ভিন লুইস আর শাই হোপ যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে একসময় অনেকেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে, দুইশ ছাড়ানো স্কোর করছে উইন্ডিজ। শংকা জেগেছিল স্কোরটা ঠিক কত হবে? ২৩০? ২৪০? নাকি আরও বেশি? স্বস্তির বিষয় হলো তার ধারেকাছেও গেল না উইন্ডিজের স্কোর।
সাকিব-মুস্তাফিজ-মাহমুদউল্লাহদের বোলিং দাপটে ১৯.২ ওভারে সফরকারীরা অল-আউট হলো ১৯০ রানে। বাংলাদেশ এর আগে ২১৪ রান চেজ করেও জিতেছে। সেটাও শ্রীলঙ্কার মাটিতে। সর্বশেষ ম্যাচেই ২১১ রান করেছে টাইগাররা। সুতরাং ট্রেবল জয়ের আশা করাই যায়।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ো সূচনা করে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার এভিন লুইস আর শাই হোপের কাছে বেদম পিটুনি খাচ্ছিলেন বাংলদেশের হয়ে বোলিং শুরু করা আবু হায়দার রনি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। মেহেদী মিরাজও প্রথম ওভারে কিছু করতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত ঝড় থামানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন অধিনায়ক সাকিব। তার অসাধারণ একটা বলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু পেল বাংলাদেশ। বোল্ড হয়ে ফিরলেন ১২ বলে ২৩ রান করা শাই হোপ।
এর সঙ্গেই ভাঙল ৫ ওভারে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। গত দুই ম্যাচে নিষ্প্রভ থাকা এভিন লুইস আজ সিরিজ জয়ের মঞ্চে জ্বলে উঠলেন। ১৮ বলে ৩ চার ৫ ছক্কায় তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। এর মধ্যে মিরাজের বলে আবু হায়দারের কল্যাণে জীবন পান তিনি। জ্বলে ওঠার আগেই কিমো পলকে (২) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মুস্তাফিজুর রহমান। তার বলে সীমানার কাছ থেকে দারুণ ক্যাচ নেন আরিফুল হক। ৭.১ ওভারেই উইন্ডিজের স্কোর একশ ছাড়িয়ে যায়।
দলের প্রয়োজনের সময়ে সবচেয়ে বড় ব্রেক থ্রু এনে দেন পার্টটাইম বোলার হিসেবে খ্যাত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টর্নেডো গতিতে রান তুলতে থাকা এভিন লুইস এবং হার্ডহিটার শিমরন হেটমায়ারকে পরপর দুই বলে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়েছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর বলে বোল্ড হওয়ার আগে লুইস করেছেন ৩৬ বলে ৬ চার ৮ ছক্কায় ৮৯ রান। পরের বলেই এলবিডাব্লিউ হয়ে যান হেটমায়ার (০)। রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি তাদের। রোভম্যান পাওয়েলকে (২৩) লিটন দাসের তালুবন্দি করে তৃতীয় শিকার ধরেন মাহমুদউল্লাহ।
নিকোলাস পুরানকে (২৯) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টারে বলে ছক্কা মারতে গিয়ে থার্ডম্যানে আবু হায়দারের মনে রাখার মতো একটি ক্যাচে পরিণত হন পুরান। মুস্তাফিজের তৃতীয় শিকার ব্র্যাথওয়েট (৮)। তার বলে মেহেদী মিরাজের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন উইন্ডিজ অধিনায়ক। এরপর জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। একই ওভারে ফিরিয়ে দেন অভিষিক্ত রাদারফোর্ড (২) এবং অ্যালানকে (৮)। উইন্ডিজের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন মাহমুদউল্লাহ। লিটন দাসের কাছ থেকে বল পেয়ে তিনি নিজেই রান-আউট করে দেন ওশান থমাসকে (০)। ১৯০ রানে অল-আউট হয় উইন্ডিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচ একই একাদশ নিয়ে খেলে ফেলল বাংলাদেশ। অন্যদিকে একাদশে একটি পরিবর্বতন এনেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাদ পড়েছেন ড্যারেন ব্রাভো। অভিষেক হচ্ছে ২০ বছর বয়সী ব্যাটিং অল-রাউন্ডার শেরফান রাদারফোর্ডের। সিরিজে এখন ১-১ সমতায়।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, আবু হায়দার, মুস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: এভিন লুইস, শেই হোপ, শিমরন হেটমায়ার, শেরফান রাদারফোর্ড, নিকোলাস পুরান, রভম্যান পাওয়েল, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, কিমো পল, শেলডন কটরেল, ওশান টমাস।