লাল বলের হতাশা ঝেড়ে এবার সাদা বলের ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। টেস্টের তুলনায় বাকি দুই ফরম্যাটে ধারাবাহিক বাংলাদেশের কাছে সমর্থকদের প্রত্যাশাও বেশি। সেন্ট লুসিয়ায় প্রথম অনুশীলন শেষে তাসকিন বললেন, বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে জয়ের জন্যই খেলবে।
টেস্টে খারাপ করলেও সেটা নিয়ে বসে থাকা যাবে না। বরং টেস্টে যে ভুল হয়েছে সেগুলো শুধরানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরী বলে মনে করেন তাসকিন। বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত শেষ যে সিরিজটা (টেস্ট), আমাদের ভালো যায়নি। এখন সামনে আমাদের একটা টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে, এর পরেই একটা ওয়ানডে সিরিজ। তো, যে ভুলগুলো হয়েছে সেগুলো নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করতে হবে। এখন বসে থাকা যাবে না কারণ, সামনে অন্য ফরম্যাটের খেলা আছে।”
২০১৮ সালের সফরে টেস্ট ক্রিকেটে হোয়াইটওয়াশ হলেও বাকি দুই ফরম্যাটে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এবারও টেস্ট ক্রিকেট হারলেও বাকি দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশ ভালো করবে বলেই আশা করছেন সবাই। তাসকিনও বললেন তারা জয়ের জন্যই মাঠে নামবেন।
তাসকিন বলেন, “অবশ্যই আমরা সামনে যে টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে সেদিকেই তাকিয়ে, টি-টোয়েন্টি নিয়েই পরিকল্পনা করবো আমরা সবাই। চাইবো ভালো করতে। দেশকে জয় উপহার দিতে। উইন্ডিজ শক্তিশালী প্রত্যেকটি ম্যাচ বা সিরিজ গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু সামনে এশিয়া কাপ আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। যেহেতু বড় ইভেন্টের খেলা আছে সেহেতু প্রত্যেকটা ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই জয়ের জন্যই খেলবো।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা সম্ভব, মত সাকিবের
সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর থেকেই মাঠে বাইরে ছিলেন তাসকিন আহমেদ। অবশেষে চোট কাটিয়ে তিন মাস পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়েই ক্রিকেটে ফিরছেন এই ডানহাতি পেসার।
প্রথম দিনের অনুশীলন নিয়ে তিনি বলেন, “আল্লাহর রহমতে খুবই ভালো লাগলো যে প্রায় তিন মাস পর দলের সঙ্গে পুরোপুরি একটা অনুশীলন সেশন করলাম। ফিন্ডিং, বোলিং ব্যাটিং সবকিছুই করলাম। শুরুতে একটু জড়তা ছিল, তারপর যখন শুরু করলাম সব কিছুই স্বাভাবিকভাবে গেছে। শেষ করার পর খুবই ভালো লাগছে।”
কিছুদিন আগে তাসকিন আহমেদের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাসকিন বলে সাকিবের কথা তাকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করেছে ভালো করার জন্য।
“অবশ্যই আমি অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি এবং আমার অনেক ভালো লেগেছিল সাকিব ভাইয়ের ওই কথাগুলো শুনে। এটা আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা দিচ্ছে যে সামনে আমাকে আরো ভালো করতে হবে। প্রত্যেকটা সিরিজই চ্যালেঞ্জ, প্রত্যেকটা ম্যাচ নতুন করে শুরু হয়” যোগ করেন তাসকিন।
তবে সাকিবের কথা অনুপ্রেরণা যোগালেও নিজের ত্রুটিগুলো ভুলে যেতে চান না তিনি। বরং নিজের যাবতীয় ভুল শুধরে নিজেকে পরিপূর্ণ বোলার হিসেবে তৈরি করতে চান বাংলাদেশের হয়ে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা পেসার।
তাসকিন আরও বলেন, “চাইবো আমার যে আমার বেসিক প্রক্রিয়া সেটা ঠিক রেখে সামনে এগিয়ে যেতে। নিজের আরো বেশি ইমপ্রুভ করতে যেসব দুর্বলতা আছে, আসলে এখনো অনেক দুর্বলতা আছে, যেসব জায়গায় ইমপ্রুভমেন্ট এর জায়গা আছে সেগুলো আরো পরিপূর্ণ বোলার হিসেবে তৈরি করতে পারি সামনের দিনে এবং দলকে বেশি বেশি জয় উপহার দিতে পারে এটা লক্ষ্য থাকবে।”
ইনজুরি থেকে ফিরে বোলিং কোচ অ্যালন ডোনাল্ডের সঙ্গেও নিজের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছেন তাসকিন। আলোচনায় তাসকিনকে নিজের প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ।
তাসকিন বলেন, “আমি ওর (ডোনাল্ড) সাথে কথা বলছিলাম যে, আমি ইনজুরি থেকে এসেছি এখন আমার দায়িত্বটা কী হবে? ও আমাকে এটাই বুঝাতে চাচ্ছিল যে, তুমি যে টাইপের বোলার, তোমার দায়িত্ব হচ্ছে ফাস্ট এন্ড এগ্রেসিভ। কিছু সময় তুমি অনেক রান দিবা, কিছু সময় তুমি একাই উইকেট নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দিবা কিন্তু তোমার দায়িত্ব থেকে তুমি নিজেকে সরাবা না। তোমার যেটা রোল, সেটাতেই তুমি ফোকাস থাক। দিন যত যাবে, রিদম আরো বেটার হবে। আমরা আরো কাজ করবো সামনে।”
চলতি বছরের ২ জুলাই (শনিবার) ডমিনিকায় প্রথম ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। একই মাঠে ৩ জুলাই (রবিবার) দ্বিতীয় ম্যাচ হওয়ার পর গায়ানায় ৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচ। ১০, ১৩ ও ১৬ জুলাই ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচও হবে গায়ানাতে।
২০১৮ সালের সফরের পুনরাবৃত্তি করতে চায় বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে বল তাসকিনের জ্বলে ওঠা খুবই জরুরী। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজ জেতাতে তাসকিনের অনবদ্য ভূমিকা ছিল। ওই সিরিজের ম্যান অব দ্যা ম্যাচ তাসকিনকে এই সিরিজেও একই ভূমিকায় পেতে চাইবেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবাল।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি