জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে পরে ব্যাট করে জয় পাওয়া বাংলাদেশ তৃতীয় টি-টোয়েন্টি হারতে বসেছিল! ১৬৫ রানের সংগ্রহ নিয়ে যদিও শেষ পর্যন্ত ৯ রানের জয় তুলে নেয় টাইগাররা। এ জয়ে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৭ মে) টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে তাওহিদ হৃদয় এবং জাকের আলী অনীকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৬৫ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে ৯ উইকেটে ১৫৬ রান করে সফরকারী জিম্বাবুয়ে।
অল্পের জন্য ৯ রানের জয় পায় নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। চট্টগ্রামে একই মাঠে এর আগে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৮ ও ৬ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ।
ব্যাট করতে নেমে প্রথম ৩ ওভারে ২২ রান তোলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও লিটন দাস। চতুর্থ ওভারে দলীয় ২২ রানে বিচ্ছিন্ন তানজিদ-লিটন। ওভারে জিম্বাবুয়ের পেসার পেসার ব্লেসিং মুজারাবানির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডেলিভারিতে স্কুপ শট খেলতে গিয়ে বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি লিটন। তবে চতুর্থ বল ব্যাটে লাগিয়ে বোল্ড হন ১৫ বলে ২টি চারে ১২ রান করা লিটন।
লিটন আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। পঞ্চম ওভারে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজার আর্ম বলে বোল্ড হন নাজমুল(৪)। লিটন-নাজমুলকে হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪২ রান তুলে বাংলাদেশ।
তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেও ৩১ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি তানজিদ ও হৃদয়। নবম ওভারের শেষ বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ আউট হন তানজিদ। ১টি করে চার-ছক্কায় ২২ বলে ২১ রান করেন তিনি।
তানজিদ ফেরার পর হৃদয়ের সাথে জুটি বাঁধেন জাকের। দু’জনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে ১২ ওভার শেষে ৩ উইকেটে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৭৫। ১৩তম ওভার থেকে জিম্বাবুয়ের বোলারদের উপর চড়াও হন হৃদয় ও জাকের। ১৩ থেকে ১৮তম ওভারে ৬৭ রান যোগ করেন তারা।
১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে মুজারাবানির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৮ বলে ৫৭ রান করেন হৃদয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৮৭ রানের জুটি গড়েন হৃদয়-জাকের। আগেরটি ছিল মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ২০১৯ সালে এই ভেন্যুতেই চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৭৮ রান যোগ করেছিলেন তারা।
হৃদয় ফেরার এক বল পর জাকেরকেও বোল্ড করেন মুজারাবানি। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৪ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। এরপর ইনিংসের শেষ ৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৭ রান তোলেন মাহমুদউল্লাহ ও রিশাদ হোসেন। এতে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
শেষ ৭ ওভারে ৯০ রান তুলেছে টাইগাররা। মাহমুদউল্লাহ ২টি চারে ৯ এবং রিশাদ ১টি বাউন্ডারিতে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন। জিম্বাবুয়ের মুজারাবানি ক্যারিয়ার সেরা ১৪ রানে ৩ উইকেট নেন।
১৬৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে তৃতীয় ওভারে উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। নিজের প্রথম ওভারেই জিম্বাবুয়ে ওপেনার জয়লর্ড গাম্বিকে ৯ রানে আউট করেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। পঞ্চম ওভারে উইকেট শিকারে মাতেন তানজিম হাসান। নিজের বলে নিজে ক্যাচ নিয়ে ব্রায়ান বেনেটকে ৫ রানে আউট করেন তানজিদ।
পাওয়ার প্লের শেষ বলে ৭ রান করা ক্রেইগ আরভিনের উইকেট উপড়ে ফেলেন সাইফুদ্দিন। এতে পাওয়ার প্লেতে ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। অষ্টম ওভারে দলীয় ৪৮ রানে জিম্বাবুয়ের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন স্পিনার রিশাদ। সিকান্দার রাজাকে ১ রানে থামান তিনি।
পঞ্চম উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি ও ক্লাইভ মাদান্দে। তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান ২১ মাস পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বোলিংয়ে আসা মাহমুদুল্লাহ। ৩১ রান করা মারুমানিকে শিকার করেন মাহমুদউল্লাহ।
কিছুক্ষণ পড়ে মাদান্দেকে ১১ রানে আউট করেন তাসকিন। ৭৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর বাংলাদেশ বোলারদের উপর চড়াও হন জোনাথন ক্যাম্পেবেল। ২টি করে চার-ছক্কায় ১০ বলে ২১ রান তুলে স্পিনার তানভীরের শিকার হন তিনি।
জঙ্গিকে ২ রানে আউট করে জিম্বাবুয়েকে হারের মুখে ঠেলে দেন রিশাদ। ৯১ রানে ৮ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তবে নবম উইকেটে ৩০ বলে ৫৪ রান তুলে জিম্বাবুয়েকে লড়াইয়ে ফেরান মাসাকাদজা ও ফারাজ। শেষ ওভারে ২১ রানের প্রয়োজন পূরণ করতে না পারলে ম্যাচ হারে জিম্বাবুয়ে। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৬ রান করে জিম্বাবুয়ে।
মাসাকাদজা ১৩, ফারাজ ২টি করে চার-ছক্কায় ১৯ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেন । বাংলাদেশের সাইফুদ্দিন ৪২ রানে ৩ ও রিশাদ ৩৮ রানে ২ উইকেট নেন।