টানা ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া বাংলাদেশকে জাগিয়ে তুলতে জিম্বাবুয়ে তারুণ্য নির্ভর দল পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজে কাঙ্ক্ষিত সেই জয় পেলেন না তরুণরা। এক এক জয়ে সমতায় থাকা সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরে গেল ১০ রানে। এ হারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারের লজ্জা পেল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ১৫৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না বাংলাদেশের। মুনিম শাহরিয়ারের বদলি পারভেজ হোসেন ইমন নিজের অভিষেক ম্যাচে ছিলেন নিষ্প্রভ। প্রথম দুই ম্যাচে ভালো শুরু পাওয়া লিটন কুমার দাসও (৬ বলে ১৩) ছিলেন নিজের ছায়ায়।
প্রথম দুই ম্যাচে সমালোচিত ব্যাটিং করা এনামুল হক বিজয় (১৩ বলে ১৪) এ দিনও নিজের ছায়া থেকে বের হতে পারেননি। ৩৪ রানে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশকে পথের দিশা দেখানোর দায়িত্বটা নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নাজমুল হাসান শান্ত।
দায়িত্ব নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখলেও হু হু করে বাড়তে থাকে রানরেট। ২০ বলে ১৬ রান করে ফেরেন শান্ত। এরপর আফিফকে নিয়ে ব্যাট করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে আফিফের চেষ্টা বারবারই ঢাকা পড়েছে ‘বিশ্রাম’ ফেরা রিয়াদের ব্যাটিংয়ে।
দলীয় ৯৯ রানে ব্যক্তিগত ২৭ বলে ২৭ রান করে সাজঘরে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরের বলেই খালি হাতে ফিরেন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেন। দু’জনকেই প্যাভিলিয়নে ফেরান পেসার ব্রাড ইভান্স।
পর পর দুই উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের জয়ের বন্দরে নোঙর করার দায়িত্ব নেন মাহেদি হাসান ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে ১৭ বলে ২২ রান করে ফেরেন মাহেদি। দলকে জয় থেকে ২৪ রান দূরে রেখেই ফেরেন তিনি।
এরপর একা আফিফ দলকে আর টানতে পারেননি। তার ২৭ বলে ৩৯ রান সত্ত্বেও বাংলাদেশে ১০ রানের হারের তিক্ত স্বাদ পায়। এ ম্যাচে হারের ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের লজ্জা পেল বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে রায়ান বার্ল ও লুক জোঙ্গের ৩১ বলে ৭৯ রানের ঝড়ো জুটিতে ১৫৬ রানের পুঁজি তোলে জিম্বাবুয়ে। তার আগে স্কোরবোর্ডে ৬৭ রান তুলতেই স্বাগতিকরা হারিয়েছিল ৬ উইকেট।
রায়ান বার্লের ২৮ বলে ৫৪ ও লুক জোঙ্গের ২০ বলে ৩৫ রান করে দলকে ১৫৬ রানের পুঁজি দাঁড় করায় জিম্বাবুয়ে। আগের দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থাকা সিকান্দার রাজা অবশ্য গোল্ডেন ডাকের শিকার হয়েছেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বল হাতে দুটি করে উইকেট শিকার করেন মাহেদি হাসান ও হাসান মাহমুদ। তবে ইনিংসের ১৫তম ওভারে ৩৪ রান দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশি বোলাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার আরেক লজ্জার রেকর্ড গড়েছেন নাসুম আহমেদ।
জিম্বাবুয়ে সফরের আগে বিসিবি জানিয়েছিল, এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে দলের সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে নিতেই তরুণদের উপর ভরসা রাখছে। তবে সেই ভরসার প্রতিদান খুব একটা ভালো পেল না বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে বাজে বোলিংয়ের পর শেষ টি-টোয়েন্টিতেও দেখা মিললো বাজে ব্যাটিংয়ের।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর/আরএস