টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সমান পয়েন্ট নিয়েও সেমি-ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো ইংল্যান্ড। অন্যদিকে, সমান পয়েন্ট নিয়েও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘটলো স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার। এর আগে গ্রুপ-১ থেকে প্রথম দল হিসেবে সেমিতে খেলা নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড।
শনিবার (৫ নভেম্বর) গ্রুপ-১-এর সুপার টুয়েলভে নিজেদের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। ইংলিশদের এ জয়ে সুপার টুয়েলভ থেকে সমান পয়েন্ট অর্জন করলেও রান রেটে পিছিয়ে থেকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে।
গ্রুপ-১-এর সব খেলা শেষে সমান ৭ করে পয়েন্ট নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে টেবিলের শীর্ষ দু’টি দল সেমি-ফাইনালে নিশ্চিত করলো। নিউজিল্যান্ডের রান রেট ২.১১৩ এবং ইংল্যান্ডের ০.৪৭৩। আর সমান ৭ পয়েন্ট থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার রান রেট -০.১৭৩। এছাড়া এ গ্রুপে এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ৪, আয়ারল্যান্ড ৩ ও আফগানিস্তান ২ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করছে।
জিতলেই সেমি-ফাইনাল- এমন সমীকরণে গ্রুপের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলঙ্কা। শুরুতেই ইংল্যান্ডের বোলিংকে চাপে ফেলেন লঙ্কার দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস।
৪ ওভারে ৩৯ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১৪ বলে ১৮ রান করা মেন্ডিসকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার ক্রিস ওকস।
সতীর্থ ফিরলেও পাওয়ার-প্লের শেষ ওভারে ১৩ রান তুলেন নিশাঙ্কা। এতে ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫২ রান পায় শ্রীলঙ্কা।
পাওয়ার-প্লে শেষে রানের গতি কমে যাওয়ায় ১২ ওভার শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৮৯ রান। নবম ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাশিকার হন ৯ স্যাম কারানের। ১১তম ওভারে চারিথা আসালঙ্কাকে বিদায় দেন বেন স্টোকস। ৮ রান করেন আসালঙ্কা।
মিডল-অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও অন্যপ্রান্তে ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে একাই লড়েছেন নিশাঙ্কা। ১২তম ওভারের শেষ বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন লঙ্কান এ ব্যাটার। এ জন্য ৩৩ বল খেলেন নিশাঙ্কা।
দুই ওপেনারের দুর্দান্ত শুরুর পরও ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪১ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় শ্রীলঙ্কা। ইংল্যান্ডের উড ৩ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট নেন। ৪ ওভারে ১৬ রানে ১ উইকেট নেন রশিদ।
সেমি-ফাইনাল নিশ্চিতে ১৪২ রানের টার্গেট পাওয়া ইংল্যন্ডকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার অধিনায়ক জশ বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। পাওয়ার প্লেতে ৭০ রান তুলেন বাটলার ও হেলস। এ সময় দু’জনে ৯টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। হেলস ১৯ বলে ৪২ ও বাটলার ১৮ বলে ২৫ রান করেন। পেসার কাসুন রাজিথার করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ২০ রান নেন হেলস।
অষ্টম ওভারে দলীয় ৭৫ রানে হেলস-বাটলার জুটি ভাঙেন হাসারাঙ্গা। ডিপ মিড-উইকেটে বাটলারের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন করুনারত্নে। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ রান করেন বাটলার।
দলীয় ৮২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মিডল-অর্ডারে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ৫ উইকেটে ১১১ রানে পরিণত হয় ইংল্যান্ড। হ্যারি ব্রুক-লিয়াম লিভিংস্টোন ৪ করে ও মঈন আলি ১ রানে আউট হন। ষষ্ঠ উইকেটে কারানকে নিয়ে ২১ বলে ১৮ রান তুলে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথে রাখেন তিন নম্বরে নামা বেন স্টোকস।
কারানকে আউট করে জুটি ভেঙে ইংল্যান্ডকে চিন্তায় ফেলে দেন পেসার লাহিরু কুমারা। কারণ, শেষ ২ ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ১৩ রান দরকার পড়ে ইংল্যান্ডের।
তবে ১৯তম ওভারে ৮ রান নেন স্টোকস ও ওকস। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ব্যাক-ওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করে দলকে সেমিতে তোলেন ওকস।
২টি চারে ৩৬ বলে অনবদ্য ৪২ রান করে দলের জয়ে অবদান রাখেন স্টোকস। ৫ রানে অপরাজিত থাকেন ওকস। ২টি করে উইকেট নেন কুমারা-হাসারাঙ্গা ও ধনাঞ্জয়া। ম্যাচ সেরা হয়েছেন রশিদ।