নারী বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ছয় আসরে চারবারই শিরোপা জয় করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। বাকি দুটি শিরোপা ঘরে তুলেছে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে এবারও ফেভারিট হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসরে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। একই সঙ্গে তারা অক্ষুণ্ন রাখতে চায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব।
মেগ ল্যানিংয়ের নেতৃত্বাধীন বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ২০১৯ সালের দ্বিতীয় ভাগে খুব একটা পরীক্ষার মুখে পড়েনি। এ সময় তারা সংক্ষিপ্ত ভার্সনের এ ক্রিকেটে ইনজুরি আক্রান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করেছে। তবে শিরোপার জোড়ালো দাবিদার এ দলটি চলতি মাসে বিষ্ময়করভাবে হেরে গেছে মূল প্রতিদ্বন্দ্বি ভারত ও ইংল্যান্ডের কাছে। পরে অবশ্য অনুশীলনমূলক ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় করেছে।
ল্যানিং অবশ্য মনে করেন, ‘বিশ্বকাপের আগে এভাবে চাপে পড়াটা অবশ্যই ভালো প্রস্তুতি।’ সাম্প্রতিক এ হারের পরও অস্ট্রেলিয়া আশা করছে তারা আগামী ৮ মার্চ মেলেবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এমসিজি) ফাইনালে খেলবে। যেখানে নারী ক্রীড়ায় দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড হবে বলে আশা করছে আয়োজকরা।
১৯৯৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে রেকর্ড সংখ্যক ৯০ হাজার ১৮৫ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিল। ওই ম্যাচে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র টাইব্রেকারে চীনকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে। এবার এমসিজিতে এক লাখ দর্শকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পুরুষ দলের সমান বেতন পাওয়া অসি নারী দলকে হারানো বেশ কঠিন বলেই মনে করা হচ্ছে। তারা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের পাশাপাশি নিয়মিতভাবে খেলে থাকে জনপ্রিয় নারী বিগ ব্যাশ টুর্নামেন্টে। এবারের আসরে এ দলটিকেই ভাবা হচ্ছে দুই ফাইনালিস্টের একটি হিসেবে।
ল্যানিং ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া দলকে অনুপ্রাণীত করতে আছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান আলিসা হিলি, অলরাউন্ডার এলিসে পেরি ও বোলিং সেনসেশন জেস জোনাসেন। এরা সবাই বর্তমানে বিশ্বসেরার কাতারে রয়েছে।
১১ বছর আগে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছেন অসিরা। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ছয়টি আসেরর মধ্যে চারটি শিরোপা জয় করেছে অস্ট্রেলিয়া। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইংল্যান্ডকে আট উইকেটে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলে অস্ট্রেলিয়া।
টুর্নামেন্ট থেকে বাকি দুটি শিরোপা জয় করেছে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারী দল। ২০০৯ সালে নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করেছিল ইংল্যান্ড। আর ২০১৬ সালের শিরোপা জয় করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সিডনিতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ১০ দলের এ টুর্নামেন্টে শিরোপা মিশনে নামবে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচে ভারতীয় দলকে প্রেরণা যোগাবে ব্যাটিং সেনসেশন শেফালি ভার্মা।
ল্যানিং ওই ম্যাচের লাইনআপ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এবারের বিশ্বকাপে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে কয়েকটি ভিন্ন ধরনের দলকে, যাদের খেলার ধরন আলাদা। যে কারণে আমাদেরকে সেরা কম্বিনেশন নিয়েই মাঠে নামতে হবে। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস প্রতিপক্ষ দলটি যেমনই হোক আমরা ভালো খেলে সাফল্য ঘরে তুলব।’
সর্বশেষ চার ম্যাচে ২টি করে জয় পেয়েছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় দলের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কাউর বলেছেন, তার দল গত বিশ্বকাপের পর থেকে দারুণ উন্নতি করেছে। শেষ আসনে আসরের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল ভারত।
নিজের কলামে তিনি লিখেছেন, ‘আমি যদি দুই বছর আগের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব ভারত ৫০ ওভারের ম্যাচে ভালো করেছে। তবে টি-টোয়েন্টি দলকে ধুকতে হয়েছে। তবে গত দুই বছর ধরে আমরা টি-টোয়েন্টি দলে মনোযোগ দিয়েছি এবং ইতিবাচক মানষিকতা নিয়েই অস্ট্রেলিয়া এসেছি।’
রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে ইংল্যান্ড। তারাও নকআউটে খেলার জোড়ালো প্রতিদ্বন্দ্বি। অধিনায়ক হিথার নাইট প্রতিপক্ষ দলগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি স্কোয়াড পেয়েছি যারা এ ক্রিকেটে জয়ের ক্ষমতা রাখে।’