জহিরুল-মাশরাফির দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে ফাইনালে খুলনা

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১১:২১ এএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০
জহিরুল-মাশরাফির দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে ফাইনালে খুলনা

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে ৪৭ রানে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে তারকা সমৃদ্ধ দল জেমকন খুলনা। ফাইনাল নিশ্চিত করার এ ম্যাচ ব্যাট হাতে ওপেনার জহিরুলের পর বল হাতে দুর্দান্ত খেলেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দিনের দ্বিতীয় ও টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১০ রানের বিশাল স্কোর গড়ে খুলনা। দলের পক্ষে ব্যাট হাতে ওপেনার জুহিরুল ইসলাম ৫১ বলে ৮০ রানের ইনিংস খেলেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৪ ওভারে  ১৬৩ রানে থেমে যায় গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের ইনিংস। ফলে ৪৭ রানের ব্যবধানে জয় তুলে ফাইনালে পা রাখে খুলনা। বল হাতে দলের পক্ষে ৪ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে মাশরাফি তুলে নিয়েছেন ৫টি উইকেট।

ব্যাট করতে নেমে উইকেটরক্ষক জাকির হাসানকে নিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেন জহিরুল। ওপেনিং জুটিতে ৯ দশমিক ২ ওভারে ৭১ রান যোগ করেন তারা দু’জন। এর মধ্যে জহিরুলের অবদান ছিল ৫১ রান। আর জাকিরের ২২ বলে ১৬ রান। রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিচ্ছিন্ন হন জহিরুল ও জাকির। পাওয়ার-প্লেতে থেকে ৪৬ রান পায় খুলনা।

তিন নম্বরে নামা ইমরুল কায়েসকে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথে রেখেছিলেন ৩৩ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করা জহিরুল। মারমুখী মেজাজে রান তুলেছেন ইমরুলও। ১২ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ রান করা ইমরুল শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

৩৩তম বলে এবারের আসরের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেওয়া জহিরুল নিজের ইনিংস বড় করার সাথে দলের রানের চাকাও সচল রেখেছিলেন। সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও উঁকি-ঝুঁকি মারছিল। তবে ব্যক্তিগত ৮০ রানে জহিরুলকে শিকার করেন স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন। ৫১ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন জহিরুল।

১৪ দশমিক ৫ ওভারে দলীয় ১৩২ রানে আউট হন জহিরুল। তার আউটের পর ব্যাট হাতে তান্ডব চালিয়েছেন সাকিব আল হাসান-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আরিফুল হক। শেষ ৩১ বলে ৭৮ রান যোগ করেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ-আরিফুল। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১০ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় খুলনা।

দলের স্কোর রানের পাহাড়ে ওঠে যাওয়ায় লড়াই করার পুঁজি পেয়ে যান বোলাররা। প্রথম ওভারে বল হাতে নেন খুলনার পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রথম পাঁচ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৩ রান দেন ম্যাশ। সবগুলো রানই করেন ওপেনার লিটন দাস।
ওভারের শেষ বলে চট্টগ্রামের ওপেনার সৌম্য সরকারকে খালি হাতে ফেরান ম্যাশ।

সৌম্যের বিদায়ে ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন মাহমুদুল হাসান জয়। এ জুটিকেও বড় হতে দেননি মাশরাফি। মারমুখী মেজাজে থাকা লিটনকে এবার নিজের শিকার বানান ম্যাশ। ১৩ বলে ২৪ রান করা লিটনকে বোল্ড করেন মাশরাফি। ২টি করে চার-ছক্কা মারেন লিটন।

এখানেই থেমে থাকেননি মাশরাফি। তিন নম্বরে নামা মাহমুদুল হাসান জয়কেও আউট করেন মাশরাফি। ২৭ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ রান করেন জয়। লিটন-জয়ের সাথে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটিংয়ে ১১ ওভারে ৩ উইকেটে ১০০ রানে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম।

৩০ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে দলকে জয়ের পথে রেখেছিলেন মিঠুন। তবে ১৪তম ওভারের শেষ বলে খুলনার পথের কাটা মিঠুনকে থামান মিডিয়াম পেসার আরিফুল হক। ৩৫ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৫৩ রান করেন মিঠুন। মিঠুনের বিদায়ের পর চট্টগ্রামের মিডল-অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের দ্রুত ফেরান সাকিব-মাশরাফি-হাসান মাহমুদ জুটি। শেষ পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৪ ওভারে ১৬৩ রানেই গুটিয়ে চট্টগ্রামের ইনিংস।

প্রথম দিকে ৩ ও শেষ দিকে আরও ২ ব্যাটসম্যানকে শিকার করে ম্যাচে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন ওয়ানডেতে দেশ সেরা অধিনায়ক মাশরাফি। ম্যাচ শেষে মাশরাফির বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪ ওভারে ৩৫ রানে ৫ উইকেট। ফলে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৯০ উইকেট শিকারের মালিক মাশরাফির হাতে। এছাড়া হাসান-আরিফুল ২টি করে ও সাকিব ১টি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
জেমকন খুলনা : ২১০/৭, ২০ ওভার (জহিরুল ৮০, মাহমুদউল্লাহ ৩০, সাকিব ২৮, মোস্তাফিজ ২/৩১)
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ১৬৩/১০, ১৯.৪ ওভার (মিঠুন ৫৩, জয় ৩১, মাশরাফি ৫/৩৫)।

ফল : জেমকন খুলনা ৪৭ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মাশরাফি বিন মর্তুজা (জেমকন খুলনা)।



শেয়ার করুন :