তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-২০তে স্বাগতিক ভারতকে ১৪৮ রানে আটকে দিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সংক্ষিপ্ত ভার্সনের হাজারতম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান সংগ্রহ করে ভারত।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। শিশিরের কথা মাথায় রেখে রান চেজে পরিকল্পনা করে টাইগাররা। ব্যাট হাতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। বোলার ছিলেন বাংলাদেশের পেসার শফিউল ইসলাম।
ওই ওভারের চতুর্থ বলেও বাউন্ডারি আদায় করে নেন রোহিত। এ বাউন্ডারির সাথে সাথে টি-২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের মালিক বনে যান তিনি। তবে ওভারের শেষ বলে রোহিতকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন শফিউল। রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি রোহিত। আউট হওয়ার সময় ভারতীয় অধিনায়কের রান ছিল ৫ বলে ৯।
এরপর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে রানের চাকা ঘুড়াতে থাকেন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান। তবে দু’জনের রান তোলার গতি ছিলো বেশ মন্থর। তাই পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে ৩৫ রান পায় ভারত। পাওয়ার প্লে শেষে পরের ওভারের তৃতীয় বলে ভারত শিবিরে আঘাত হানেন লেগ-স্পিনার আমিনুল ইসলাম। ২টি চারে ১৭ বলে ১৫ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন রাহুল। ধাওয়ানের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ২৬ রান যোগ করেন রাহুল।
রাহুলের বিদায়ে ক্রিজে ধাওয়ানের সঙ্গী হন শ্রেয়াস আইয়ার। ক্রিজে গিয়েই মারমুখী মেজাজে শুরু করেন তিনি। স্পিনার আমিনুলকে দু’টি ছক্কাও মারেন তিনি। পরে বাংলাদেশের মিডিয়াম পেসার সৌম্য সরকারকে বাউন্ডারি মেরে বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন আইয়ার। কিন্তু ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আমিনুলকে আবারও ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছাকাছি ক্যাচ দেন তিনি। ক্যাচটি দক্ষতার সাথেই লুফে নেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা মোহাম্মদ নাইম। ১৩ বলে ২২ রান করে ফিরেন আইয়ার। তৃতীয় উইকেটে ২৩ বলে দলকে ৩৪ রান উপহার দেন ধাওয়ান-আইয়ার।
বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকা ধাওয়ান হাফ-সেঞ্চুরির পথেই হাটচ্ছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪১ রানে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ধাওয়ান। তার ৪২ বলের ইনিংসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল। ধাওয়ানের বিদায়ে উইকেটে যান ভারতের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা শিবম দুবে। বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান হতাশ করেছেন।
মাত্র ১ রান করে বাংলাদেশের স্পিনার আফিফ হোসেনের শিকার হন দুবে। নিজের বলেই নিজেই ক্যাচ নেন আফিফ। ফলে ১০২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ভারত। এ অবস্থায় ভারত তাকিয়ে ছিল স্বীকৃত ব্যাটসম্যান ও উইকেটরক্ষক ঋসভ পান্থের দিকে। কিন্তু বাংলাদেশ বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে কারণে ঝড়ো গতিতে রান তুলতে পারেননি পান্থ।
১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে পান্থকে থামিয়ে দিয়ে ভারতের রানকে নাগালের মধ্যে রাখার পথ তৈরি করেন পেসার শফিউল। ৩টি চারে ২৬ বলে ২৭ রান করেন পান্থ। পান্থ যখন ফিরেন তখন ভারতের স্কোর ১২০। বল বাকি ছিল ১০টি।
বাকি ১০ বলে ভারতের বেশি রান তোলার সুযোগ ছিল না। কারণ তখন ক্রিজে দুই টেল-এন্ডার ক্রুনাল পান্ডিয়া ও ওয়াশিংটন সুন্দর। কিন্তু ব্যাট হাতে শেষ ১০ বলে ঝড় তুলেন ক্রুনাল-সুন্দর। ২টি করে চার-ছক্কায় ২৮ রান তুলেন তারা। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রানের লড়াই করার পুঁজি পায় ভারত।
সুন্দর ২টি ছক্কায় ৫ বলে অপরাজিত ১৪ ও ক্রুনাল ১টি করে চার-ছক্কায় ৮ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন। বাংলাদেশের শফিউল-আমিনুল ২টি করে ও আফিফ ১টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত : ১৪৮/৬, ২০ ওভার (ধাওয়ান ৪১, পান্থ ২৭, আইয়ার ২২, আমিনুল ২/২২)।