চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোমঞ্চকর এক আফসেটের জন্ম দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। পার্থে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানকে তারা মাত্র এক রানে হারিয়ে দিয়েছে। ফলে শিরোপা জয়ের প্রত্যাশায় থাকা পাকিস্তানের পথটিই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। বাবর আজমদের এখন সেমি-ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সুপার টুয়েলভ পর্বে দুটি ম্যাচে অংশ নিয়ে দুটিতেই পরাজিত হয়েছে পাকিস্তান। দুই ম্যাচের ফলাফলই নির্ধারিত হয়েছে শেষ বলের নাটকীয়তায়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবারের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটিতে এমন ঘটনা ঘটেছে একেবারেই কম রানের টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে।
জিম্বাবুয়ের ৮ উইকেটে ১৩০ রানের জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান করতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। শিরোপা প্রত্যাশী দলের কাছে এমন ঘটনায় আবেগে ভেঙে পড়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট পরিবার। এমনকি নিজেদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সক্রিয় হয়ে ওঠেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের এমন পরাজয়ে হতাশা ব্যক্ত করার পাশাপাশি টিম নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তোলেছেন তারা। আবার কেউ কেউ এ পরাজয়কে দুঃখজনক হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।
হেরে যাওয়া ম্যাচটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শোয়েব আখতার অধিনায়ক বাবর আজমকে বাজে নেতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একই সাথে দলীয় কৌশল নিয়েও সমালোচনা করেছেন তিনি।
ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে তিনি বলেন, “আমি জানি না কেন আপনারা বিষয়টি বুঝতে পারছেন না। আমি আগেও বলেছি , এখন আবারও বলছি যে, আমাদের টপ অর্ডার এবং মিডল অর্ডারকে নিয়ে বড় সফলতা অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু আমরা ধারাবাহিক ভাবে জয় পাচ্ছি না। কারণ, পাকিস্তান দলের রয়েছে একজন বাজে অধিনায়ক। পাকিস্তান বিশ্বকাপের বাইরে চলে গেছে। যে তিনটি ম্যাচে নাওয়াজ শেষ ওভারে বল করেছে সেগুলোতে আমরা হেরে গেছি।”
বাবরের ব্যাটিং অর্ডারসহ পাকিস্তান দলের যে সব বিষয়গুলোতে পরিবর্তন করতে হবে তারও একটি ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন তিনি। শোয়েব বলেন, “বাবরের উচিৎ ওয়ানডাউনে ব্যাট করা। শাহীন শাহ আফ্রিদির ফিটনেসে বড় ত্রুটি রয়েছে। ত্রুটি আছে নেতৃত্বে। সবচেয়ে বড় ত্রুটিটি রয়েছে দল ব্যবস্থাপনায়। আমরা আপনাকে সমর্থন দিব, কিন্তু কোন ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছেন আপনি? আপনি হেঁটে হেঁটেই একটি টুর্নামেন্টে ঢুকে যেতে পারেন না এবং এটি আশা করতে পারেন না যে, প্রতিপক্ষ আপনাকে জিততে দিবে।”
শহিদ আফ্রিদি বলেছেন, “আমি এ ফলকে আপসেট বলতে পারছি না। আপনি যদি ম্যাচটি দেখে থাকেন তাহলে জানেন জিম্বাবুয়ে ১ম বল থেকেই সেরা ক্রিকেট খেলেছে। তারা দেখিয়ে দিয়েছে ব্যাটিং পিচেও কিভাবে স্বল্প পুঁজিকে রক্ষা করতে হয়। ম্যাচ জয়ী জিম্বাবুয়েকে অভিনন্দন। আপনারা আবেগের পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করেছেন।”
কামরান আকমল বলেছেন, “আপনারা (জিম্বাবুয়ে) এ বিজয় উৎসবের দাবীদার, দারুণ খেলেছেন। যেভাবে ১৩০ রানের পুঁজিকে রক্ষা করেছেন, তা এক কথায় দুর্দান্ত। অভিনন্দন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট ও সিকান্দার রাজাকে। আর পাকিস্তানের জন্য এক কথায় বলতে চাই হতাশ।”
মোহাম্মদ আমির বলেছেন, “প্রথম থেকেই আমি বলেছি, খারাপ নির্বাচন। এখন এর দায় কে নিবে? আমার মনে হয় তথাকথিত চেয়ারম্যান এবং তথাকথিত প্রধান নির্বাচকের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সময় এসেছে।”
পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে এখন সেমি-ফাইনালে খেলতে গ্রুপের বাকি তিনটি ম্যাচেই জয় পেতে হবে। এর কোন ব্যতিক্রম হলেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়তে হবে। গ্রুপে এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই জয় তুলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভারত।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস