জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের শুভ সূচনা

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৯:১৭ পিএম, ০৯ মার্চ ২০২০
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের শুভ সূচনা

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের পর দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও শুভ সূচনা করলো বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীয় বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল।

সোমবার (৯ মার্চ) সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ২০০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকার দু’জনেই তুলে নেন নিজেদের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের যথাক্রমে তৃতীয় ও দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি।

সিলেটে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ২৪৫ বলে ২৯২ রানের রেকর্ড জুটি গড়েছিলেন তামিম-লিটন। সিলেটের সেই আবহটা যেন মিরপুরে টেনে নিয়ে আসেন তারা।

ব্যাট হাতে প্রথম ওভারে জিম্বাবুয়ের স্পিনার সিকান্দার রাজাকে একটি করে চার-ছক্কা মারেন লিটন। পরের ওভারের প্রথম বলে নিজের প্রথম বাউন্ডারিটি মারেন তামিম। এতে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় তামিম-লিটনের। তাই পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর হাফ-সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন। আর পাওয়া প্লে শেষে ৫৯ রানে পৌঁছায় বাংলাদেশের রান।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরও মারমুখী মেজাজে ছিলেন তামিম-লিটন। অবলীলায় রান তুলেছেন তারা। ১০ ওভার শেষে দলের স্কোর ৯১তে পৌঁছায়। তবে তখন দু’জনের কেউই হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে পারেননি। তবে ততক্ষণে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন তামিম-লিটন।

১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তামিম-লিটনকে বিচ্ছিন্ন করেন জিম্বাবুয়ের স্পিনার ওয়েসলি মাধভেরে। উইকেট ছেড়ে মারতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন তামিম। এক্সট্রা কভারে তামিমের ক্যাচ নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক উইলিয়ামস। ৯২ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম উইকেট জুটি। ফলে বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উদ্বোধনী জুটিতে নিজেদের রেকর্ড ভেওঙ নতুন রেকর্ড গড়েন তামিম-লিটন।

তামিম ফিরে যাওয়ার ওভারেই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ইনফর্ম লিটন। ৩১ বলে হাফ-সেঞ্চুরির পর, অবশ্য নিজের ইনিংসটি বড় করতে পারেননি। রাজার ঘূর্ণিতে লেগ বিফোর হওয়ার আগে ৩৯ বল খেলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৯ রান করেন লিটন।

দলীয় ১০৬ রানে লিটন ফিরলে ক্রিজে জুটি বাধেন সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিম। শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজ দেখান তারা। ফলে দলের স্কোর দেড়শ কাছেই পৌঁছে যায়। ২টি ছক্কায় দারুণ শুরু করেছিলেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত দলীয় ১৪৬ রানে জিম্বাবুয়ের পেসার ক্রিস এমপফুর বলে আউট হন তিনি।

৮ বলে ১৭ রান করে মুশফিক ফিরলে রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়েছেন সৌম্য। তাকে স্ট্রাইক দিতে মনোযোগি ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জিম্বাবুয়ের পেসার ডোনাল্ড তিরিপানোর করা ইনিংসের ১৭তম ওভারে ১৬ রান তুলেন সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ। এর মধ্যে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন সৌম্য। পরের দু’ওভারে যথাক্রমে- ৭ ও ১০ রান তুলেন তারা।

শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে হাফ-সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছান সৌম্য। আর তৃতীয় বলে ১ রান নিয়ে ৪৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তার প্রথম হাফ-সেঞ্চুরিটি ছিল ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এরপর ২১ ইনিংস পর ৩০তম বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন সৌম্য।

ওই ওভারের শেষ দু’বলে দু’টি ছক্কা মেরে বাংলাদেশের স্কোর ২শ রান স্পর্শ করান সৌম্য। ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০০ রান করে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তৃতীয়বারের মত ২শ’ রানের স্কোর পেল বাংলাদেশ। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান।

সৌম্য ৩২ বলে ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় সংক্ষিপ্ত ভার্সনে নিজের সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬২ রান করেন। ৯ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়ের রাজা-এমপফু-মাধভেরে ১টি করে উইকেট নেন।

২০১ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে প্রথম ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। ব্রেন্ডন টেইলরকে ১ রানে বিদায় দেন বাংলাদেশের পেসার শফিউল ইসলাম। এরপর দ্রুত আরও দুই উইকেটের পতন ঘটে জিম্বাবুয়ের। মিডল-অর্ডারে ক্রেইগ আরভিন ৮ ও ওয়েসলি মাধভেরে ৪ রানে ফিরেন। আরভিনকে শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান। মাধভেরে রান আউটে কাটা পড়েন।

সতীর্থরা ব্যর্থ হলেও রানের চাকা সচল রেখেছিলেন ওপেনার তিনাসি কামুনহুকামবে। তবে দলের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি তিনি। স্পিনার আমিনুল ইসলামের প্রথম শিকার হয়ে ২৮ রানে থামেন তিনি। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২০ বলে ২৮ রান করেন কামুনহুকামবে। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক উইলিয়ামসের সাথে ১৭ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।

এরপর জিম্বাবুয়ের মিডল-অর্ডারের রির্ভর যোগ্য তিন ব্যাটসম্যানকে ছোট-ছোট ইনিংসে থামিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের জয়ের পথ তৈরি করেন বোলাররা। উইলিয়ামস ১২ বলে ২০, রাজা ১০, রিচমন্ড মুতুম্বামি ১৩ বলে ২০ ও ডোনাল্ড তিরিপানো ১৩ বলে ২০ রান করেন। ফলে ১৩০ রানে নবম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ফলে সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের জয়।

তবে শেষ উইকেটে এমপফুকে নিয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে বাংলাদেশের জয়কে দীর্ঘায়িত করেন চার্ল মুম্বা। শেষ পর্যন্ত মুম্বাকে থামান মোস্তাফিজ। তখন জিম্বাবুয়ের রান ১৫২। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ রান করেন মুম্বা। ২ রানে অপরাজিত থাকেন এমপফু। বাংলাদেশের আমিনুল-মোস্তাফিজ ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন সৌম্য সরকার।



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

জিম্বাবুয়ের সাথে সর্বোচ্চ এবং তৃতীয়বারের মতো দুইশ

জিম্বাবুয়ের সাথে সর্বোচ্চ এবং তৃতীয়বারের মতো দুইশ

নিজেদের রেকর্ড ভাঙলেন তামিম-লিটন

নিজেদের রেকর্ড ভাঙলেন তামিম-লিটন

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ইংল্যান্ডে

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ইংল্যান্ডে

করোনা সচেতনতায় মাঠে দর্শক সমাগমে কড়াকড়ি

করোনা সচেতনতায় মাঠে দর্শক সমাগমে কড়াকড়ি