স্পোর্টসমেইল২৪
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নবম আসরের ব্লকবাস্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে টুর্নামেন্টের দুই অপরাজিত দল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত। রোহিত শর্মারা দ্বিতীয় বারের মতো ফাইনালে উঠলেও আইসিসি বিশ্বকাপ ইভেন্টে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেছে প্রোটিয়ারা।
প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ ইভেন্টের ফাইনালে ওঠেই বাজিমাত করতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতের চোখ দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তোলা। এখন দেখার বিষয় কাদের হাতে ওঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নবম শিরোপা। বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে বাংলাদেশ সময় শনিবার (২৯ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
গ্রুপ পর্বে ৪ ও সুপার এইটে ৩ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে সেমিতে উঠলেও চিন্তার ভাঁজ কপালে ছিল প্রোটিয়াদের। কারণ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মোট সাতবার বিশ্বকাপের সেমি থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের।
সেমি সেই খড়া কাটিয়ে উঠতে পারে ‘চোকার্স’ খ্যাত দলটি। টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে বোলারদের অসাধারন নৈপুন্যে আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে প্রোটিয়ারা। সেমি-ফাইনালের অনেকটা সহজ জয় ফাইনালের আগে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে।
ফাইনাল নিয়ে দলের অধিনায়ক আইডেন মার্করাম বলেন, “ফাইনালে খেলার সুযোগ পাওয়া বিশাল অর্জন। আমরা যখন বিশ্বকাপের জন্য আসি, শুধুমাত্র ফাইনালে খেলতে আসিনি। আমরা অন্য সব দলের মতো ফাইনাল জিততে এসেছি।”
তিনি বলেন, “সাদা বলের দুই ফরম্যাটে দীর্ঘদিন ধরেই একসাথে খেলছে এ দলটি। ফাইনালে উঠতে পারাটা দারুণ। আমরা বিশ্বের যেকোন দলের সাথেই লড়াই করতে পারি ও শিরোপা জিততে পারি বলে আমরা বিশ্বাস করি। সেই সুযোগ এখন সামনে আসায় ভালো লাগছে।”
দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বিশ্বকাপে অপরাজিত দল ভারতও। তবে গ্রুপ ও সুপার এইট পর্বে একটি জয় কম পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া। কারণ গ্রুপ পর্বে কানাডার বিপক্ষে ভারতের ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। ফলে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা ৮টি ও ভারত ৭টি ম্যাচে জিতেছে।
ভরাতের ব্যাটার-বোলাররা নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলছে। ফলে তৃতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ভারত। এর আগে ২০০৭ ও ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল উপমহাদেশের দলটি।
২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলেও ২০১৪ সালের ফাইনালে হেরে যায় ভারত। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল টিম ইন্ডিয়া। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপে টান-টান উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো ভারত।
ফাইনালের আগে অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, “আমাদের সামনে ২০০৭ সালের সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনার সুর্বণ সুযোগ। ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে মুখিয়ে আছে দলের সবাই। ওই আসরের দলে আমি ছিলাম। আশা করছি আবারও শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে উঠতে পারবো আমরা।”
প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে রোহিত বলেন, “দল হিসাবে আমাদের খুব শান্ত থাকতে হবে। কারণ, মাথা ঠান্ডা থাকলে ও চাপ না নিলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। ফাইনালে জিততে হলে ভাল ক্রিকেট খেলা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। আমরা এবার আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছি। ফাইনালে একই পরিকল্পনায় খেলতে চাই।”
ভারত দল
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া, যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পান্থ (উইকেটরক্ষক), সঞ্জু স্যামসন, শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্রা চাহাল, আর্শদীপ সিং, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল
আইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), অটনিল বার্টম্যান, জেরাল্ড কোয়েৎজি, কুইন্টন ডি কক, বিজর্ন ফরচুইন, রেজা হেনড্রিক্স, মার্কো জানসেন, হেনরিচ ক্লাসেন, কেশব মহারাজ, ডেভিড মিলার, এনরিচ নর্টি, কাগিসো রাবাদা, রায়ান রিকেলটন, তাবরাইজ শামসি, ট্রিস্টান স্টাবস।