সাকিব-মোস্তাফিজের বলে হারের লজ্জা থেকে বাঁচলো বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৯:৫৬ পিএম, ১০ মে ২০২৪
সাকিব-মোস্তাফিজের বলে হারের লজ্জা থেকে বাঁচলো বাংলাদেশ

ব্যাট হাতে হতাশ করলেও বল হাতে ‍পুষিয়ে দিলেন সাকিব আল হাসান। দীর্ঘ দিন পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার উইকেট শিকার করে বাংলাদেশকে হারের লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন। সাকিবের ফেরার দিনে আইপিএল খেলে আসা মোস্তাফিজুর রহমানও বল হাতে ৩ উইকেট শিকার করেছেন।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম পর্বে সিরিজ জয় নিশ্চিত করার পর ঢাকার প্রথম ম্যাচেও জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ১৪৩ রানের সংগ্রহ গড়ে মাত্র ৫ রানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা।

শুক্রবার (১০ মে) মিরপুরে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ১ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ১৪৩ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে তানজিদ হাসান তামিম ৫২ এবং সৌম্য সরকার ৪১ রান করেন।

ওপেনার তানজিদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৫৭ রান তোলে টাইগাররা। এ সময় তানজিদ ২৭ বলে ৪০ এবং সৌম্য সরকারের রান ছিল ৯ বলে ৬। নবম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ৩৪ বল খেলা তানজিদ।

অর্ধশতকের পর ব্যক্তিগত ৫১ রানে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান তিনি। তবে মাত্র ১ রান যোগ করে ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে পেসার লুক জঙ্গির বলে আউট হন ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৭ বলে ৫২ রান করা তানজিদ।

উদ্বোধনী জুটিতে তানজিদ-সৌম্য ৬৮ বলে ১০১ রান করেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উদ্বোধনী জুটিতে তৃতীয় এবং সব মিলিয়ে সপ্তমবার শতরানের জুটি গড়লো বাংলাদেশ।

তানজিদকে ফেরানোর ওভারেই সৌম্যকে সাজঘরে ফেরত পাঠান জঙ্গি। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৪ বলে ৪১ রান করেন প্রথমবার সিরিজে খেলতে নামা সৌম্য। দলীয় ১০৮ রানে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে সৌম্য ফেরার পর ব্যাটিং ধস নামে বাংলাদেশ ইনিংসে।

দলীয় ১২১ রানে তৃতীয়, ১২২ রানে চতুর্থ, ১২৩ রানে পঞ্চম, ১৩০ রানে ষষ্ঠ ও সপ্তম, ১৩২ রানে অষ্টম, ১৩৮ রানে নবম এবং ১৪৩ রানে শেষ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস।

দুই ওপেনারের ১০১ রানের দুর্দান্ত সূচনার পর ২শ রানের স্বপ্নই দেখা বাংলাদেশ ১৯.৫ ওভারে ১৪৩ রানে অলআউট হয়। দুই ওপেনার বাদে বাংলাদেশের শেষ ৯ ব্যাটারের আটজনই দুই অংকের কোটা স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন। জিম্বাবুয়ে জঙ্গি ৩টি, বেনেট ও এনগারাভা ২টি করে উইকেট নেন।

১৪৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। পেসার তাসকিনের বলে পুল করতে গিয়ে মিড অনে সাকিবকে ক্যাচ দেন রানের খাতা খুলতে না পারা বেনেট। ব্যাটিংয়ে প্রমোশন নিয়ে তিন নম্বরে নেমে ৪টি চার মারেন রাজা। কিন্ত চতুর্থ ওভারে তাসকিনের বলে বোল্ড হন ১০ বলে ১৭ রান করা জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক । দ্বিতীয় উইকেটে মারুমানির সাথে ২৮ রান যোগ করেন রাজা।

নিজের দ্বিতীয় ওভারে জিম্বাবুয়ের শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব। ১৪ রান করা মারুমানিকে লেগ বিফোর আউট করেন সাকিব। দশম ওভারে রিশাদের প্রথম বলে জোনাথন ক্যাম্পবেলের ক্যাচ ফেলেন হৃদয়। এক বল পর মাদান্দেকে ১২ রানে শিকার করেন রিশাদ।

৫৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। তবে পঞ্চম উইকেটে ৩০ বলে ৩৫ রান যোগ করে জিম্বাবুয়েকে লড়াইয়ে রাখেন ক্যাম্পবেল ও রায়ান বার্ল। ১৯ রান করা বার্লকে শিকার করে জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। ২ বল পর জঙ্গিকে ১ রানে আউট করেন ফিজ।

একই ওভারে মোস্তাফিজের জোড়া আঘাতের পর ক্যাম্পবেলকে চিন্তিত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ শিবির। ১৭তম ওভারে তৃতীয়বারের মত আক্রমণে এসে ক্যাম্পবেলকে বিদায় করেন সাকিব। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭ বলে ৩১ রান করেন ক্যাম্পবেল।

দলীয় ১০৩ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর শেষ ২৩ বলে জয়ের জন্য ৪১ রান প্রয়োজন পড়ে জিম্বাবুয়ের। শেষ ২ ওভারে ২১ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ের। ১৯তম ওভারে ৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া মোস্তাফিজ। এতে শেষ ওভারে ১৪ রানের প্রয়োজন পড়ে সফরকারীদের।

শেষ ওভারে প্রথম চার বলে ৮ রান দিয়ে জিম্বাবুয়ের শেষ দুই উইকেট তুলে নেন সাকিব। ২ বল বাকি থাকতে ১৩৮ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের সাকিব ৩৫ রানে ৪টি, মোস্তাফিজ ১৯ রানে ৩টি ও তাসকিন ২০ রানে ২ উইকেট নেন।



শেয়ার করুন :