পুরো বিশ্বই এখন আতঙ্কিত করোনাভাইরাস নিয়ে। এতদিন বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দেখা না মিললেও এবার বাংলাদেশে শনাক্ত করা গেছে করোনাভাইরাস রোগী। আর তাতেই শঙ্কা জেগেছে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে আয়োজিত এশিয়া ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ নিয়ে।
সোমবার (৯ মার্চ) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি২০ ম্যাচের টিকিট বিক্রি সীমিত করা হয়েছে। একজনকে একটি করে টিকিট কেনার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কালকের দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচেও দর্শক সমাগম কম রাখতে চায় বিসিবি। জনসচেতনতার কারণেই এই উদ্যোগ নেওয়া বোর্ডের। আরও বড় ঘোষণা আসতে পারে আজ। স্থগিত করা হতে পারে বঙ্গবন্ধু হানড্রেড টি২০ এশিয়া ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ এবং এ আর রহমানের কনসার্ট।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারপ্রধানের অভিমত জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বোর্ডের পক্ষ থেকে। এ সম্পর্কে বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এশিয়া ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ এখন পর্যন্ত পূর্বের সূচিতেই আছে। যে যে খেলা আছে তাতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। আমরা অপেক্ষা করছি সরকারি নির্দেশনার জন্য। সরকারের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারব।'
১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। দেশি-বিদেশি অতিথিদের অংশগ্রহণে ওই দিন জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জন্মশতবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। হঠাৎ করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করার নির্দেশ দেন। অনেক অনুষ্ঠানই সীমিত করা হয় রোববার। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হতে আহ্বান জানান। জনঘন এলাকা এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা করোনাভাইরাসমুক্ত থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্দেশনা দিচ্ছেন। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু হানড্রেড টি২০ ম্যাচ দুটি আয়োজন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
২১ ও ২২ মার্চ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা আছে এশিয়া ও বিশ্ব একাদশের টি২০ ম্যাচ দুটি। এ ছাড়াও ১৮ মার্চ শেরেবাংলায় ভারতের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ও সংগীত পরিচালক এ আর রহমানের কনসার্ট হওয়ার কথা। সুতরাং কনসার্ট আর এশিয়া ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছাড়াও বিদেশি অতিথি, টিভি ক্রু, সংবাদকর্মী এবং ম্যাচ অফিসিয়াল আসার কথা রয়েছে। নিজের অজান্তে করোনাভাইরাস বহন করতে পারেন বিদেশি অতিথিরাও। কেউ কেউ শেষ মুহূর্তে না আসার সিদ্ধান্ত নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হবে বিসিবিকে। সবদিক ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছেন বিসিবি কর্মকর্তারা।
জাতীয় দলের বিদেশ সফর করা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে বিসিবি কর্মকর্তাদের। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে পাকিস্তানেও। তামিম ইকবালদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এপ্রিলে পাকিস্তান সফরের শেষ পর্ব স্থগিত করার কথা ভাবতে পারে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে কোনো সিদ্ধান্তই হুজুগে নেবে না বোর্ড। ভেবেচিন্তে বাস্তবতার নিরিখে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাই ভাবছে।