স্পিনার রশিদ খানের দুর্দান্ত নৈপুন্যে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়ে আফগানিস্তান। এ জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করলো আফগানরা। অন্যদিকে সিরিজ হেরে এখন হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় বাংলাদেশ।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন সাকিব। দল নায়কের সিদ্বান্তের প্রতিদান দিতে পারেননি বাংলাদেশের ওপেনার লিটন দাস। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে নামের পাশে ১ রান করে বাঁ-হাতি পেসার শাপুর জাদরানের শিকার হন লিটন।
ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নামেন সাব্বির রহমান। আগের ম্যাচে প্রথম বলেই বিদায় নেয়া আরেক ওপেনার তামিম ইকবালকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন সাব্বির। মারমুখী মেজাজেই এগোচ্ছিলেন তারা। কিন্তু আফগান অফ-স্পিনার মোহাম্মদ নবীর বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং ও ফিল্ডিং-এর কাছে আত্মসমর্পন করেন সাব্বির। ৩টি চারে ৯ বলে ১৩ রান করেন তিনি। তামিমের সাথে ২০ বলে ২৯ রান যোগ করেন সাব্বির।
দলীয় ৩০ রানে সাব্বির ফিরে গেলে উইকেটে তামিমের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। উইকেটের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে তামিমের সাথে রানের গতি বাড়াতে থাকেন মুশি। ফলে বাংলাদেশের বড় স্কোরের পথ মসৃন হতে থাকে। কিন্তু দশম ওভারের শেষ বলে বাংলাদেশ শিবিরে আবারও আঘাত নবী। ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৮ বলে ২২ রান করেন মুশফিকুর।
৭৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশের বড় স্কোরের পথ খোলা ছিল। কিন্তু শেষ বোলার হিসেবে আক্রমণে এসে বাংলাদেশের পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের বেকাদায় ফেলে দেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের শীর্ষ বোলার রশিদ খান।
তামিম-সাকিব আল হাসান-সৌম্য সরকার ও মোসাদ্দেক হোসেনকে শিকার করে বাংলাদেশকে লড়াই করার পুঁজিও সংগ্রহ করতে দেননি রশিদ। তামিম ৫টি চারে ৪৮ বলে সর্বোচ্চ ৪৩, সাকিব ৩, সৌম্য ৩ ও মোসাদ্দেক শূন্য হাতে ফিরেন। শেষদিকে আবু হায়দারের ১৪ বলে অপরাজিত ২১ রানে সম্মানজনক পুঁজি পায় বাংলাদেশ। হায়দারের ইনিংসে ১টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল। রশিদ ৪ ওভারে ১২ রানে ৪ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৩৫ রানের টার্গেটে দলকে ৩৮ রানের সূচনা এনে দেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ও উসমান গনি। ১৮ বলে ২৪ রান করে বাংলাদেশের বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দারের শিকার হন শেহজাদ।
এরপর আরেক ওপেনারকে গনিকে দ্রুত ফেরান বাংলাদেশের ডান-হাতি পেসার রুবেল হোসেন। ৩১ বলে ২১ রান করে ফিরেন তিনি। তাদের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ও অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই। কিন্তু জুটিতে খুব বেশি রান যোগ করতে পারেননি। ৪ রানে থাকা স্টানিকজাইকে শিকার করেন বাংলাদেশের স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন।
দলীয় ৭৯ রানে স্টানিকজাই ফিরে গেলে আফগানিস্তানের জয়ের পথ পরিস্কার করতে থাকেন শেনওয়ারি ও মোহাম্মদ নবী। ২৬ বলে ৩৬ রান যোগ করে দলকে লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে যান তারা। তবে শেনওয়ারিকে ব্যক্তিগত ৪৯ রানে থামিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান মোসাদ্দেক।
শেষ ১২ বলে ২০ রান প্রয়োজন পড়ে আফগানিস্তানের। কিন্তু রুবেলের করা ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে চার ও ছক্কা এবং চতুর্থ ও পঞ্চম বলে যথাক্রমে চার-ছক্কায় আফগানদের জয় নিশ্চিত করেন নবী। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৫ বলে অপরাজিত ৩১ রান করেন নবী। বাংলাদেশের মোসাদ্দেক ২ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আফগানিস্তানের রশিদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ১৩৪/৮, ২০ ওভার (তামিম ৪৩, মুশফিকুর ২২, রশিদ ৪/১২)।
আফগানিস্তান : ১৩৫/৪, ১৮.৫ ওভার (শেনওয়ারি ৪৯, নবী ৩১, মোসাদ্দেক ২/২১)।
ফল : আফগানিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : রশিদ খান (আফগানিস্তান)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে আফগানিস্তান।