পাকিস্তান সিরিজে যতটা না খেলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আলোচনা হয়েছে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। নিরাপত্তা ইস্যুতে বাতিল হতে হতেও শেষ পর্যন্ত আইসিসির মধ্যস্ততায় পাকিস্তান সফরে গেছে বাংলাদেশ। তবে নিরাপত্তা নিয়ে না ভেবে পাকিস্তানকে কিভাবে হারানো যায় সে চিন্তার ছক কষছেন টাইগারদের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শুরু হওয়ার আগের দিন বৃহস্পতিবার লাহোরে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমরা যখন পাকিস্তানে রওয়ানা দেওয়ার জন্য বিমানে উঠেছি, তখন থেকেই এসব (নিরাপত্তা) চিন্তা বাদ দিয়েছি। এখন আমাদের সামনের ফোকাস শুধু মাঠের ক্রিকেট এবং সেখানে ভালো ক্রিকেট খেলা।’
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘এ সিরিজে আমরা ভালো কিছু করে দেখাতে চাই। আমরা পাকিস্তানে এখন তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে এসেছি। পরেরবার যখন আবার আসব তখন না হয় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। তখন বলতে পারব এখানে এতদিন পরে খেলতে এসে কেমন লেগেছিল। তবে বর্তমান সময়ে আমরা শুধু সিরিজের তিনটি টি-টোয়েন্টি নিয়েই ভাবছি। ভালো ক্রিকেট খেলা এবং পাকিস্তানকে হারানো নিয়েই এখন ভাবছি শুধু।’
কড়া নিরাপত্তায় বিমানবন্দর থেকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় টিম বাংলাদেশকে
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ভালো না হলেও তারা এ ফরম্যাটে নাম্বার ওয়ান দল। অন্যদিকে বাংলাদেশের অবস্থান ৯ নম্বরে। তবে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আমি র্যাঙ্কিং বা রেটিং নিয়েও খুব একটা বেশি কিছু ভাবি না। এসব নিয়ে বেশি ভাবলেই সেটা উল্টো বরং আপনার খেলায় বাজে প্রভাব খেলতে পারে। আমরা জানি পাকিস্তান টি-টোয়েন্টিতে বেশ ভালো দল। ধারাবাহিকভাবে তারা টি-টোয়েন্টিতে ভালো খেলে। এ কারণেই তারা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এ ফরম্যাটের ক্রিকেটে আমাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেখলেও আপনি ভালো বলবেন। আমরা এ পাকিস্তানেও এখন সেই ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে চাই। আমার দল এখানে ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য প্রস্তুত হয়েই এসেছে। আশায় আছি, আমরা ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারব।’
নিরাপত্তার ইস্যুতে পাকিস্তান সফরে যাননি টাইগারদের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। মুশফিককে কতটা মিস করা হবে? এমন প্রশ্নের জবাব রিয়াদ বলেন, ‘মুশফিক না আসায় হয়তো তার জায়গায় কোনো তরুণ খেললে সেটা সেই তরুণের জন্য নিজেকে প্রমাণের বড় একটা সুযোগ হতে পারে। বিপিএলে ভালো পারফরম্যান্স দেখানো তরুণ ক্রিকেটাররা এ সিরিজে নিজেদের প্রমাণ করার একটা সুযোগ পাবে। তামিম, মোস্তাফিজ, শফিউলের মতো অভিজ্ঞদের সঙ্গে দলের এ তরুণ ক্রিকেটারদের মিশ্রণটা হয়েছে বেশ। সুখের বিষয়টা হলো দলের তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যেও ভালো কিছু করে দেখানোর একটা ক্ষিদে দেখেছি আমি।’
চারদিকে সেনা সদস্য, অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পুলিশ বাহিনী, সাইরেন বাজিয়ে রাস্তা ফাঁকা করে ক্রিকেটারদের মাঠে নিয়ে যাওয়া, হোটেলে-স্টেডিয়ামে এমন নিরাপত্তা বলয় নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘এ ধরনের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে আমরা ঠিক অভ্যস্ত নই। তবে চারদিকে এত তোড়জোড় দেখে ভালোই লাগছে। দেখে মনে হচ্ছে, পাকিস্তান আমাদের সম্ভাব্য সেরা নিরাপত্তা ব্যবস্থাই প্রদান করেছে। আমি এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে খুশি।’