আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি রেকর্ড কখনই খুব একটা ভালো ছিল না। তবে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) মাঠে বাংলাদেশের খেলা দেখে একটি বারের জন্যও তা মনে হয়নি। এ জয়ে বল হাতে বড় অবদান নাসুম আহমেদের। শুধু এ ম্যাচ নয়, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে এক নির্ভরতার নাম হয়ে উঠছেন নাসুম।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিপক্ষের ইনিংসের প্রথম দিকেই নাসুম আক্রমণে আসবেন, এটাই যেন মুখস্ত অধিনায়কের মুখস্ত অধিনায়কত্ব। অবশ্য বারবারই অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে পারার কারণেই নাসুম আসেন বোলিং আক্রমণের শুরুতেই।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারের ১৯তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন নাসুম। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তার শিকার ২৬ উইকেট। অবশ্য উইকেট সংখ্যা বিবেচনা করে তার কার্যকারিতা কখনই বোঝা যাবে না। কারণ, মাঠে তার কাজ যে ডট বল আদায় করে নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪ ওভার বল করেছিলেন নাসুম আহমেদ। এ সময় প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ডট বল আদায় করে নিয়েছেন ১৭ টি। শতাংশে হিসাব করলে নাসুমের করা ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ বল থেকেই রান আদায় করে নিতে পারেনি আফগানরা।
একই চিত্র ছিল ২০২১ সালেও। এ বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন নাসুম। অভিষেকের বছরই প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ডট বল আদায় করে নেওয়ার জন্য পেয়েছিলেন বাহবা। পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের প্রথম ম্যাচেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন এই স্পিনার।
অথচ এই স্পিনারের শুরুটা ছিল পুরো দুঃস্বপ্নের মতো। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিজের অভিষেক ম্যাচে দুই উইকেট শিকার করলেও পরের তিন ম্যাচে ছিলেন উইকেটশূন্য। শুধু তাই নয়, প্রতিপক্ষকে হাত খুলে দিয়েছিলেন রান। আর এতেই তার ওভারে রানবন্যা তৈরি করেছিল প্রতিপক্ষের ব্যাটারারা।
প্রতিপক্ষকে রান বিলিয়ে দেওয়া নাসুম নিজের বোলিং দিয়ে প্রথম নজড় কাড়েন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তার বোলিং তোপে পড়ে দিশেহারা হয় অজি ব্যাটাররা। ১৯ রান খরচায় শিকার করেন ৪ উইকেট। এরপর থেকেই শুরুর নাসুমের উত্থান। একের পর এক ম্যাচে ইকোনমিক্যাল বোলিংয়ে দলকে এনে দিয়েছেন সাফল্য।
শুধু অজি নয়, ঘরের মাঠে তাসমান পাড়ের দেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সাফল্যের দেখা পেয়েছিলেন নাসুম। কিউই বধে তার শিকার ছিল ৮ উইকেট। যেখানে কিউইদের মাটিতে অভিষেকের পেয়েছিলেন দুঃস্মৃতি। সেই স্মৃতি ভুলে ঘরের মাঠে জানান দিয়েছিলেন নিজের সেরা ফর্ম।
ক্যারিয়ারে খেলা ১৯ টি-টোয়েন্টিতে নাসুম বোলিং করেছেন মোট ৬০ দশমিক ৫ ওভার। এ সময় প্রতিপক্ষকে দিয়েছেন ৩৮৭ রান। শুধু এটা হিসেব করলেই হবে না। এ সময় নাসুমের করা ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ বল থেকেই রান নিতে পারেননি ব্যাটাররা। আর বিপরীতে উইকেটও শিকার করেছেন ২৬ টি। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের রানের পথ রোধ করার পাশাপাশি উইকেট শিকারেও অভিজ্ঞ নাসুম।
অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তানের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষেও নিজেকে মেলে ধরে প্রমাণ করেছেন নাসুম। জানিয়েছেন, বল হাতে রান দিতে কার্পন্য করতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিআর
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]