অধিনায়ক বিরাট কোহলির ব্যাটিং ও বাঁ-হাতি স্পিনার ক্রুনাল পান্ডিয়ার বোলিং নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ হার এড়ালো সফরকারী ভারত। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় ফিরলো ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।
রোববার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচে অসিদের ৬ উইকেটে হারায় টিম ইন্ডিয়া। একই সঙ্গে ২০০৮ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে টি-২০ সিরিজ না হারার রেকর্ড ধরে রাখলো ভারত। সিরিজের প্রথম টি-২০ বৃষ্টি আইনে ৪ রানে জিতেছিল অসিরা। দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। অর্থাৎ ১-১ সমতার মধ্য দিয় সিরিজই শেষ হলো।
সিডনিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। উদ্বোধনী জুটিতে উড়ন্ত সূচনা করে অসিরা। দুই ওপেনার ডি আর্চি শর্ট ও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ৫১ বলে ৬৮ রান যোগ করেন। ফিঞ্চকে শিকার করে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ভারতের বাঁ-হাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব। ৪টি চারে ২৩ বলে ২৮ রান করেন ফিঞ্চ।
ফিঞ্চের বিদায়ের পরের ওভারেই থেমে যান শর্টও। ভারতের আরেক বাঁ-হাতি স্পিনারে ক্রুনাল পান্ডিয়ার প্রথম শিকার হন তিনি। ৫টি চারে ২৯ বলে ৩৩ রান করেন শর্ট। ৭৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মিডল-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও বেন ম্যাকডারমট বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। দু’জনকেই থামিয়েছে পান্ডিয়া। ম্যাক্সওয়েল ১৩ করলেও রানের খাতা খুলতে পারেনি ম্যাকডারমট।
৯০ রানে চার উইকেট হারানোর পরও রানের চাকা সচল করার চেষ্টা করেন অস্ট্রেলিয়ার পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। অ্যালেক্স ক্যারি, ক্রিস লিন, মার্কাস স্টোয়িনিস ও নাথান কলটার নাইলের ছোট ছোট ইনিংসে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। ক্যারি ১৯ বলে ২৭, লিন ১০ বলে ১৩, স্টোয়িনিস ১৫ বলে অপরাজিত ২৫ ও নাইল ৭ বলে অপরাজিত ১৩ রান করেন। ভারতের পান্ডিয়া ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেন। এ ভেন্যুতে কোন স্পিনারের এটিই সেরা বোলিং ফিগার।
১৬৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ভারতকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের উপর চড়াও হন তারা। তাই পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে ভারত পায় অর্ধশতকের দেখা। তবে ষষ্ঠ ওভারে বিছিন্ন হতে হয় রোহিত ও ধাওয়ানকে। অস্ট্রেলিয়ার বাঁ-হাতি পেসার মিচেল স্টার্কের বলে লেগ বিফোর হবার আগে ২২ বলে ৪১ রান করেন ধাওয়ান। ৬টি চার ও ২টি ছক্কা দিয়ে নিজের ইনিংসটি সাজান ধাওয়ান।
ধাওয়ানের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর থামতে হয় রোহিতকেও। অস্ট্রেলিয়ার ডান-হতি লেগ স্পিনার এডাম জাম্পার দুর্দান্ত একে ডেলিভারিতে বোল্ড হন রোহিত। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৬ বলে ২৩ রান করেন তিনি।
৬৭ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপ অনুভব করে ভারত। সেখান থেকে জুটি বেধে ভারতকে চাপ মুক্ত করার চেষ্টা করেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। পাশাাপাশি রান তোলার গতিও ধরে রাখেন তারা। তবে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি রাহুল। ২০ বলে ১৪ রান করে থামেন তিনি। কোহলির সাথে জুটিতে ৪১ রান ছিল রাহুলের।
এরপর ক্রিজে গিয়ে এক বলের বেশি খেলতে পারেননি উইকেটরক্ষক ঋসভ পান্থ। ফলে ১০৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় ভারত। তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৩৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬০ রান করে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন কোহলি ও দিনেশ কার্তিক। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ বলে অপরাজিত ৬১ রান করেন কোহলি। ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৮ বলে অপরাজিত ২২ রান করেন কার্তিক। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ভারতের পান্ডিয়া ও সিরিজ সেরা হন ধাওয়ান।
টি-২০ লড়াই শেষে এবার চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডিলেডে ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে প্রথম টেস্ট।