পর্যন্ত আইপিএলের ৯বার ২০০ রানের অধিক রান তাড়া করতে নেমেছেন। যেখানে নয়বারই পরাজিত হয় তার দল। ৯ ম্যাচের একটিতে কেবল একটি ফিফটি পেয়েছিলেন। নয় ম্যাচে তার স্কোরগুলো: ০, ০, ১০, ৭৬, ৩২, ২১, ২০, ২৩, ৪.
০
শূন্য সংখ্যাটি আইপিএলের ধোনি ও সুনীল নারিনের মুখোমুখি হওয়ার একটি রেকর্ডের সংখ্যা। আইপিএলে এখন অবদি ধোনি নারিনের বল খেলেছেন ৫৯টি আর রান করেছেন মাত্র ২৯টি। তবে মজার বিষয় হলো আইপিএলে খেলা ৫৯ বলের মাঝে ছিল না কোন চার, ছক্কা। আইপিএলের আর কোন ব্যাটসম্যান নেই যিনি কি না একজন বোলারের ৫০ বা তার অধিক বল খেলে তাকে ছক্কা,চার হাঁকাননি।
১২০
১২০ সংখ্যাটি আইপিএলে ক্যারিবিয়ান তারকা অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলের আইপিএলের ছক্কার সংখ্যা। রাসেলের থেকে আরও বেশি ছক্কা হাঁকিয়েছেন আরও অনেকেই তবে এই সংখ্যাটার একটা মাহাত্ম্য আছে। আইপিএলে চারের থেকে ছক্কার সংখ্যা বেশি রাসেলের। আইপিএল ক্যারিয়ারে মাত্র ৯৬টি চার মেরেছেন আর ছক্কা মেরেছেন ১২০টি। ৩০ বা তার অধিক ছক্কা হাঁকিয়েছেন এমন ৭৯ ব্যাটসম্যানের মাঝে তিনিই একমাত্র যিনি কি না চারের থেকে ছক্কা বেশি হাঁকিয়েছেন।
১
কালের বিবর্তনে আইপিএল ইতোমধ্যেই ১২টি আসর শেষ করেছে। এই ১২ আসরে অনেকগুলো শতকের মুখ দেখেছে আইপিএল। অবাক করা তথ্য হচ্ছে আইপিএলের এতগুলো আসর পেরিয়ে গেলেও দল হিসেবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সেঞ্চুরি সংখ্যা মাত্র ১টি। যা ১৮ এপ্রিল ২০০৮ সালে এসেছিল ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের ব্যাট থেকে, খেলেছিলেন অপরাজিত ১৫৮ রানের ইনিংস। দলীয় ২২০ রানের ৭১.১৭% রান করেছিলেন ম্যাককুলাম। যা কি না এখনও রেকর্ড হয়ে আছে।তারপর থেকে এখন অবদি ১৯৩ টি ম্যাচ খেলেছে কলকাতা যেখানে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ৯৭ রান করেছিলেন দীনেশ কার্তিক।
১৪
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মেইডেন ওভার নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। তবে সে কাজ করে দেখিয়েছেন অনেকেই। তবে সবচেয়ে এগিয়ে প্রবীণ কুমার। এখন পর্যন্ত মোট ১৪টি ওভার মেইডেন নিয়েছেন তিনি। ১০ মেইডেন নিয়ে তালিকার দুইয়ে রয়েছেন ইরফান পাঠান। আইপিএলে কোন মেইডেন ওভার না পেয়ে সবচেয়ে বেশি ২৮৮.২ ওভার বল করেছেন মুহিত শর্মা।
৯
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট মানেই খেলোয়াড় কেনা-বেচা , নিলাম এইসব। আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৯ বার বিক্রি হয়েছেন জয়দপব উনাদকাত। ২০১১ সালে কলকাতা,২০১৩ সালে ব্যাঙ্গালুরো, ২০১৪ ও ২০১৫ দিল্লী, ২০১৬ কেকেআর, ২০১৭ পুনে, ২০১৮ ও ২০১৯ রাজস্থান। উনাদকাতের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ বার করে বিক্রি হয়েছেন, যুবরাজ সিংহ, দীনেশ কার্তিক, অমিত মিশ্রা ও অ্যারন ফিঞ্চ।
১২০*
১২০* সংখ্যাটি আইপিএলে রাব তাড়া করতে নেমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ২০১১ সালে মোহালিতে কিংস ইলেভেনের হয়ে চেন্নাই কিংসের বিপক্ষে খেলেছিলেন পল ভারাথি।
৬
সংখ্যাটি দেখে কি ভাবছেন ছয় বলে ছয় ছক্কা? মোটেও তা নয় কারণ আইপিএলে এখন অবদি ছয় বলে ছয় ছক্কার দেখা মিলেনি। ছয়ের দেখা না মিললেও দেখা মিলেছে ছয় বলে ছয় চারের। ব্যাঙ্গালুরুর বোলার অরবিন্দের এক ওভারে ৬টি চার মেরেছিলেন আজিঙ্কা রাহানে।
৭
আইপিএলে এখন পর্যন্ত ৭ বার আউট করেছেন জহির খান। যা কি না আইপিএলের ইতিহাসে একজন ব্যাটসম্যানকে আউট করার একমাত্র রেকর্ড।
১৭১
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বোলাররাও হরহামেশাই ছক্কা মারেন। তবে কে বেশি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তা তো জানতে ইচ্ছে করেই। বোলার হিসেবে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি ১৭১ ছক্কা মেরেছেন পিয়ুস চাউলা। ১৩৫ ছক্কা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ডোয়াইন ব্রাভো। অমিত মিশ্রার বিপক্ষে কাইরন পোলার্ডের ১৪ ছক্কা একজন বোলারের বিপক্ষে একজন ব্যাটসম্যানের ছক্কা হাকানোর রেকর্ড।
৩
টানা তিন বছর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছেন এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যা খুবই কম। তবে আইপিএলের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে এমন কীর্তি গড়েছেন কার্ন শর্মা। ২০১৬ সালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ, ২০১৭ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও ২০১৮ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে।
কোন প্রকার হাফসেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি ছাড়া এক হাজারের অধিক রান করেছেন আইপিএলে এমন ব্যাটসম্যানের সংখ্যা মাত্র ১ জন। আইপিএলে ১২৮ ইনিংসে ব্যাট করে ১৯২৭ রান করেছেন জাদেজা, যেখানে তাট ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৮ রান। হাজার রান না করলেও কোন ফিফটি ছাড়া তার পরে আছেন স্টুয়ার্ট বিনি। তিনি করেছেন ৮৮০ রান, যেখানেও তারও সর্বোচ্চ ৪৮। কোন ফিফটি ছাড়া সর্বোচ্চ ১২৮ ইনিংস খেলার রেকর্ড জাদেজার দখলে।