ব্যাটসম্যান-বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে সফরকারী ইংল্যান্ডকে ২১ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। রোববারের এ জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা ফিরলো কিউইরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড।
প্রথম ম্যাচের মত ওয়েলিংটনেও টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও কলিন মুনরো ১৬ বলে ২৩ রানের জুটি গড়েন। ৫ বলে ৭ রান করে স্যাম কারানের বলে মুনরো আউট হলে ভেঙ্গে যায় উদ্বোধনী জুটি।
প্রথম উইকেট পতনের পর গাপটিলের সাথে জুটি বাঁধেন উইকেটরক্ষক টিম সেইফার্ট। মারমুখী মেজাজে ছিলেন গাপটিল। তাই পাওয়ার প্লেতেই অর্ধশতক পূর্ণ করে নিউজিল্যান্ড। দলের হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়ার পর সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলেই আউট হন সেইফার্ট। ১৫ বলে ১৬ রান করেন তিনি।
তবে ক্রিজে থেকে রানের চাকা ঘুড়াচ্ছিলেন গাপটিল। শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত ৪১ রানের মাথায় আদিল রশিদের বলে আউট হন তিনি। ২৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান তিনি।
গাপটিলের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও রস টেইলর। কিন্তু বেশি দূর একত্রে যেতে পারেননি গ্র্যান্ডহোম-টেইলর। দলীয় ৯৬ রানে আউট হন গ্র্যান্ডহোম। তবে ঝড়ো গতিতে ছোট হলেও দারুন ইনিংস খেলেন তিনি। ১২ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৮ রান করেন গ্র্যান্ডহোম।
গ্র্যান্ডহোমের পর উইকেট পতনের তালিকায় নাম ওঠে টেইলর ও ড্যারিল মিচেলের। টেইলর ২৪ বলে ২৮ ও মিচেল ৫ রানে ফিরেন। দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখিয়েছিলেন টেইলর। তার দেখানো পথে হেটে নিউজিল্যান্ডকে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭৬ রানের সংগ্রহ এনে দেন জেমস নিশাম। সাত নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে মাত্র ২২ বলে ঝড়ো ৪২ রান করেন তিনি। ২টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন নিশাম। ইংল্যান্ডের ক্রিস জর্ডান ৩টি ও স্যাম কারান ২টি উইকেট নেন।
জয়ের ১৭৭ রানের লক্ষ্যে ভালো শুরু করতে পারেনি ইংল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম বলেই ইংল্যান্ডের ওপেনার জনি বেয়ারস্টোকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টিম সাউদি। পরের ওভারে জেমস ভিন্সকে বিদায় দেন কিউইদের আরেক ডান-হাতি পেসার লোকি ফার্গুসন। ১ রান করে থামেন ভিন্স।
শুরুর ধাক্কাটা সামাল দিয়ে দলকে খেলায় ফেরান আরেক ওপেনার ডেভিড মালান ও অধিনায়ক ইয়োইন মরগান। মারমুখী মেজাজে নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর পাল্টা আক্রমণ করেন মরগান। তবে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। ৩টি করে চার-ছক্কায় ১৭ বলে ৩২ রান করে স্যান্টসানের শিকার হন মরগান।
দলীয় ৪০ রানে মরগানের বিদায়ের পর মালানের ব্যাট চড়ে এগিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড। তবে মালানের ব্যাটিংয়ের মাঝে দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান স্যাম বিলিংস ও স্যাম কারান দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফিরেন। বিলিংস ৮ ও কারান ৯ রান করেন। তাদের পর বিদায় ঘটে মালানেরও। ২টি করে চার-ছক্কায় ২৯ বলে ৩৯ রান করেন মালান। এমন অবস্থায় ৯৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে ইংল্যান্ড।
তবে সপ্তম উইকেটে লুইস গ্রেগরিকে নিয়ে মারমুখী মেজাজ দেখান ক্রিস জর্ডান। ৩টি করে চার ও ছক্কা হাঁকান তিনি। তার মারমুখী মেজাজের সুবাদে ১৬ ওভারে ১৩৪ রানে পৌঁছায় ইংল্যান্ড। আর তখনই থেমে যান জর্ডানের ১৯ বলে ৩৬ রানের ইনিংসটি। জর্ডানের বিদায়ের পর লোয়ার-অর্ডারে আর কোন ব্যাটসম্যানই লড়াই করতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত ১ বল বাকি থাকতে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। গ্রেগরি ১৫ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ৩টি, সাউদি-ফার্গুসন-সোধি ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন স্যান্টনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ১৭৬/৮, ২০ ওভার (নিশাম ৪২, গাপটিল ৪১, জর্ডান ৩/২৩)
ইংল্যান্ড : ১৫৫/১০, ১৯.৫ ওভার (মালান ৩৯, জর্ডান ৩৬, স্যান্টনার ৩/২৫)
ফল : নিউজিল্যান্ড ২১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মিচেল স্যান্টনার (নিউজিল্যান্ড)
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা।