সিরিজ হারের লজ্জার পর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটে হারালো বাংলাদেশ। মোস্তাফিজের রেকর্ড বোলিংয়ের পর তানজিদ হাসান তামিম ও সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটিতেই জয় তুলে নেয় টাইগাররা। এ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে শেষ হলো।
হোয়াইটওয়াশ এড়াতে ১০৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লেতে ৪৮ রান যোগ করেন দু’জনে। ১১তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তানজিদ। এ জন্য ৩৮ বল খেলেছেন তিনি।
এরপর ১১তম ওভারের চতুর্থ বলেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন তানজিদ ও সৌম্য। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় তানজিদ ৪২ বলে অপরাজিত ৫৮ এবং ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৮ বলে অনবদ্য ৪৩ রান করেন সৌম্য।
যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারালো বাংলাদে। যা নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথম কোন দলকে ১০ উইকেটে হারালো টাইগাররা। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে- ৫ উইকেট ও ৬ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
শনিবার (২৫ মে) টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে মোস্তাফিজের তোপে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১০৪ রান করে যুক্তরাষ্ট্র। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১০ রানে ৬ উইকেট নেন মোস্তাফিজ। ৯৬ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই সেরা বোলিং ফিগার ফিজের। জবাবে ১১.৪ ওভারে বিনা উইকেটে ১০৮ রান করে বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে নেমে ৪.৫ ওভারে ৪৬ রান তুলেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর ও অ্যান্ড্রিস গাউস। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের করা চতুর্থ ওভারে ৪টি চারে ১৭ রান নেন গাউস। পঞ্চম ওভারে প্রথম বল করতে এসে ১টি করে চার-ছক্কা হজম করেন সাকিব আল হাসান।
ওভারের শেষ বলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বোধনী ভাঙেন সাকিব। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৫ বলে ২৭ রান করা গাউসকে শিকার করেন তিনি। এ শিকারের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৭শ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব।
সাকিবের ব্রেক-থ্রুর পর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটারদের চেপে ধরে বাংলাদেশের অন্য বোলাররা। ১৪ রানের ব্যবধানে পরের ৪ উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ, রিশাদ ও তানজিম। জাহাঙ্গীরকে ১৮ ও নীতীশ কুমারকে ৩ রানে আউট করেন ফিজ। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অ্যারন জোন্সকে ২ রানে বিদায় দেন তানজিম। মিলিন্দ কুমারকে ৭ রানে থামিয়ে দেন রিশাদ।
৪৬ রানের সূচনার পর ৬০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। ষষ্ঠ উইকেটে ৩১ বলে ৩২ রানের জুটি গড়ে যুক্তরাষ্ট্রকে লড়াইয়ে ফেরান নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার কোরি অ্যান্ডারসন ও শ্যাডলি ভ্যান শালকউইক।
১৮তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াকু সংগ্রহের সম্ভাবনা শেষ করে দেন মুস্তাফিজ। শ্যাডলিকে ১২ রানে এবং অ্যান্ডারসনকে ১৮ রানে বোল্ড করেন ফিজ। ইনিংসের শেষ ওভারে মুস্তাফিজ আরও ২ উইকেট শিকার করলে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১০৪ রানে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংস।
বাংলাদেশের মোস্তাফিজ ১০ রানে ৬ উইকেট নেন। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। তার আগের সেরা বোলিং ছিল ২০১৬ সালে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ওই আসরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন ফিজ।