সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও সেই একই রোগ বাংলাদেশ দলে! ছন্নছাড়া ব্যাটিং, এলেমেলো বোলিংয়ের সাথে ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ মিসের মহড়া। তিন বিভাগেই বাজে ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশকে অবশ্য এসবের মাশুল দিতে হয়নি, তবে কানের পাশ দিয়ে গুলি বেরিয়ে গেছে এটা বলাই যায়। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টাইগারদের জয় এসেছে সাত রানের ব্যবধানে।
ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড যাওয়ার আগে আরব আমিরাতে ক্যাম্প করছে বাংলাদেশ। এ সময় স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজও খেলবে বাংলাদেশ। যার প্রথম ম্যাচে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ।
টস হেরে এদিন প্রথমে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সফল হওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকেই ওপেনিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। সেদিনের মতো এদিনও ব্যর্থ সাব্বির, দলীয় ১১ রানে ফেরেন শূন্য হাতে।
চোট কাটিয়ে লম্বা সময় পর ফেরা লিটন তিন নম্বরে নেমে শুরু থেকে বেশ সাবলীল ছিলেন। তবে থিতু হতে পারেননি আট বলে ১৩ রানে ফিরে যান তিনি।
এরপর দলীয় ৩৫ রানে মিরাজ ফেরার পর ৪৭ রানে ফিরে যান চোট কাটিয়ে এই সিরিজে দলে ফেরা ইয়াসীর আলীও! দলের রান পঞ্চাশ হওয়ার আগেই চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে টাইগাররা।
এরপর মোসাদ্দেককে ৩০ রানের জুটি গড়েন আফিফ। যদিও জুটিতে মোসাদ্দেকের অবদান নেই বললেই চলে। উল্টো দলীয় ৭৭ রানে ফিরে দলের উপর আরও চাপ বাড়ান তিনি।
এরপর আর উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। নিজের ৫০তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের বিপদে আরও একবার হেসেছে আফিফ হোসাইন ধ্রুবর ব্যাট। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫৫ বলে সাত চার ও তিন ছক্কায় ৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে শুরুতে রান করতে হিমশিম খেলেও ২৫ বলে ৩৫ রানের ইনিংস আসে সোহানের ব্যাট থাকে। এই দু’জনের ৮১ রানের জুটিতে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা।
রান তাড়া করতে নেমে বেশ ভালো শুরু পায় স্বাগতিকরা। দুই ওপেনার মিলে প্রথম তিন ওভারে ২৪ রান তোলেন। পঞ্চম ওভারে স্বাগতিক ওপেনার আরব আমিরাত ব্যাটার চিরাগ সুরির শট বোলার শরিফুলের হাতে লেগে ননস্ট্রাইক উইকেট ভেঙে দিলে রান আউট হন মোহাম্মদ ওয়াসিম।
ষষ্ট ওভারে মোস্তাফিজকে পরপর চার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাওয়ার প্লে’র শেষটা দুর্দান্ত করে আরব আমিরাত। দলীয় ৬৬ রানে চিরাগ আউট হওয়ার পরই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। এক মিরাজ নিজে বোলিং করে উইকেট নিয়ে, ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরে খেলায় ফেরান বাংলাদেশকে।
৩৬ রানের ব্যবধানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে এক পর্যায়ে সাত উইকেটে ১০২ রান হয়ে যায় স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ড। তবে এতেও ভড়কে যায়নি তারা। শেষদিকে দুর্দান্ত লড়াই করেছেন আমিরাতের লেজের ব্যাটারা।
তবে তাদের লড়াইয়ের পিছনে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতেরও ভূমিকা রয়েছে। একের পর এক সহজ ক্যাচ মিস করে প্রতিপক্ষের হাতেই প্রায় ম্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তারা।
ক্যাচ মিসের মহড়া ও এলোমেলো বোলিংয়ে একটু এদিক ওদিক হলেই কাল হারের স্বাদ পেতে হতো টাইগারদের। শেষ ওভারে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ১১ রানের।
প্রথম দুই রান হওয়ার পর দ্বিতীয় বলে সাইফুদ্দিন যে ক্যাচটা ফেলেছেন সেটা বোধহয় স্কুল ক্রিকেটেও হয়তো কেউ মিস করবে না। এরপর তৃতীয় ও চতুর্থ বলে টানা দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করেন শরিফুল।
সিরিজের শেষ ম্যাচে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) একই মাঠে স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামবে সোহানের দল।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি