দীর্ঘদিন পর নিজ মাটিতে পূর্ণাঙ্গ ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়েছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হলে সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জয় করেছে পাকিস্তান। ওয়ানডের পর এবার প্রথমবারের মত দেশের মাটিতে টি-২০ সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান।
নিজেদের ইতিহাসে এর আগে কখনো দেশের মাটিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ খেলেনি পাকিস্তান। দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ১টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছে। ফলে টি-২০ সিরিজ জিতে ওয়ানডেতে হারের দুঃখ ভুলতে চায় শ্রীলঙ্কা। শনিবার লাহোরে সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
২০০৯ সালে লাহারে শ্রীলঙ্কা দল বহনকারী বাসে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে। ওই বছর জানুয়ারিতে করাচিতে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মধ্যে। দশ বছর পর আবারও সেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই করাচিতে ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজন করে পাকিস্তান।
বাবর আজমের সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় ওয়ানডে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩০৫ রান করে পাকিস্তান। ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০৫ বলে ১১৫ রান করেন বাবর। জবাবে পাকিস্তান বোলারদের তোপে ২৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। তারপরও শেহান জয়সুরিয়ার ৯৬ ও দাসুন শানাকার ৬৮ রানে দারুণভাবে লড়াই করেও হারের স্বাদ পায় শ্রীলঙ্কা।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। ওপেনার দানুস্কা গুনাতিলকার ১৩৩ রানের সুবাদে পাকিস্তানের সামনে বড় টার্গেট ছুড়ে দেয় লঙ্কানরা। ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৯৭ রান করে সফরকারীরা। তবে ২৯৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা ১০ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে স্পর্শ করে ফেলে পাকিস্তান। ফলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় তারা।
ওয়ানডেতে দলের পারফরমেন্সে ভীষণ খুশি পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। ওয়ানডের মত টি-২০ সিরিজেও দুর্দান্ত পারফরমেন্সের অপেক্ষায় তিনি, ‘ওয়ানডেতে আমরা ভালো করেছি। আমাদের ফিল্ডিংয়ে সমস্যা ছিল। তবে আশা করি টি-২০তে আগের ভুল হবে না। ব্যাটসম্যান-বোলাররা ভালো করছে। ফর্মে রয়েছে। এছাড়া টি-২০তে আমরা সব সময়ই ভালো পারফরমেন্স করে থাকি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই পারফরমেন্স দেখাতে চাই। সিরিজ জয়ের মিশন নিয়েই আমরা মাঠে নামব।’
এদিকে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও দুই ম্যাচেই লড়াকু মনোভাব দেখিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ফলে টি-২০ সিরিজে শ্রীলঙ্কা আরও ভালো পারফরমেন্স করতে পারবে বলে আশাবাদী অধিনায়ক দাসুন শানাকা, ‘ওয়ানডেতে আমরা জিততে পারিনি। কিন্তু টি-২০ সিরিজে আমরা আরও ভালো পারফরমেন্স করতে সক্ষম হব। দলের খেলোয়াড়রা টি-২০ সিরিজে ভালো করতে চায়। তারা জানে এটি ভিন্ন ফরম্যাট। এ ফরম্যাটে ভালো করতে হলে দলের সকলকে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করতে হবে। টি-২০ সিরিজে দল ভালো করার জন্য সবাই মুখিয়ে আছে।’
পাকিস্তান টি-২০ দল
সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক), বাবর আজম (সহ-অধিনায়ক), আহমেদ শেহজাদ, আসিফ আলী, ফাহিম আশরাফ, ফখর জামান, হারিস সোহেল, ইফতিখার আহমেদ, ইমাদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ নওয়াজ, শাদাব খান, উমর আকমল, উসমান সিনওয়ারি ও ওয়াহাব রিয়াজ।
শ্রীলঙ্কা টি-২০ দল
দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), দানুস্কা গুনাথিলাকা, সাদিরা সামারাবিক্রমা, অবিষ্কা ফার্নান্দো, ওশাদা ফার্নান্দো, শেহান জয়সুরিয়া, অ্যাঞ্জেলো পেরেরা, ভানুকা রাজাপাকশে, মিনোদ ভানুকা, লাহিরু মাধুশানকা, ভানিন্দু হাসারাঙ্গা, লাকশান সান্দাকান, ইসুরু উদানা, নুয়ান প্রদীপ, কাসুন রাজিথা ও লাহিরু কুমারা।