টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের রান তুলতে না পারার ব্যর্থতার গল্প বহু পুরোনো। অন্য দলগুলোতে পাওয়ার হিটারের দেখা মিললেও বাংলাদেশ দলে এমন কেউ। বাংলাদেশিদের জন্য বিষয়টি কঠিন, সেই কথা বহুবার বহুজন সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছেন। এবার একই কাজটি করলেন স্পিনার শেখ মাহেদি হাসান।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রান তোলার মূলমন্ত্র যত পারো বাউন্ডারি হাঁকাও। সেই পথে এখনো নাম লেখাতে পারেননি বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। শেখ মাহেদি হাসানের মতে বাংলদেশিদের পক্ষে আন্দ্রে রাসেল কিংবা কাইরন পোলার্ডের মতো পাওয়ার হিটার হওয়া সম্ভব নয়।
মাহেদির ভাষ্য, “দেখেন আমরা বাংলাদেশি। কেউই আসলে পাওয়ার হিটার না। কেউ চাইলে আন্দ্রে রাসেল বা পোলার্ড হইতে পারবো না। অ্যাবিলিটির ভিতর থেকে যতটুকু উন্নতি করা যায়।”
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত সদস্য শেখ মাহেদি। বেশিরভাগ সময় ইনিংসের শেষ দিকেই ব্যাটিংয়ে নামেন এই ক্রিকেটার। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজেও খুব বেশি ছক্কা হাকাতে না পারা এই ক্রিকেটার দিয়েছেন রান করার টোটকা।
বলেন, “দেখেন ওইখানে (ইনিংসের শেষদিকে) এমন একটা সিচুয়েশন থাকে। আমি চাইলেই কিন্তু প্রথম বলে ছয় মারতে পারবো না। একটু হিসাব-নিকাশ করে খেলতে হবে। যদি ছক্কা মারতে না পারি, তাহলে এক-দুই, বাউন্ডারি দিয়ে কাভার করতে হবে।”
আরও পড়ুন- ‘স্বপ্ন দেখি এশিয়া কাপ জিতবো, বিশ্বকাপ জিতবো’
অবশ্য পরিস্থিতি একটু কঠিন হলে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হবে বলেও জানান মাহেদি। তার মতে, “মাঝে মাঝে দেখা যায়, দুই বলে ১০ বা দুই বলে ১২ লাগে, তখন হিসাব আলাদা। অবশ্যই আপনি ওই জিনিসটার (ছক্কা) উপরেই যাবেন। আমার সামর্থ্যের ভিতরে যতটুকু পারবো চেষ্টা করবো।”
আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ দলের সাথে থাকবেন না পঞ্চ পান্ডবের কেউ। তাদেরকে ছাড়া সিরিজ খেলতে নামা বাংলাদেশ দল কেমন করবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। পঞ্চ পান্ডবদের ছাড়া টি-টোয়েন্টি খেলতে নামার আগে তাদের কাছ থেকে কি পরামর্শ নিয়েছেন মাহেদি? সেটিও খোলাসা করেছেন তিনি।
মাহেদি বলেন, “দেখেন উন্নতির তো শেষ নাই। শেষ ছয় মাস বলেন, আমরা কিন্তু তেমন ভালো করতে পারতেছি না। এই জিনিসটাতে (টি-টোয়েন্টি) কিভাবে উন্নতি করা যায়, সেটা নিয়েই কথা হইতেছিল আরকি। যেহেতু ওডিআইতে আমরা ভালো করতেছি আলহামদুল্লিলাহ। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনেক পিছিয়ে আছি। এই জায়গাতে যতটুকু মোটিভেশন দরকার…. তারা তো সব সময় মোটিভেট সবসময় করে। কাজটা তো আসলে আমাদের করতে হয়। যার যার রোল থেকে যতুটুকু স্কিল উন্নতি করতে পারে… সেটা সে ম্যাচে শো করতে পারবে।”
জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর এশিয়া কাপ হয়ে বাংলাদেশ দলের মিশন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্ব আসরে লক্ষ্য কি ঠিক করেছেন সেটাও সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন মাহেদি হাসান।
বলেন, “এখানে যার যার পার্সোনাল গোল সবারই থাকে। টিম ওয়াইজ সবার মাঠে খেলতে হয় কিন্তু। সবাই ম্যাচের আগে চিন্তা করবো কি খেলবো না খেলবো। সেটা সবার পার্সোনাল গোল। কিন্তু ম্যাচের উপর ভিন্ন ডিফারেন্ট সিচুয়েশন তৈরি হয়, ডিফারেন্ট প্ল্যান তৈরি হয়, ডিফারেন্ট থিওরি তৈরি হয়। এখানে যে ইনস্ট্যান্ট প্লান তৈরি হয়, যে এক্সিকিউট করতে পারবে, তার জন্য ভালো।”
জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ দলে থাকবেন না কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার। তাদের অভাব উপলব্ধি করবেন তাও জানিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তবে এই সিরিজকেই তরুণদের নিজেকে প্রমাণের মঞ্চও ভাবছেন মাহেদি।
বলেন, “লাস্ট সিরিজগুলোতে সাকিব ভাই-মুশফিক ভাই-রিয়াদ ভাই থাকলে বলতো এই বোলারকে এই বল কর কিংবা এইভাবে বল কর, কিন্তু এই সিরিজ থেকে হয়তো কেউ বলবে না। এই সিরিজ থেকে সবার নিজেরটা নিজের করতে হবে। এটা গুড সাইন যে, এখন যারা ম্যাক্সিমাম খেলতেছে, সবাই দুই বছর খেলে ফেলেছে। সবাই নিজেরটা নিজে ইউটিলাইজ করতে পারবে। এই সিরিজ থেকে আশা করা যায়।”
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর