পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের করাচিতে। আর এ উপলক্ষে করাচিতে ব্যাপক নিরাপত্তার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রোববারের অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচটি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে হাজার হাজার নিরাপত্তা কর্মী।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হবার পর এটিই হবে বিগত ৯ বছরের মধ্যে করাচির মাঠে সবচেয়ে বড় ম্যাচ। পেশোয়ার জালমি ও ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটি করাচিতে আয়োজন করায় বেশ কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় দল ছেড়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলেছে, জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচ উপলক্ষে সেখানে রাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায়ের নিরাপত্তা দেয়া হবে।
২০০৯ সালে লাহোরে সফরকারী শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের উপর জঙ্গি হামলার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হয়ে পড়ে পাকিস্তান। ওই ঘটনায় সফরকারী দলের সাত সদস্য আহত হবার পাশাপাশি নিহত হয় দলটির নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৮ ব্যক্তি। দেশটিতে ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের এ ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন পাকিস্তানি কর্মকর্তারা।
চলতি সপ্তাহে লাহোরে অনুষ্ঠিত হয়েছে টুর্নামেন্টের এলিমিনেটর রাউন্ডের দুটি ম্যাচ। গত আসরে শুধুমাত্র টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচটিই অনুষ্ঠিত হয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে।
এপ্রিলের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ সিরিজও আয়োজন করতে যাচ্ছে করাচি। সিরিজে স্বাগতিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০৯ সালের পর এটিই হবে কোনো টেস্ট প্লেইং দেশের অংশগ্রহণে পাকিস্তানের প্রথম হোম সিরিজ।
আগামী বছর পিএসএলের অন্তত অর্ধেক ম্যাচ দেশের মাটিতে আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বর্তমানে টুর্নামেন্টের প্রায় সবগুলো ম্যাচ আয়োজিত হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
পাকিস্তানে বর্তমান পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলেও পিএসএলে অংশগ্রহণকারী অনেক শীর্ষ তারকা পাকিস্তান সফর থেকে বিরত রয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্সের ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেন। অস্ট্রেলীয় অল রাউন্ডার শেন ওয়াটসনও একই কারণে ছেড়ে গেছে কোয়েটাকে। দলটি অবশ্য পেশোয়ারের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে।
কোয়েটার প্রধান কোচ মইন খান বলেন, খেলোয়াড়রা শুরুতে পাকিস্তানে খেলার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ দিকে এসে পিছুটান দিয়েছে। যে কারণে পিএসএল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এটি খুবই হতাশার বিষয়। এটি ফ্য্রাঞ্চাইজির জন্য বড় ক্ষতির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য যারা সরে দাঁড়িয়েছে ভবিষ্যতে তাদের আর টুর্নামেন্টে অন্তর্ভুক্ত না করার নির্দেশ দেয়া উচিৎ পিসিবির।
এরই মধ্যে পাকিস্তান সফর থেকে সরে আসার তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ইংল্যান্ডের সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেট অধিনায়ক ইয়োইন মরগান। ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের দুই ইংলিশ ক্রিকেটার অ্যালেক্স হেলস ও স্যাম বিলিংস। তবে নিরাপত্তা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাদের দৃষ্টিতে ‘এই ব্যবস্থা যথেষ্ঠ ভালো’।
শহরটির সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি বলেন, ‘পিএসএলের ফাইনাল আয়োজনের খবরটি অসাধারণ। এ জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ। আশা করি করাচি নগরবাসী ওই মুহূর্তটি দারুণভাবে উপভোগ করবে।